নেপালে স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র

S M Ashraful Azom


সেবা ডেস্ক: স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশের একটি বিশেষায়িত অঞ্চল পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার অপতৎপরতা যেন থামছেই না। শান্তিচুক্তি পূর্ববর্তী সময় থেকেই পৃথক রাষ্ট্র গঠনের জন্য সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ করে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের একটি বিচ্ছিন্নতাবাদি গোষ্ঠী, যার মুলে রয়েছেন রাজা দেবাশীষ রায়। শান্তি চুক্তি পরবর্তী সময়ে নতুন কৌশলে ‘আদিবাসী’ নামক অযৌক্তিক ও অসাংবিধানিক স্বীকৃতি আদায়ের মাধ্যমে এ তত্পরতা জোরদার করছে রাজা দেবাশীষ এবং তার সন্ত্রাসী বাহিনী।

এই অপ-তৎরতার অংশ হিসেবে সম্প্রতি নেপালে পার্বত্য চট্টগ্রাম সংক্রান্ত বিশেষ ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হয়েছে, যা বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র। জানা গেছে, এই ওয়ার্কশপটি ভারতে করার চেষ্টা হলেও তা ভেস্তে যায়। শেষ পর্যন্ত নেপালে বাংলাদেশবিরোধী এই ওয়ার্কশপটি হতে যাচ্ছে। এই ওয়ার্কশপের নেপথ্য নায়ক রাজা দেবাশীষ এবং তার স্বাধীনতাবিরোধীদের চক্র। বিষয়টি একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করছে।

উক্ত ওয়ার্কশপে আমন্ত্রিত বাংলাদেশি কথিত বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজের কিছু সদস্য রয়েছেন। এছাড়া বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য মানবাধিকার সংগঠন ও এনজিওকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ সকল সংগঠন সব সময় এদেশের সরকারবিরোধী প্রতারণায় জড়িত এবং তুচ্ছ ঘটনাকে বিশাল আকারে বহিঃবিশ্বে প্রকাশ করে আসছে। এর বিনিময়ে তারা মোটা অঙ্কের টাকা অনুদান পেয়ে থাকে। গোয়েন্দা অনুসন্ধানে এ তথ্যও বেরিয়ে এসেছে।

চট্টগ্রামের চাকমা জনগোষ্ঠীর বর্তমান কথিত ‘রাজা’ দেবাশীষ এর বাবা ত্রিদিব রায় ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে ছিলেন একজন স্বঘোষিত রাজাকার। বর্তমানে রাজাকারপুত্র দেবাশীষ প্রতিনিয়ত তার কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। অদ্যবধি শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে তার কোনরূপ সহযোগিতামূলক মনোভাব ও ভূমিকা পরিলক্ষিত হয়নি; বরং তিনি শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন ব্যাহত করতেই সর্বদা তত্পর রয়েছেন। তার এ ধরনের আচারণের মুখ্য উদ্দেশ্য হলো চাকমা জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় তার প্রভাব ও আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা। নিরীহ উপজাতিদের ভুল বুঝিয়ে দলে ভিড়ানোর চেষ্টায় লিপ্ত দেবাশীষ হয়তো জানেন না, জুম্মল্যান্ড একটি আলাদা স্বাধীন দেশ হলে তারা পাবেন না বাংলাদেশের কোনো সুযোগ সুবিধা। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, সড়ক পথ, আকাশ পথ, স্থল/জল বন্দর, উৎপাদিত ফসল, প্রযুক্তি, প্রশাসন সহ আরো অসংখ্য সুবিধা।

এ ব্যাপারে নেপালে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে সামসের সঙ্গে গতকাল রবিবার স্থানীয় সময় রাত ৯টায় যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সাধারণত বাংলাদেশের কোন সংগঠন কর্তৃক এ ধরনের সেমিনারের আয়োজন করলে দূতাবাসকে জানানো হয়ে থাকে। কিন্তু ২৭-২৮ মার্চের সেমিনার সম্পর্কে দূতাবাসকে কিছু জানানো হয়নি।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতায় চাকমা রাজাকারদের নেতৃত্ব দেয়া এই উপজাতি রাজপরিবারটি নিজেদেরকে চট্টগ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে দাবি করলেও তার বাবা পাকিস্তানের নাগরিকত্ব পেয়ে স্থায়ীভাবে আমৃত্যু সেখানে বসবাস করেন এবং সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন। অথচ যুদ্ধাপরাধী ত্রিদিব রায়ের পুত্র হয়েও এই দেবাশীষ রায় রাঙামাটি সার্কেলের চাকমা রাজার দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন, যা পুরো চাকমা সম্প্রদায় এবং পুরো বাঙালি জাতির জন্য অসম্মান, লজ্জার ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী।



 -

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top