সেবা ডেস্ক: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরসহ বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার প্রতিবাদে স্থানীয় সময় রবিবার দুপুরে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে হোয়াইট হাউজের সামনে বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন সংগঠন। বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, কানেকটিকাট, পেনসেলভিনিয়া, মেরিল্যান্ড, ওয়াশিংটন ডিসি ও ভার্জিনিয়া থেকে বিপুলসংখ্যক সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষ এই বিক্ষোভ সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন। তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন হিন্দু আমেরিকান ফাউন্ডেশনের পরিচালক জে কানাসারা, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের উৎসব ব্যানার্জি, ইন্ডিয়া কজ-এর ফাউন্ডার প্রেসিডেন্ট রমেশ গট্টী, হরেকৃষ্ণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি রমেশ জয়পাল, জাস্টিজ ফর হিন্দুজ-এর সভাপতি ভিনসেন্ট ব্রুনো, নিউজার্সি কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট ড. অরুনা পাল, মেরিল্যান্ড হিন্দু কমিউনিটি নেতা সত্য বোস, নীলাচল ডিসি'র সভাপতি প্রাণেশ হালদার, ভাজির্নিয়া হিন্দু কমিউনিটি নেতা দেবপ্রিয় দত্ত, কানেকটিকাট হিন্দু কমিউনিটি নেতা বিশ্বজিত চৌধুরী, নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসের বাসিন্দা মিনু সরকার, জ্যাকসন হাইটসের বাসিন্দা চম্পা সরকার, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি শ্যামল কর, সামু রুদ্র, রবীন্দ্র ঘোষ, বাংলাদেশ পূজা সমিতির সভাপতি অমিত ঘোষ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিষু গোপ, সম্মিলিত পূজা পুনর্মিলনীর যুগ্ম আহ্বায়ক ভজন সরকার, সম্মিলিত পূজা পুনর্মিলনীর আহ্বায়ক নিমর্ল পাল, বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের উপদেষ্টা ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিতাংসু গুহ। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাষ্ট্র হিন্দু বৌ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক নবেন্দু বিকাশ দত্ত।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন একটি দৈনন্দিন ঘটনা। আগে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হিন্দুরা অপেক্ষাকৃত কম নির্যাতিত হতো। এখন সব আমলই সমান। গত সাত বছরে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার যে কোনা আমলের থেকে খুব একটা কম নয়।
সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, নির্বাচন-পরবর্তী এবং পূর্ববর্তী বিভিন্ন সময়ে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ হয়েছে। বিশেষ করে হিন্দুদের উপর বেশি হামলা হয়েছে। ২০১২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারের রামুসহ কয়েকটি এলাকায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও উপাসনালয়ে আক্রমণ চালিয়ে কয়েক শ স্থাপনা ভাঙচুর করা হয়। সরকার সেসব বাড়িঘর ও বৌদ্ধ বিহারের কিছু নির্মাণ করে দিলেও আক্রমণকারী কাউকে শাস্তি দিতে পারেনি। বক্তারা বলেন, তখন আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু ছিলো বৌদ্ধ সম্প্রদায়, এবার হিন্দু সম্প্রদায়। কিন্তু এসবের সঠিক বিচার না হওয়ায় এ ধরনের হামলার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। যার ধারাবাহিকতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে এক সপ্তাহের মধ্যে কয়েক দফা হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
বাংলাদেশে চলমান সহিংসতা এবং সংখ্যালঘুসহ উপজাতি ও নৃতাত্ত্বিক সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে স্মারকলিপি পাঠ করেন মাইনোরিটি রাইটস মুভমেন্টের মুখপাত্র শুভ রায়।