ক্যাশ ইনসেনটিভ বা নগদ সহায়তার নামে চার কোটি ১৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সোনালী ব্যাংকের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার সকালে দুদকের সিনিয়র উপ-পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী বাদী হয়ে রাজধানীর মতিঝিল থানায় মামলাটি করেন। ২০০৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে নগদ সহায়তার নামে এ অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, অলি নিটিং ফেব্রিক্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আয়েশা আফরোজ, সোনালী ব্যাংকের এনসিটিবি শাখার এক্সিকিউটিভ অফিসার (স্থানীয় কার্যালয়ের সাবেক অফিসার) মো. মোশারেফ হোসেন এবং সোনালী ব্যাংকের কুমিল্লার দেবীদ্বার শাখার এক্সিকিউটিভ অফিসার ও ম্যানেজার (স্থানীয় কার্যালয়ের এক্সপোর্ট সেকশনের সাবেক এক্সিকিউটিভ অফিসার) মো. জাকির হোসেন।
দুদক সূত্র জানায়, বৈদেশিক রফতানি উত্সাহিত করার লক্ষ্যে রফতানিকারক কোনো পণ্য রফতানি করে প্রত্যাবাসনযোগ্য রফতানিমূল্য সম্পূর্ণ প্রত্যাবাসন করতে সক্ষম হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ওই রফতানিকারক বরাবর ডিসকাউন্ট সার্টিফিকেট ইস্যু করতে পারে। ওই ডিসকাউন্ট সার্টিফিকেটের ওপর ভিত্তি করে বিশেষ প্রণোদনা হিসেবে সরকার রফতানিকারককে তার মোট রফতানি মূল্যের ৫ শতাংশ নগদ সহায়তা প্রদান করে থাকে। তবে কোনো গ্রাহকের নগদ সহায়তা পাওয়ার আবেদনের তারিখ থেকে পূর্ববর্তী দুই বছরে কোনো রফতানি বিল আংশিক/সম্পূর্ণ অপ্রত্যাবাসিত থাকলে ব্যাংক রফতানিকারকের বরাবর কোনো ডিসকাউন্ট সার্টিফিকেট ইস্যু করতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে রফতানিকারকের ২০০৮ সালের ২৮ মে তারিখের (রফতানি বিল নম্বর এসজিটি/০১/২৬৩/০৮) ৬৩ হাজার ৮৮২ মার্কিন ডলার মূল্যের একটি বিলে ১০ শতাংশ প্রত্যাবাসিত হয়নি। রফতানিকারকের ওই অপ্রত্যাবাসিত রফতানি বিল থাকা সত্ত্বেও ২০০৯ সালের ১১, ১৬, ২২ ও ২৩ মার্চ তারিখে অলি নিটিং ফেব্রিক্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আয়েশা আফরোজ ডিসকাউন্ট সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করেন। আবেদনকারীর পূর্ববর্তী বছরের রফতানি বিল অপ্রত্যাবাসিত থাকা সত্ত্বেও সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা মো. মোশারেফ হোসেন ও মো. জাকির হোসেন যৌথ স্বাক্ষরে গ্রহকের নামে ডিসকাউন্ট সার্টিফিকেট ইস্যু করেন। ওই ডিসকাউন্ট সার্টিফিকেটের ওপর ভিত্তি করে গ্রহক নগদ সহায়তা হিসেবে চার কোটি ১৪ লাখ ৭৭ হাজার ৭৯০ টাকা উত্তোলনপূর্বক আত্মসাৎ করেছেন।
কমিশনের অনুসন্ধানে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় অভিযুক্ত ওই তিনজনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৪০৯/১০৯ ধরাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫ (২) ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।