জিয়াউর রহমান জুয়েল, কাউখালী (রাঙামাটি) : দুই কন্যা শিশু নিয়ে স্ত্রী গেছে বাপের বাড়ি। ফাঁকা ঘরে একা রয়েছে বোনের কিশোরি মেয়ে। স্বামীও রাতে ফিরবেনা। অনুরোধ রাখতে প্রতিবেশি গৃহবধু নিজের প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া শিশুকে পাঠান কিশোরির সঙ্গে রাতে থাকতে।
কিন্তু আচমকাই রাত দেড়টার দিকে বাড়ি ফিরেন গৃহকর্তা ইকবাল হোসেন (২৬)। শিশুটিকে ঘুম থেকে তুলে নিজের কক্ষে নিয়ে রাতভর চালান যৌন নিপিড়ন।
গত শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) মধ্য রাতে রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার কাশখালী গ্রামে ঘটা বিষয়টি ফাঁস হয় গতকাল। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে মিমাংসার নামে সোমবার (৩১ অক্টোবর) রাত ন’টার দিকে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ শরীফ গ্রামটির চা দোকানে বৈঠক বসান।
তবে সাংবাদিকদের উপস্থিতি দেখে কথিত বৈঠক ভন্ডুল হয়ে যায়। কাউখালী থানার ওসি আব্দুল করিম বিষয়টি অবগত নন জানালেও পরে বৈঠকস্থলে এএসআই মোয়াজ্জেম হোসেনকে পাঠান। পুলিশের উপস্থিতি দেখে বৈঠকস্থল থেকে সটকে পড়ার ইঙ্গিত পেতেই লাপাত্তা হয়ে পড়ে অভিযুক্ত ইকবাল। অভিযোগ উঠেছে পুলিশকে ম্যানেজ করেই ঐ বৈঠক ডাকা হয়েছিল।
বৈঠকস্থলে শিশুটির মা ও বাবা সাংবাদিকদের জানান, প্রতিবেশী ইকবাল রাতে বাড়ি ফিরবেনা বলেছিল তার স্ত্রী। তাই তার অনুরোধে নিজের ছয় বছরের শিশুকে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু রাত দেড়টার দিকে ইকবাল বাড়ি ফিরে শিশুটিকে ঘুম থেকে তুলে অন্য কক্ষে নিয়ে গিয়ে রাতভর যৌন নিপীড়ন চালায়। আমি এর বিচার চাই।
সোমবার বাড়ি ফিরে ইকবালের স্ত্রী ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ঐ কিশোরির কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পারে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উল্টো শিশুটিকে ঘটনার জন্য দায়ী করে শিশুর মাকে গালমন্দ করে। ঘটে যাওয়া এ পাশবিকতার বিচার চাইতে শিশুটির মা স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ শরিফকে অভিযোগ দেন।
রাতেই শরিফ উন্মুক্ত চা দোকানে কথিত এ বৈঠক বসান। পরে ভন্ডুল হওয়া ঐ বৈঠক থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাত সাড়ে দশটার দিকে মা-বাবাসহ শিশুটিকে কাউখালী থানা পুলিশ নিজেদের হেফাজতে নিয়ে আসে।
আজ মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) সকালে শিশুটির জবানবন্দি গ্রহণ করার জন্য রাঙামাটির আদালতে পাঠিয়েছে থানা পুলিশ।
ইউপি সদস্য মোঃ শরিফ জানান, অভিযোগ পেয়ে দুই পক্ষকে নিয়ে সামাজিক ভাবে সুরাহা করতেই ঐ বৈঠক ডেকেছিলাম। কিন্তু পুলিশি হস্তক্ষেপে সেটা হয়ে উঠেনি।
কাউখালী থানার এএসআই মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, এঘটনায় নারি ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা হয়েছে। নম্বর-১০, তারিখ-৩১/১০/২০১৬। পালিয়ে যাওয়া ইকবালকে আটকের চেষ্টা চলছে।
