কয়েক দিনের মাথায় আবারো উত্তেজনা দক্ষিণ চীন সাগরে। দক্ষিণ চীন সাগরের বিরোধপূর্ণ এলাকার কাছ থেকে এবার ঘুরে এলো দুটি মার্কিন বোমারু বিমান। মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগন এ তথ্য জানিয়েছে। এর আগে দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের তৈরি একটি কৃত্রিম দ্বীপের ১২ নটিক্যাল মাইলের মধ্য দিয়ে টহল দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্রবাহী একটি যুদ্ধজাহাজ। দক্ষিণ চীন সাগরের ওই এলাকাটি নিজেদের বলে দাবি করে আসছে চীন। সেখানে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ টহল দেয়ার পর তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে এবং যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্কও করে। চীনের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও অভিযান অব্যাহত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর:বিবিসির।
পেন্টাগনের মুখপাত্র বিল আরবান জানান, রবিবার রাতে অত্যাধুনিক বোমারু বিমান বি-৫২ দক্ষিণ চিন সাগরের স্প্রাটলি দ্বীপের কাছে রুটিন টহল দিয়েছে। গুয়ামের একটি বিমান ঘাঁটি থেকে উড়ে চীন সাগরে টহল দিয়ে যুদ্ধ বিমানগুলো আবার গুয়ামেই ফিরে যায়। আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথে রুটিন নজরদারি চালানোর অংশ হিসেবেই মার্কিন বোমারু বিমান এই টহল দেয়। তবে কৃত্রিম দ্বীপটির যে এলাকা চীন নিজেদের বলে দাবি করে সেই আকাশসীমা লঙ্ঘন করেনি মার্কিন বিমান। কৃত্রিম দ্বীপের কাছে যেতেই মার্কিন বিমানগুলোকে চ্যালেঞ্জ করে চীনা সেনারা। ১৫ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে যেন প্রবেশ না করে সেই বার্তা দেয়া হয়। তবে এতে টহল বন্ধ করেনি মার্কিন বাহিনী। আন্তর্জাতিক আইন মেনেই টহল দিয়েছে। কারো হুঁশিয়ারিতে ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের নজরদারি বন্ধ হবে না বলেও তিনি জানিয়েছেন।
এদিকে বার্তা সংস্থা এপির এক খবরে বলা হয়েছে, চীনা সেনারা মার্কিন বোমারু বিমানকে সতর্ক করলেও দক্ষিণ চীন সাগরে নৌ-চলাচলে স্বাধীনতা ও বিমান চলাচলে সম্মান করে। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হং লি শুক্রবার বলেন, আমরা মনে করি মার্কিন বিমানের টহল দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের দাবিকৃত অঞ্চলকে চ্যালেঞ্জ জানানোর একটি অজুহাত।
আগামী সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ম্যানিলায় একটি শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়েরও ওই সম্মেলনে অংশ নেয়ার কথা রয়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই মার্কিন যুদ্ধবিমান চীনের দাবিকৃত এলাকার আকাশসীমার কাছ দিয়ে টহল দিয়ে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে দক্ষিণ চীন সাগরের স্প্রাটলি দ্বীপমালার সুবি ও মিসচিফ শৈলশ্রেণি দুটিতে বালু ফেলে একটি দ্বীপ তৈরি করেছে চীন। কৃত্রিম এ দ্বীপের চারদিকের ১২ নটিক্যাল মাইল এলাকাকে চীন তার জলসীমা বলে দাবি করছে। দক্ষিণ চীন সাগরের এই এলাকাটি বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ত সমুদ্র-বাণিজ্যপথগুলোর অন্যতম।