ভারত সরকার মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মারক হস্তান্তর

Seba Hot News
ভারত সরকার মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মারক হস্তান্তর
সেবা ডেস্ক: - বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত একটি এমআই-৪ হেলিকপ্টার বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে এবং দুটি পিটি-৭৬ ট্যাংক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে স্থায়ীভাবে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় সরকার।  বুধবার ঢাকায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি বাশারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা মুক্তিযুদ্ধের এ স্মারক হস্তান্তর করেন।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষে সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ লে. জেনারেল মো. নাজিমউদ্দীন ট্যাংক দু’টি এবং বিমান বাহিনীর পক্ষে সহকারী বিমান বাহিনী প্রধান (প্রশাসন) এয়ার ভাইস মার্শাল এম আবুল বাশার হেলিকপ্টারটি গ্রহণ করেন। গতবছর ২২ অক্টোবর গণভবনে এক অনুষ্ঠানে ভারতের বিমানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মারকের একটি তালিকা হস্তান্তর করেন।

এরই ধারাবাহিকতায় হেলিকপ্টার ও ট্যাংক দুটি যথাক্রমে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তর করা হয়। আজ বুধবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, ‘আমরা আপনাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করার সুযোগ পেয়ে গর্বিত। স্বাধীনতা সংগ্রাম ভারত-বাংলাদেশের সৈন্য ও জনগণের সাহস, বীরত্ব, আত্মত্যাগ ও গৌরবের সাক্ষ্য। এই উত্তরাধিকার এবং চেতনা আগামী দিনগুলোতে দুই দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।’

উল্লেখ্য, পিটি-৭৬ ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর আর্মার্ড রেজিমেন্টের হালকা ধরনের উভচর ট্যাংক। যুদ্ধের সময় নদী ও জলাশয় পারাপারে এই ট্যাংকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা রেখেছিল। গরীবপুরের বিখ্যাত যুদ্ধে এই ট্যাংকগুলির ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। ওই যুদ্ধে প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত এম-৩৪ শ্যাফে ট্যাংকসমৃদ্ধ পাকিস্তানী বাহিনীর একটি বড় দল পরাজিত হয়েছিল। যুদ্ধের সময় উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পশ্চিম ও পশ্চিমাঞ্চলসমূহে পাকিস্তানী বাহিনীকে পিছু হটাতে এই ট্যাংকগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

এমআই-৪ হেলিকপ্টার মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ভারতীয় বিমানবাহিনীর পরিবহন হেলিকপ্টার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল।পূর্বাঞ্চলে যৌথ বাহিনী কর্তৃক আকাশপথে পরিচালিত অপারেশনের জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল এটি। দ্রুত সিলেট দখল করতে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্র্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। ভারতের ৪/৫ গুর্খা ব্যাটালিয়ন এই অপারেশনের জন্য সুরমা নদীর তীরে সিলেটের উপকন্ঠে অবতরণ করেছিল।

আবার এই হেলিকপ্টারযোগেই ১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রমত্তা মেঘনা নদীর চরে অবতরণ করেছিল ৩১১ পদাতিক ব্রিগেড। মেঘনা নদী পাড়ি দিয়ে টানা ৩৬ ঘন্টায় দখলদার পাকিস্তানী বাহিনীর ওপর ১১০ বার হামলা চালানো হয়েছিল ওই হেলিকপ্টার থেকে। যৌথ বাহিনীর সেই অভিযান মেঘনা হেলিব্রিজ নামে পরিচিত।

এমআই-৪ হেলিকপ্টারটি এবং পিটি-৭৬ ট্যাংক দুটি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশেষ অবদানের স্বাক্ষর বহন করে। এমআই-৪ হেলিকপ্টার এবং পিটি-৭৬ ট্যাংক দুটির হস্তান্তর দুই দেশের সশস্ত্র বাহিনীর বিদ্যমান সুসম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আশা প্রকাশ করা হয়।

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top