উত্তরসূরি খোঁজার নির্দেশনা দিলেন শেখ হাসিনা

S M Ashraful Azom
উত্তরসূরি খোঁজার নির্দেশনা দিলেন শেখ হাসিনা
সেবা ডেস্ক: গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে ঐক্যবদ্ধ থেকে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে সর্বস্তরের নেতা-কর্মীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর অবর্তমানে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব খোঁজার জন্যও দলীয় নেতা-কর্মীদের পরামর্শ দেন। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে গেলে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ও সাহারা খাতুন, সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, মাহবুব উল আলম হানিফ, দীপু মনিসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা কথা মনে রাখতে হবে, সংগঠন যদি শক্তিশালী হয়, সংগঠনে যদি ঐক্য থাকে, আর এই সংগঠন যদি জনগণের পাশে থেকে জনমত সৃষ্টি করতে পারে, তখনই যেকোনো কিছু অর্জন করা সম্ভব হয়; যা আমরা বারবার প্রমাণ করেছি।’


প্রধানমন্ত্রী ৩৭ বছর আগের ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ এই দিনে তাঁর স্বদেশে ফিরে আসার স্মৃতি রোমন্থনে বারবারই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। ১৯৭৫-এর বিয়োগান্তক অধ্যায়ের পর শেখ হাসিনা প্রবাসে দীর্ঘদিন রিফিউজি হিসেবে কাটাতে বাধ্য হওয়ার পর আওয়ামী লীগ তাঁকে সভাপতি নির্বাচন করলে ১৯৮১ সালের এই দিনে তিনি দেশে ফিরে আসেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেদিন প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টির মধ্যেই তাঁকে বরণ করে নেওয়ার জন্য মানুষের যে ঢল দেখেছেন, মানুষের যে ভালোবাসা পেয়েছেন, তা তাঁকে এখনো আপ্লুত করে। মা-বাবা, ভাই, পরিজনদের হারিয়ে বাংলার মানুষের কাছ থেকে পাওয়া ভালোবাসাই তাঁকে চলার পথ দেখিয়েছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাঁদের আশ্রয়েই আমার রাজনৈতিক জীবনের শুরু।’


ছাত্ররাজনীতি করলেও আওয়ামী লীগের মতো সংগঠনের দায়িত্ব নেওয়াটা একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক কঠিন সময়ে তিনি দেশে ফেরেন। জাতির পিতার খুনিরা তখন পুরস্কৃত হয়ে বহাল তবিয়তে, ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স থাকায় বাবা হত্যার বিচার চাইতে পারছেন না, জিয়া তখন নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে প্রতি রাতে কারফিউ দিয়ে দেশ চালাচ্ছেন। আর ভাঙার চেষ্টা চলছে আওয়ামী লীগকে।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে জাতির পিতা হত্যাকাণ্ড এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সাক্ষীদের নিরাপত্তা বিধানে সচেষ্ট থাকার জন্যও দলের নেতা-কর্মীদের পরামর্শ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা হত্যার বিচার করেছি, কিন্তু ষড়যন্ত্রের বিচার তো আর হয়নি, তদন্ত হয়নি। আমরা যুদ্ধাপরাধীদেরও বিচার করছি এবং এই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে গিয়ে যারা সাক্ষ্য দিয়েছেন, তাদের ওপরও কিন্তু অনেক সময় অত্যাচার হয়েছে। যারা সাক্ষ্য দিয়েছেন, তাদের ওপর কেউ যেন অত্যাচার করতে না পারে।’


১৯টি ক্যু করে সেনাবাহিনীর বহু মুক্তিযোদ্ধা সেনা অফিসার-সৈনিকদের হত্যা এবং বিমানবাহিনীর ৫৬২ জন কর্মকর্তাকে হত্যা করেছেন জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর সেনাবাহিনীর অফিসারদের হত্যার ষড়যন্ত্রের ব্লুপ্রিন্ট বাস্তবায়ন করা হয়েছে, এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘জিয়া তার দলের ভেতরের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে চট্টগ্রামে নিহত হন। জিয়া নিহত হওয়ার পর বিচারের নামে প্রহসন করে ১২ জন তরুণ অফিসারকে মারা হয়।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে ক্ষমতা ক্যান্টনমেন্টে চলে গেছে, তা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া এবং দেশের গণতন্ত্রায়ণ ও নিরন্ন দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই ছিল তাঁর রাজনীতির লক্ষ্য।

শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এক উজ্জ্বল নেতৃত্বের নাম, এক দিকপালের নাম। আর তাই নিজে ক্ষমতায় থেকেও খুঁজছেন নিজের যোগ্য উত্তরসূরী, যাতে পরবর্তী কাণ্ডারি পাড়ি দিতে পারে সমুদ্র।




ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top