সেবা ডেস্ক: সংসদ সদস্যদের পদাধিকারবলে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি হওয়ার সুযোগ সংবলিত বিধান বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে বিশেষ পরিস্থিতিতে বিশেষ ধরনের গভর্নিং বডি বা ক্ষেত্রমতে ম্যানেজিং কমিটি করার বিধানও রদ করা হয়েছে। সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি একজন এমপি কর্তৃক স্কুলের প্রধান শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়া ও কমিটি কর্তৃক অন্যায়ভাবে বরখাস্ত হওয়ার প্রেক্ষিতে দেশে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিচালনা কমিটির যথেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি, কমিটির সভাপতি হিসেবে এমপিদের ক্ষমতার অপব্যবহার- সর্বোপরি পরিচালনা কমিটির দৌরাত্ম্যের কাছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের জিম্মি থাকার বিষয়টি এখন আলোচনার কেন্দ্রে। এরকম একটি প্রেক্ষাপটে আদালতের উপর্যুক্ত রায়টি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
গত বুধবার হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে দায়ের করা এক রিট আবেদনের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে রায় দেন। ওই রায়ে বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা, ২০০৯-এর ৫(২) ও ৫০ বিধি বাতিল করেছেন আদালত। ৫০ বিধি অনুসারে কোনো নির্বাচিত সংসদ সদস্যের তার নির্বাচনী এলাকার বোর্ডের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত উচ্চমাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হওয়ার জন্য কেবল বোর্ডের কাছে অভিপ্রায় ব্যক্ত করলেই চলতো এবং এভাবে এমপি সর্বোচ্চ ৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হতে পারতেন। এই বিধি রদ হওয়ার ফলে সংসদ সদস্যরা ইচ্ছা করলেই পদাধিকারবলে স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হতে পারবেন না। সভাপতি হতে চাইলে তাদেরও নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই আসতে হবে। আর ৫(২) বিধিতে ছিল যে, বিশেষ পরিস্থিতিতে বোর্ড এবং সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের কোনো বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য বিশেষ ধরনের গভর্নিং বডি বা ক্ষেত্রমতে ম্যানেজিং কমিটি করা যাবে। সে সুযোগও আদালত রহিত করেছেন। ফলে বিশেষ অবস্থার দোহাই দিয়ে বিশেষ কমিটি করে পরিচালনা পর্ষদের বিশেষ কোনো অভিপ্রায় বাস্তবায়নের পথও রোধ হলো।
বাংলাদেশে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ হাইস্কুল ও কলেজের সংখ্যা নগণ্য। বেসরকারি হাইস্কুল ও কলেজই বেশি। বেসরকারী এসব প্রতিষ্ঠানেই দেশের বেশির ভাগ ছেলেমেয়ে লেখাপড়া করে। এসব বেসরকারি হাইস্কুল ও কলেজসমূহ পরিচালিত হয় শিক্ষা বোর্ড বা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক মনোনীত কার্যকরী কমিটি ও পরিচালনা পরিষদ কর্তৃক। এই কার্যকরী কমিটি বা পরিচালনা পরিষদের দায়িত্ব প্রতিষ্ঠানে যথাযথভাবে পরিচালিত হচ্ছে কিনা তা তদারক করা। অথচ বাস্তবে দেখা যাচ্ছে এই কমিটি বা পরিষদ নিয়েই যত অভিযোগ। এসব কমিটি বা পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন স্থানীয় ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক শক্তি যারা সংসদ সদস্য অথবা তার প্রতিনিধি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই কার্যকরী কমিটি বা পরিচালনা পরিষদের অধিকাংশ সদস্যের চেতনায় শিক্ষা-অনুরাগের বিষয়টি অনুপস্থিত। প্রশ্ন রয়েছে তাদের প্রতিষ্ঠান পরিচালনার যোগ্যতা ও দক্ষতা নিয়ে। তারা কার্যত তদারককারী হলেও তারা নিজেদের প্রতিষ্ঠানের সর্বময় হর্তাকর্তা মনে করেন। তাদের কাছে অবমূল্যায়িত হন শিক্ষকরা, তাদের স্বার্থসিদ্ধিতে সায় না দিলে বা বাধা হয়ে দাঁড়ালে শিক্ষকদের লাঞ্ছিত এমনকি চাকরিচ্যুত হতে হয়। নারায়ণগঞ্জের ঘটনা তার একটি নমুনা মাত্র।
নারয়ণগঞ্জের শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনার পর এ বিষয়গুলো ব্যাপকভাবে আলোচনায় এসেছে। শিক্ষকরাও মুখ খুলছেন। সচেতন মহল মনে করছেন এ ব্যাপারটি নিয়ে সরকারের বিশেষভাবে চিন্তা করা উচিত।
