বিপুলসংখ্যক পাকিস্তানি নাগরিক বাংলাদেশে!

S M Ashraful Azom
বিপুল সংখ্যক পাকিস্তানি নাগরিক বর্তমানে দেশে অবস্থান করছেন। এদের অধিকাংশই জঙ্গি প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন বলে গোয়েন্দারা নিশ্চিত হয়েছেন। ভ্রমণের নামে গত তিন মাসে এসব নাগরিক বাংলাদেশে এসেছেন বলে জানা গেছে। এদের অনেকে মাসে ৪ থেকে ৫ বার যাতায়াত করেছেন বলে অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে।
 
অতীতে এতো পাকিস্তানি নাগরিক ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশে আসেনি বলে জানিয়েছে দুটি গোয়েন্দা সংস্থা। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হলে গোয়েন্দারা এটি পর্যবেক্ষণে আনেন। অনুসন্ধানের পরে গোয়েন্দারা নিশ্চিত হয়েছেন, এসব পাকিস্তানি নাগরিক আফগানিস্তানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। পাকিস্তানি নাগরিকরা বিমান থেকে বাংলাদেশে নেমে ইমিগ্রেশনে অবতরণ পত্রে বাংলাদেশে অবস্থানের যেসব ঠিকানা দিয়েছেন সেখানে তাদেরকে পাওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে গোয়েন্দারা খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, বোমা বানানো, নাশকতা করে দ্রুত পালিয়ে যাওয়াসহ নানা বিষয়ে এরা পারদর্শী। বাংলাদেশে জঙ্গি এবং আন্ডার গ্রাউন্ডে চলে যাওয়া শিবিরের একটি অংশের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ রয়েছে। 
 
বাংলাদেশি জঙ্গিদের একটি অংশকে পাকিস্তানের একটি গ্রুপ অর্থ সহায়তা দিয়ে সক্রিয় করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে তথ্য পেয়েছে দুইটি গোয়েন্দা সংস্থা। গ্রুপটি জাল মুদ্রার ব্যবসা করে লভ্যাংশ দিচ্ছে জঙ্গিদের।
 
এসব অর্থ ব্যয় করে দেশে নাশকতার পরিকল্পনা করে জঙ্গিরা। বিদেশি নাগরিক খুন, পুলিশ হত্যা এবং সরকারি নানা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস করা পরিকল্পনার অংশ ছিল। এছাড়া কারাগারে আটক জঙ্গিদের আত্মীয়দের মাধ্যমে পাকিস্তানি ওইসব নাগরিক তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বলে জানা গেছে।
 
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সমপ্রতি চার পাকিস্তানিকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য জানা গেছে। গ্রেফতার হওয়া পাকিস্তানি নাগরিক হলো- ইদ্রিস আলী, মো. শাকিল, খলিলুর রহমান ও মো. ইকবাল। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে জঙ্গিবাদ সংক্রান্ত বেশকিছু বই উদ্ধার করা হয়। পাকিস্তানি নাগরিকদের স্বীকারোক্তি থেকে জানা গেছে, জঙ্গিদের সহায়তা করার জন্যই তারা বাংলাদেশে এসেছেন। সন্দেহে থাকা পাকিস্তানি নাগরিকদের আটক করতে মাঠে নেমেছে একাধিক সংস্থা।
 
একটি গোয়েন্দা সংস্থার একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, চার পাকিস্তানি নাগরিক ভ্রমণ ভিসায় বাংলাদেশে এসেছিল। তারা মাসে অন্তত ১৫ বার বাংলাদেশে আসে। সর্বশেষ দু’দিন আগে তারা দেশে এলেও প্রথম কবে বাংলাদেশে এসেছিল, কাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল, তা জানার চেষ্টা চলছে।
 
জানা গেছে, দেশে বৈধভাবে পাকিস্তানি নাগরিক রয়েছে ৮ হাজার ৯৪২ জন। অন্যদিকে অবৈধভাবে বসবাস করছেন বৈধ নাগরিকের প্রায় ৮ থেকে ১০ গুণ। ব্যবসা এবং ভ্রমণসহ নানা অজুহাতে তারা বাংলাদেশে আসেন।
 
গোয়েন্দাদের দেয়া তথ্য মতে, পাকিস্তানের করাচিতে রয়েছে জাল টাকা ও রুপির মেশিন। পাকিস্তান থেকে বিমানে করে আনা হচ্ছে জাল ভারতীয় রুপি এবং টাকা। মধ্যপ্রাচ্য থেকে চোরাচালান হয়ে আসছে সোনা। জাল রুপি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে বাজারজাতকরণ হচ্ছে বাংলাদেশের রাজশাহী ও যশোরের সীমান্ত এলাকায় মাদক ব্যবসার মাধ্যমে। একইভাবে সোনা চোরাচালানেরও একটি বড় অংশ পাঠানো হচ্ছে ভারতে। এসব ক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে জাল টাকা ও রুপি।
 
পুলিশের ভারপ্রাপ্ত আইজি মোহাম্মদ জাবেদ পাটওয়ারী বলেন, পাকিস্তানী নাগরিকদের ভ্রমণের নামে ঢাকায় ঘন ঘন আসার বিষয়টি যাচাই করে দেখা হচ্ছে।

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top