ঢাকার সাভারে
গৃহবধূ সুখী আক্তারের চোখ উপড়ে নেয়ার ঘটনায় জড়িত তার ভাসুর ও দেবরকে
পাঁচদিনেও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান
ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালে চিকিত্সাধীন সুখী দৃষ্টি হারানোর আশংকায় কাতর হয়ে
পড়েছেন। চিকিত্সকরা বলছেন, সুখীর আরেকটি চোখের দৃষ্টি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা
ক্ষীণ।
জাতীয়
চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. জালাল উদ্দিন
আহমেদ বলেন, সুখীর ডান চোখটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তা আর সারিয়ে
তোলা সম্ভব নয়। মঙ্গলবার তার ডান চোখের ফাঁকা স্থানে কৃত্রিম চোখ স্থাপন
করা হয়েছে। এতে তার চোখের আকার ঠিক থাকবে ও ক্ষতস্থান দ্রুত সেরে উঠবে। বাম
চোখের অক্ষিগোলক ঠিক থাকলেও স্নায়ুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মেডিক্যাল
বোর্ড গঠন করে সর্বোচ্চ চিকিত্সা দেয়ার চেষ্টা চলছে। তবে এই চোখটিও সেরে
ওঠার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
দেড়
লাখ টাকা যৌতুক না পেয়ে গত শুক্রবার দুপুরে সাভারের কলমা জিঞ্জিরা গ্রামের
বাড়িতে সুখীর হাত-পা বেঁধে তার স্বামী রবিউল ইসলাম টেস্টার দিয়ে ডান চোখ
উপড়ে ফেলেন। এই ভয়ঙ্কর কাজে তাকে সহায়তা করেন বড় ভাই ইদ্রিছ আলী, ছোট ভাই
আখতার হোসেন ও বোন ধলী আক্তার। ঘটনার পরপরই রবিউলকে গ্রামবাসী আটক করে
পুলিশে সোপর্দ করে।
সাভার
থানার ওসি কামরুজ্জামান বলেন, চোখ উপড়ে ফেলার ঘটনায় সুখীর ভাই মহসিন বাদি
হয়ে রবিউল ও তার দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলায় গ্রেফতার
রবিউলকে ১০ দিনের রিমান্ডে চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার রিমান্ড
শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। অপর দুই আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে
পুলিশ।
সুখীর
বাবা নূর মোহাম্মদ জানান, তার মেয়ের চোখের ক্ষতস্থানে এখনও যন্ত্রণা হয়।
তবে তাদের কাছে সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার বিষয়-মেয়েটি হয়তো আর কখনও দেখতে পাবে
না। দৃষ্টিহীন হলে কিভাবে কাটবে তার আগামীর দিনগুলো। তার ছোট একটি মেয়ে
রয়েছে, তারই বা ভবিষ্যত্ কী হবে। এসব নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন তিনি।
নূর
মোহাম্মদ বলেন, ‘আমার একটা চউখ (চোখ) দিয়াও যদি মাইয়াটারে আন্ধা
(দৃষ্টিহীন) হওয়া থেইকা বাঁচাইতে পারতাম। ফুটফুইট্যা মাইয়াটা চোখে দেখব না,
এইটা মাইনা নিতে পারতাছি না।’