আদালতের রায়ে এমপিদের পদাধিকারবলে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হওয়ার সুযোগ রহিত হওয়ার ফলে স্কুল-কলেজ পরিচালনায় সরাসরি রাজনৈতিক ক্ষমতাচর্চার প্রবণতা সীমিত হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস। তবে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুষ্ঠু ও নিয়মতান্ত্রিক পরিচালনা নিশ্চিত করতে এটুকুই যথেষ্ট নয়। কায়েমী স্বার্থের কবলমুক্তভাবে সত্যিকার যোগ্য-দক্ষ প্রকৃত শিক্ষানুরাগীদের দ্বারা কীভাবে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা নিশ্চিত করা যায় তা নিয়ে সুচিন্তিত সিদ্ধান্তে আসতে হবে সরকারকে।
গত বুধবার হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে দায়ের করা এক রিট আবেদনের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে রায় দেন। ওই রায়ে বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা, ২০০৯-এর ৫(২) ও ৫০ বিধি বাতিল করেছেন আদালত। ৫০ বিধি অনুসারে কোনো নির্বাচিত সংসদ সদস্যের তার নির্বাচনী এলাকার বোর্ডের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত উচ্চমাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হওয়ার জন্য কেবল বোর্ডের কাছে অভিপ্রায় ব্যক্ত করলেই চলতো এবং এভাবে এমপি সর্বোচ্চ ৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হতে পারতেন। এই বিধি রদ হওয়ার ফলে সংসদ সদস্যরা ইচ্ছা করলেই পদাধিকারবলে স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হতে পারবেন না। সভাপতি হতে চাইলে তাদেরও নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই আসতে হবে। আর ৫(২) বিধিতে ছিল যে, বিশেষ পরিস্থিতিতে বোর্ড এবং সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের কোনো বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য বিশেষ ধরনের গভর্নিং বডি বা ক্ষেত্রমতে ম্যানেজিং কমিটি করা যাবে। সে সুযোগও আদালত রহিত করেছেন। ফলে বিশেষ অবস্থার দোহাই দিয়ে বিশেষ কমিটি করে পরিচালনা পর্ষদের বিশেষ কোনো অভিপ্রায় বাস্তবায়নের পথও রোধ হলো।
বাংলাদেশে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ হাইস্কুল ও কলেজের সংখ্যা নগণ্য। বেসরকারি হাইস্কুল ও কলেজই বেশি। বেসরকারী এসব প্রতিষ্ঠানেই দেশের বেশির ভাগ ছেলেমেয়ে লেখাপড়া করে। এসব বেসরকারি হাইস্কুল ও কলেজসমূহ পরিচালিত হয় শিক্ষা বোর্ড বা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক মনোনীত কার্যকরী কমিটি ও পরিচালনা পরিষদ কর্তৃক। এই কার্যকরী কমিটি বা পরিচালনা পরিষদের দায়িত্ব প্রতিষ্ঠানে যথাযথভাবে পরিচালিত হচ্ছে কিনা তা তদারক করা। অথচ বাস্তবে দেখা যাচ্ছে এই কমিটি বা পরিষদ নিয়েই যত অভিযোগ। এসব কমিটি বা পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন স্থানীয় ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক শক্তি যারা সংসদ সদস্য অথবা তার প্রতিনিধি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই কার্যকরী কমিটি বা পরিচালনা পরিষদের অধিকাংশ সদস্যের চেতনায় শিক্ষা-অনুরাগের বিষয়টি অনুপস্থিত। প্রশ্ন রয়েছে তাদের প্রতিষ্ঠান পরিচালনার যোগ্যতা ও দক্ষতা নিয়ে। তারা কার্যত তদারককারী হলেও তারা নিজেদের প্রতিষ্ঠানের সর্বময় হর্তাকর্তা মনে করেন। তাদের কাছে অবমূল্যায়িত হন শিক্ষকরা, তাদের স্বার্থসিদ্ধিতে সায় না দিলে বা বাধা হয়ে দাঁড়ালে শিক্ষকদের লাঞ্ছিত এমনকি চাকরিচ্যুত হতে হয়। নারায়ণগঞ্জের ঘটনা তার একটি নমুনা মাত্র।
নারয়ণগঞ্জের শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনার পর এ বিষয়গুলো ব্যাপকভাবে আলোচনায় এসেছে। শিক্ষকরাও মুখ খুলছেন। সচেতন মহল মনে করছেন এ ব্যাপারটি নিয়ে সরকারের বিশেষভাবে চিন্তা করা উচিত।
আদালতের রায়ে এমপিদের পদাধিকারবলে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হওয়ার সুযোগ রহিত হওয়ার ফলে স্কুল-কলেজ পরিচালনায় সরাসরি রাজনৈতিক ক্ষমতাচর্চার প্রবণতা সীমিত হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস। তবে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুষ্ঠু ও নিয়মতান্ত্রিক পরিচালনা নিশ্চিত করতে এটুকুই যথেষ্ট নয়। কায়েমী স্বার্থের কবলমুক্তভাবে সত্যিকার যোগ্য-দক্ষ প্রকৃত শিক্ষানুরাগীদের দ্বারা কীভাবে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা নিশ্চিত করা যায় তা নিয়ে সুচিন্তিত সিদ্ধান্তে আসতে হবে সরকারকে।