নাচে গানে ভরপুর অনুষ্ঠান আর আতশবাজির রোশনাইয়ে একদিন আগেই হয়ে গেছে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এখন কেবল মাঠে খেলা গড়ানোর অপেক্ষা। অবশেষে সেই অপেক্ষার পালা শেষ করে আজ দুপুর ২টা থেকে শুরু হয়ে যাবে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) তৃতীয় আসর। দীর্ঘ ও ক্লান্তিকর সব জটিলতা শেষ করে মাঠে গড়াবে বিপিএলের তৃতীয় আসর।
আজ বেলা ২টায় মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে এবারের বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হবে রংপুর রাইডার্স ও চিটাগং ভাইকিংস। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে একই ভেন্যুতে সন্ধ্যা ৭টায় মুখোমুখি হবে ঢাকা ডিনামাইটস ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস।
আগামী ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত এই ভেন্যুতেই প্রতিদিন দুটো করে খেলা অনুষ্ঠিত হবে। ৩০ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত খেলা হবে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। আর ৬ ডিসেম্বর থেকে আবার মিরপুরে ফিরবে বিপিএল। ১২ ও ১৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে কোয়ালিফায়ার ও এলিমিনেটর। ১৫ ডিসেম্বর মিরপুরেই ফাইনালের ভেতর দিয়ে পর্দা নামবে এই আসরের।
আজ এই তৃতীয় আসরের উদ্বোধনী ম্যাচ অব্দি আসতে বিপিএলকে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। দ্বিতীয় বিপিএলে ভয়ানক হয়ে ওঠে ফিক্সিংয়ের গুঞ্জন। কিছু ম্যাচ পাতানো বলে তখন পত্রপত্রিকায়ও খবর আসে। এর মধ্যে আইসিসির দুর্নীতি দমন ও নিরাপত্তা ইউনিট (আকসু) বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে জানায় যে, দ্বিতীয় বিপিএলে অন্তত দুটি ম্যাচে অনেক অন্যায় হয়েছে।
বিসিবি সাথে সাথে আকসুকে অধিকতর তদন্ত করার জন্য ভাড়া করে। দীর্ঘ সেই তদন্ত শেষে মোহাম্মদ আশরাফুলসহ নয় জন ক্রিকেটার ও সংগঠককে অভিযুক্ত করা হয়। তাদের বিপক্ষে অভিযোগ গঠন করে বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটির ট্রাইব্যুনালে বিচার হয়। দেশ-বিদেশের ক্রিকেটার, সংগঠকদের দীর্ঘ শুনানি শেষে নানা মেয়াদে শাস্তি দেয়া হয় অভিযুক্তদের, কাউকে কাউকে রেহাই দেয়া হয়।
এর পাশাপাশি বিপিএলের বড় সংকট হয়ে ওঠে, প্রথম দুই আসরেরই পাওনা বাকি। ক্রিকেটাররা টাকা পাননি, বিসিবি টাকা পায়নি। এমন একটা অবস্থায় খোদ বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন একবার বলেছিলেন— বিপিএল এখন একটা যন্ত্রণাবিশেষ।
এই যন্ত্রণার উপশম করতে গত দুই বছর ধরে বিসিবি কর্মকর্তারা যে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। পাওনা পরিশোধে নানা কৌশল অবলম্বন করে কিছু হলেও টাকা তুলে দিতে পেরেছেন খেলোয়াড়দের হাতে। এ ক্ষেত্রে সিনিয়র ক্রিকেটাররা প্রাপ্য টাকার বড় অংশ ত্যাগ করে নজির গড়েছেন। পাশাপাশি নিশ্চিত করা হয়েছে, ফিক্সিং অপরাধের শাস্তি।
এসব করেই অবশেষে এ বছর গোড়ার দিকে ঘোষণা করা হয় যে, তৃতীয় বিপিএল মাঠে গড়াচ্ছে। একেবারে নতুন করে ছয়টি দল বিক্রি করা হয় কয়েক পর্বশেষে। তবে নতুন করে অপরাধ ও টাকার ছিনিমিনি ঠেকাতে একটার পর একটা রাস টানা হয়। প্রথমেই আগ্রহী দলগুলোর কাছ থেকে গ্যারান্টি হিসেবে পুরো টাকা জমা নেয়া হয়। বেঁধে দেয়া হয় খেলোয়াড়দের টাকার সীমা।
আর সবকিছু মিটিয়ে এবার অবশেষে আবার খেলা মাঠে গড়ানোর পালা।

