নন এমপিও শিক্ষকদের দাবি পূরণ হচ্ছে না!

S M Ashraful Azom
এমপিওভুক্তির দাবিতে টানা ২২ দিন ধরে শহীদ মিনার ও প্রেসক্লাবের সামনে অনশনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ আন্দোলন কতোটা আমলে নিচ্ছে তা নিয়ে আন্দোলনকারীদের মধ্যেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
বেতন কাঠামো ও মর্যাদার দাবি আদায়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি কলেজসহ শিক্ষার প্রতিস্তরের শিক্ষক-কর্মচারীরা আন্দোলনের মাঠে ছিলেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আশ্বাসের কারণে চলমান আন্দোলন আপাতত স্থগিত করেছেন। তাদের নিয়েই শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয় বেশি ব্যস্ত। দাবি পূরণ করতে না পারলে আবারও আন্দোলনে নামার   ঘোষণা রয়েছে শিক্ষকদের। এ মুহূর্তে এমপিওভুক্তির দাবিতে চলমান আন্দোলনকে ততটা আমলে নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া এমপিওভুক্তির টাকা বরাদ্দ দেবে অর্থ মন্ত্রণালয়। গত ৫ বছরেও এমপিও খাতে টাকা বরাদ্দ রাখা হয়নি। এ কারণে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ছাড়া শিক্ষকদের আশ্বাস দেয়াও যাবে না। তাই আপাতত শূন্য হাতে শিক্ষকদের ফিরতে হবে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদও জানিয়ে দিয়েছেন, আমার এখানে কিছুই করার নেই। অর্থ মন্ত্রণালয় টাকা না দিলে আমি কিভাবে এমপিও দেব। সাংবাদিকদেরও একই তথ্য দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, টাকা পেলেই এমপিও দেয়া সম্ভব। নইলে নয়। 
দেশে এখন ৭ হাজার স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আর এ সব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন এক লাখ ৫ হাজার শিক্ষক। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা অর্থ দিয়ে কোনো মতে বেতন-ভাতা হয় শিক্ষকদের। বিশেষ করে মফস্বল এলাকার শিক্ষার্থীদের স্কুল ফি কম হওয়ায় শিক্ষকরা নামে মাত্র বেতন নিচ্ছেন। নানা অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে চলছে এসব শিক্ষকের সংসার।
২০০৪ সালে সর্বশেষ চারদলীয় জোট সরকার এমপিও দেয়। আর্থিক সংকট, এমপিও নিয়ে দুর্নীতি, এমপিওর অপব্যবহার, অপচয়সহ নানা কারণে এমপিও দেয়া বন্ধ করে দেয়া হয়। পরে ২০১০ সালে বর্তমান সরকার এমপিও দেয়। এ সময় এমপিও দেয়া হয় ১ হাজার ৬২৪টি প্রতিষ্ঠান।
২০১০ সালে এমপিও উপলক্ষে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে আবেদন চাওয়া হয়। আবেদন জমা পড়েছিল ৭ হাজার ৫৩৩টি। ওইসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪ হাজারকে বৈধ হিসেবে বাছাই করেছিল মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে ১ হাজার ৬২৫টি এমপিও পেয়েছে। অর্থ বরাদ্দ না থাকায় প্রায় আড়াই হাজার যোগ্য হলেও এমপিওভুক্ত হয়নি। পাঁচ বছরে আরও কয়েক হাজার প্রতিষ্ঠান এমপিওর যোগ্যতা অর্জন করেছে। এমপিওর বাইরে প্রায় ১০ হাজার এবং এমপিও পাওয়ার যোগ্যতা রয়েছে কিন্তু এমপিও পাচ্ছে না এমন প্রতিষ্ঠান প্রায় ৪ হাজার। শিক্ষা মন্ত্রণালয় বর্তমানে প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সাহায্য মঞ্জুরি হিসেবে এমপিও দেয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, দেশের বিভিন্ন স্থানে ৫ হাজার অপ্রয়োজনীয় বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকলেও ৩ হাজারের বেশি প্রয়োজনীয় স্থানে নেই কোনো বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সরকারের বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী এসব স্থানে অনেক আগেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু হওয়ার কথা।
ননএমপিও শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি এশারত আলী বলেন, আমরা আশায় বসে আছি। কিন্তু কোন সাড়া পাচ্ছি না। আদৌ এমপিও পাব কিনা তা নিয়ে শংকায় আছি। আমাদের এমপিওর ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কেই উদ্যোগ নিতে হবে। এবার দাবি আদায় না করে আন্দোলন থেকে পিছপা হবো না।

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top