বাঁশখালীতে আগাম লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। ছবি-কালীপুর থেকে। |
শিব্বির আহমদ রানা, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: কালিপুরের লিচুর কদর সারাদেশেই। চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার কালিপুর লিচুর জন্য বিখ্যাত যুগ যুগ ধরে। বৈলছড়ি, গুণাগরি, পুকুরিয়া, জলদি, জঙ্গল চাম্বল সহ প্রায় প্রত্যেক ইউনিয়নেই পাহাড়ি এলাকায় একই সাথে সমতলে লিচুর চাষ হয়ে আসছে বহুকাল থেকেই।
বাণিজ্যিক ও ঘরোয়াভাবে উৎপাদিত এই লিচুর কদর দেশ জুড়েই। আগাম লিচু বাজারে দেখা মিলছে এখন। তেমন কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন না হওয়ায় এবার লিচুর উৎপাদন হয়েছে বরাবরের চাইতে কয়েকগুণ বেশি। লিচুর বাম্পার ফলন হলেও দামের কমতি নেই এখানে। ব্যাপক চাহিদা থাকায় এবার আগাম লিচু বাগান ও লিচুর আকার ভেদে প্রতি ১০০লিচু বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০টাকায়।
স্থানীয় বাজারে প্রথম দিকে দাম বেশি থাকলেও ধীরে ধীরে ২০০-২৫০ টাকায় কমে আসবে। রাজশাহী-দিনাজপুরের লিচুর তুলনায় কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও স্বাদে-মানে বাঁশখালীর লিচুর তুলনা নেই। তাছাড়া বাঁশখালীর লিচুর তুলনায় রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুরের লিচু কিছুদিন পরে বাজারে আসতে শুরু করে। চট্টগ্রাম ও আশেপাশের এলাকায় বাঁশখালীর লিচুর আলাদা কদর রয়েছে।
মৌসুমের একেবারে প্রথম দিকেই বাজারে পাওয়া যায় বলে কালিপুরের লিচুর খ্যাতির রেয়াজটাও কমেনা। এবার লিচু উৎপাদনে লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে বলে জানান কালিপুরের লিচু চাষী জালাল উদ্দীন। তাছাড়া পালেগ্রাম মাদ্রাসার লিচু বাগানেও ব্যাপক উৎপাদন আশা জাগিয়েছে লিচু চাষীদের।
আরও পড়ুন>>দীর্ঘ ৮ বছর পেরিয়ে অবশেষে কার্যক্রম শুরু করছে বাশঁখালী ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন
বাঁশখালী উপজেলার কৃষি অফিসের এক কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা যায় বাঁশখালীতে ৫০০-৫৫০ হেক্টর জমিতে লিচুর বাণিজ্যিক চাষ হয়। এবারে ফলন বেশি হওয়ায় লিচু চাষীরা খুশি বলে জানান তিনি। তাছাড়া কৃষি অফিস থেকে যথাযত সহযোগিতা দেয়া হয়েছে লিচু চাষী দের এমনটিও জানান ওই কর্মকর্তা। ব্রিটিশ আমল থেকেই বাঁশখালীর উপজেলার কালিপুরে জমিদার বংশের লোকজন বোম্বাই, কোলকাতা, চায়না-থ্রি জাতের লিচু চারা কলম সংগ্রহ করে বাগান করে আসছেন।
বাঁশখালী উপজেলার কৃষি অফিসের এক কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা যায় বাঁশখালীতে ৫০০-৫৫০ হেক্টর জমিতে লিচুর বাণিজ্যিক চাষ হয়। এবারে ফলন বেশি হওয়ায় লিচু চাষীরা খুশি বলে জানান তিনি। তাছাড়া কৃষি অফিস থেকে যথাযত সহযোগিতা দেয়া হয়েছে লিচু চাষী দের এমনটিও জানান ওই কর্মকর্তা। ব্রিটিশ আমল থেকেই বাঁশখালীর উপজেলার কালিপুরে জমিদার বংশের লোকজন বোম্বাই, কোলকাতা, চায়না-থ্রি জাতের লিচু চারা কলম সংগ্রহ করে বাগান করে আসছেন।
পরে তা জলদি, পুকুরিয়া, সাধনপুর, চাম্বল, নাপোড়ায় বিস্তৃতি লাভ করে। ভালো ফলন হওয়ায় একেকটি বাগান এক থেকে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাঁশখালীর তিন চারটি এলাকায় লিচুর পাইকারী বাজার বসে। পাইকারদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন যায়গায় পৌঁছে যায় বাঁশখালীর এ লিচু।
বিদেশে স্বজনদের কাছে নতুন লিচু পাঠানোর রেয়াজ আছে এই অঞ্চলে। পুষ্টিগত মান ও স্বাদের কারণে বাঁশখালীর লিচুর এমন কদর বেশি। তাছাড়া চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলিখেলার বিশাল মেলায় বাঁশখালীর লিচুর আলাদা চাহিদা থাকে। যা এবারে চোখে পড়েনি।
লিচু চাষী জমির উদ্দীন জানান, ফলন দেরিতে হওয়ায় পাকতে সময় নিয়েছে বেশি, যার কারণে জব্বারের বলি খেলায় প্রতিবছরের ন্যায় এবছর বাঁশখালীর লিচু যায়নি। কালিপুরের একটি বাগান থেকে লিচু কিনতে আসা শিহাবুদ্দীন বলেন, 'সারা বছর তো বিদেশি ফল আপেল, আঙুর, কমলা কিনেছি। সেখানে নানান রসায়নিক, ফরমালিন ও ভেজাল থাকে। কিন্তু বাঁশখালীর লিচুতে ভেজাল থাকেনা, তাই দাম একটু বেশি হলেও বাগান থেকেই বাচ্ছাদের জন্যে লিচু কিনে নিয়ে যাচ্ছি।'
বাঁশখালীর লিচুর কলম চারার চাহিদাও ব্যাপক। কালিপুর, বৈলছড়ি সহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে কলম চারার ব্যবসা ভালো জমে । দূর দূরান্ত থেকে লিচু চাষীরা কলম চারা কিনে নিয়ে যায় এখান থেকে।