বিগত এক
বছরে তালিকাভুক্ত হওয়া পুঁজিবাজারের তিন কোম্পানির শেয়ারদর ইস্যু-মূল্যের
নিচে চলে এসেছে। এতে এ শেয়ারগুলোর বিনিয়োগকারীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। এ
প্রসঙ্গে বিনিয়োগকারী আব্দুল মান্নান বলেন—ব্যাংকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে, এত
দিন টাকা বিনিয়োগ করে আইপিও করি। আইপিওতে বিনিয়োগ করেও লোকসানের মুখে পড়ায়
চরম হতাশ হতে হয়। এ ছাড়া, শেয়ার পাওয়ার পর বেশ কিছু দিন অপেক্ষা করেও লাভ
হয়নি। উপরন্তু শেয়ারদর দিনে দিনে কমছে।
ডিএসই
সূত্রে জানা গেছে—গত এক বছরে ১৭টি কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত
হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি কোম্পানির শেয়ারদর বর্তমানে ইস্যু-মূল্যের নিচে
অবস্থান করছে। আর কিছু কোম্পানির শেয়ারদর ইস্যু মূল্যের কাছাকাছি অবস্থান
করছে। ইস্যু-মূল্যের নিচে অবস্থান করা কোম্পানিগুলো হলো—হামিদ ফেব্রিক্স,
দ্য পেনিনসুলা চিটাগং লিমিটেড এবং ফারইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডাইং লিমিটেড।
জানা
গেছে—হামিদ ফেব্রিক্স গত বছরের ৪ ডিসেম্বর পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু করে।
কোম্পানিটি ২৫ টাকা প্রিমিয়ামসহ ৩৫ টাকা মূল্যে শেয়ার ইস্যু করেছিল বাজারে।
মঙ্গলবার শেয়ারটি সর্বশেষ লেনদেন হয় ২৪ টাকা ৪০ পয়সা দরে। ফারইস্ট নিটিং
২০১৪ সালের ২৮ আগস্ট পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু করে। আইপিওতে ১৭ টাকা
প্রিমিয়ামসহ শেয়ার প্রতি ২৭ টাকা নিয়েছিল কোম্পানিটি। বর্তমানে শেয়ারের দর
২৩ টাকা ৮০ পয়সা। দ্য পেনিনসুলা লিমিটেডও বর্তমানে ইস্যু-মূল্যের নিচে
নেমে এসেছে। কোম্পানিটি ২০ টাকা প্রিমিয়ামসহ ৩০টাকা মূল্যে শেয়ার ইস্যু
করেছিল পুঁজিবাজারে। বর্তমানে এটি ২০ টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন হয়।
এ
দিকে, কিছু কোম্পানির শেয়ারদর ইস্যু-মূল্যের চেয়ে নিচে নেমে গেলেও কিছু
কোম্পানি আইপিওতে আসার পর উচ্চ দামে বিক্রি হয়। লেনদেন শুরুর প্রথম দিনেই
অনেক বেড়ে গেলেও পরে এ কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর তলানিতে নেমে আসে। এ ধরনের
প্রবণতা বিনিয়োগকারীদের অদক্ষতাকে নির্দেশ করে বলে মনে করছেন বাজার
বিশ্লেষকরা। তাদের মতে—কোনো কোম্পানি বাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর সেটির
মৌল-ভিত্তি বিবেচনা না করেই অনেকে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। ফলে কোম্পানির শেয়ারদর
অনেক বেড়ে যায়। আবার কিছু কোম্পানির মৌল-ভিত্তি ভালো হওয়ার পরও শেয়ার
বিক্রিতে বিনিয়োগকারীরা তাড়াহুড়া করেন। ফলে শেয়ারদরে অস্বাভাবিক গতি দেখা
যায়। এ অবস্থা রোধে বিনিয়োগকারীদের লেনদেনের ক্ষেত্রে দক্ষ হতে হবে।
আইপিওতে
আসা কোম্পানিগুলোর প্রিমিয়াম প্রদানের ক্ষেত্রে বিএসইসিকেও (বাংলাদেশ
সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন) সতর্ক হতে হবে। যেন কোনো কোম্পানি
অতিরিক্ত প্রিমিয়াম নিয়ে বিনিয়োগকারীদের বঞ্চিত করতে না পারে।