প্যারিসে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘের শীর্ষ জলবায়ু সম্মেলনে রাষ্ট্রপ্রধানদের যোগ দেয়া নিয়ে যে আশংকা ছিল তা দূর হয়ে গেছে। ফ্রান্সের পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, ৩০ নভেম্বর প্যারিসে অনুষ্ঠিতব্য এ সম্মেলনে শতাধিক রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান যোগ দেবেন। এদের মধ্যে রয়েছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, বিশ্বের তাপমাত্রা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে প্যারিসে একটি বাধ্যবাধকতা চুক্তি হবার কথা থাকলেও এ বিষয়ে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের মধ্যে অনীহা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে কোনো কোনো রাষ্ট্রপ্রধান এ সম্মেলনে যোগ না দেয়ার ঘোষণা দেন। কিন্তু গতকাল সোমবার প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনের (কপ-২১) প্রেসিডেন্ট এবং দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী লরেন্ট ফ্যাবিউস ঘোষণা দেন যে, রাষ্ট্র এবং সরকার প্রধানরা এ সম্মেলনে যোগ দেয়ার ব্যাপারে নিশ্চিয়তা প্রদান করেছেন।
এদিকে, শীর্ষ জলবায়ু সম্মেলনের আগে ৭০টি দেশের পরিবেশ মন্ত্রীরা তিনদিনের একটি বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। রবিবার শুরু হওয়া এ সম্মেলনে কপ-২১-এর দরকষাকষির উপায় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এছাড়া সেখানে শীর্ষ সম্মেলনের চুক্তির উদ্দেশ্য এবং স্বচ্ছতা, ২০২০ সালের জন্য কি কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে সে সব বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। বৈঠকের এক পর্যায়ে ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লরেন্ট ফ্যাবিউস সাংবাদিকদের বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের জীবনও ঝুঁকির মধ্যে আছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বিশ্বের তাপমাত্রা কমানোর জন্য সদস্য দেশগুলো যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ না করে তাহলে বিপদের আশঙ্কা।
ক্রিস্টিয়ানা ফিগারেসের সঙ্গে
আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর বৈঠক
এদিকে বাংলাদেশের পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু গতকাল জাতিসংঘের জলবায়ু বিষয়ক নির্বাহী সেক্রেটারি ক্রিস্টিয়ানা ফিগারেসের সাথে বৈঠক করেছেন। এ বৈঠকে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এসময় আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ক্রিস্টিয়ানাকে জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে বাঁচতে বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এসব প্রকল্প দেখতে তিনি ক্রিস্টিয়ানাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। আনোয়ার হোসেন মঞ্জু আশা প্রকাশ করে বলেন, ২০২০ সালের আগে এবং পরে উন্নত দেশগুলো পৃথিবীর তাপমাত্রা কমাতে ব্যবস্থা নেবে। এছাড়া জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বাঁচাতে উন্নত দেশগুলো তাদের সহায়তা অব্যাহত রাখবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।