
সেবা ডেস্ক: গাজীপুর সিটিতে গত ১৫ মে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও আইনি জটিলতায় তা প্রায় দেড় মাস পিছিয়ে এ মাসের ২৬ জুন হতে যাচ্ছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের স্থগিত হওয়া নির্বাচন আইনি জটিলতা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর দ্বিতীয় দফা তফসিল অনুযায়ী আনুষ্ঠানিক
প্রচার-প্রচারণায় নেমেছেন মেয়র-কাউন্সিলর প্রার্থীরা। মেয়র পদে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর মধ্যে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গাজীপুরে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে সর্বশক্তি নিয়োগ করে মাঠে নেমেছে দুই দলের নেতা-কর্মীরা।
এবারের গাজীপুর নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর আলম এবং গত নির্বাচনে বিএনপি থেকে বিজয়ী মেয়র আব্দুল মান্নানকে বাদ দিয়ে বিএনপি এবার মনোনয়ন দিয়েছে হাসান উদ্দিন সরকারকে।
খুলনা সিটি করপোরশেন নির্বাচনে ভোটের মাঠে অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হয়েছে বিএনপিকে। তাই এবার গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফল নিজেদের পক্ষে নিতে মরিয়া বিএনপি।
সম্প্রতি খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক করেন বিএনপির নেতারা। বৈঠকে দলের প্রার্থী হাসান উদ্দিন এই নির্বাচনে বিএনপিতে বিরাজমান অন্তঃকোন্দলকে প্রধান বাধা হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন আওয়ামী লীগ এর নেতা কর্মীরা যেখানে নিজেদের পকেটের অর্থ খরচ করে তাদের প্রার্থীকে জয়ী করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে সেখানে আমাদের দলের নেতাকর্মীরা এক ধরণের গা ছাড়া ভাব নিয়ে আছে।
হাসানউদ্দিন অভিযোগ করে বলেন অনেক নেতা কর্মী টাকার বিনিময়ে গোপনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষ হয়ে কাজ করছেন।
এদিকে গাজীপুরে সরোজমিনে ঘুরে বিভিন্ন স্তরের মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায় এবারের নির্বাচনে দলীয় নেতাকর্মীদের অন্তঃকোন্দল সামাল দেওয়াটাই সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ।
এই দলীয় কোন্দল সৃষ্টি হওয়ার পিছনে প্রধান কারিগর হিসেবে রয়েছেন গাজীপুরের বর্তমান মেয়র আব্দুল মান্নান। প্রসঙ্গত গত গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আব্দুল মান্নান বিএনপি থেকে মনোনয়ন নিয়ে জয়ী হয়ে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন।
কিন্তু এবারের নির্বাচনে মান্নানকে বাদ দিয়ে হাসান উদ্দিন সরকারকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। সংশ্লিষ্ট অনেকে অভিযোগ করে বলেন লন্ডনে তারেক জিয়ার কাছে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাঠিয়েই মূলত বিএনপি থেকে মনোনয়ন লাভ করেছে হাসানউদ্দিন।
গাজীপুর বিএনপির অনেক নেতাকর্মীর সাথে কথা বলে জানা গেছে আব্দুল মান্নান মনোনয়ন না পাওয়াতে তার সমর্থকরা হাসানউদ্দিনের পক্ষে কাজ করা থেকে বিরত রয়েছেন। মান্নানসহ তার সমর্থকদের সাথে কেন্দ্রের নেতাদের একাধিক বৈঠকের পরও কোনো লাভ হচ্ছেনা।
এখন দেখার অপেক্ষা বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রাপ্ত মেয়র প্রার্থী কিভাবে এই অন্তঃকোন্দল সামাল দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যান।