
সেবা ডেস্ক: আসছে রাজশাহী নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। নির্বাচনী প্রচারণায় কাঙ্খিত সাফল্য না পাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে দলীয় নেতাকর্মীদের হয়রানি সহ আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র প্রার্থী ও সাবেক সফল মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের বিরুদ্ধে অন্তত ২০টি মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।
সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল অভিযোগ করেন, নির্বাচনী প্রচারণায় যে সকল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেছেন পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছে এবং নির্বাচনী প্রচারণা থেকে বিরত থাকার জন্য ভয়-ভীতি প্রদর্শন করছে। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পুলিশ কনস্টেবল সিদ্ধার্থ হত্যা মামলার আসামিসহ যারা ২০১৪ সালের নির্বাচন পরবর্তী জ্বালাও পোড়াও আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলো এবং বিভিন্ন সময়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে রাজশাহী শহরকে অস্থিতিশীল করেছিল, পুলিশ মূলত তাদের গ্রেফতার করছে। উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ অনুসারী যে সকল মাদক ব্যাবসায়ী ছিল পুলিশ তাদেরও গ্রেফতার করেছে।
বুলবুল বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা তার অনুসারীদের ভয় ভীতি দেখাচ্ছে এবং নির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্রে যেতে নিষেধ করছে।
সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উৎসবমুখর পরিবেশে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সাধারণ জনগণের নিকট ভোট প্রার্থনা করছে এবং লিটনকে একজন যোগ্য প্রার্থী হিসেবে উপস্থাপন করছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাবেক মেয়র বুলবুলের সাথে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি চেয়ারপার্সন এর উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, যুবদল সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন ও সাবেক সংসদ সদস্য নাসিম মোস্তফার মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব রয়েছে।
মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর বুলবুল নিজের অবস্থানকে শক্তিশালী করার চেষ্টায় লিপ্ত ছিলেন এবং তিনি বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে অবমূল্যায়ন করতেন। যার সুবাদে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা নির্বাচনী প্রচারণায় লোক দেখানো অংশগ্রহণ করলেও বাস্তবে তাদের অনুসারী কর্মীরা বুলবুলকে সমর্থন করছেন না।
ফলশ্রুতিতে বুলবুল অদ্যাবধি নির্বাচন পরিচালনার জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট ওয়ার্ড কমিটি, কেন্দ্র কমিটি ও মহল্লা কমিটি গঠন করতে ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি বুলবুল এখন পর্যন্ত নির্বাচনী ইশতেহার জনগণের সামনে উপস্থাপন করতে পারেনি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর সারাদেশে বিএনপি আন্দোলন করলেও রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি হিসেবে বুলবুল কোনো জোরালো আন্দোলন করতে পারেননি। যার ফলে নেতাকর্মীদের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এবং বুলবুলের নেতৃত্ব নিয়ে তাদের মনে সংশয় দেখা দিয়েছে। যার প্রভাব তার নির্বাচনী প্রচারণায় পড়েছে।
এছাড়া বুলবুল আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণ লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছেন। এ ব্যাপারে বিশিষ্ট সাংবাদিক এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিকট হতে জানা যায়, লিটন নির্বাচনী আচরণ বিধি মেনে চলেছেন। মূলত বুলবুল পোস্টার সাঁটানো ও লিফলেট বিতরণের জন্য পর্যাপ্ত নেতা কর্মীদের পাশে পাচ্ছেন না। এছাড়া বুলবুলকে দলের নেতাকর্মীরা এক সময় দুর্নীতিবাজ ও অদক্ষ মেয়র হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল। যা আজ টক্ অফ দা টাউন এ পরিণত হয়েছে। এছাড়া বুলবুলের অনুসারী সালাউদ্দিন অসাধু সাংবাদিকদের নিয়ে বুলবুলের পক্ষে সংবাদ পরিবেশনের চেষ্টা চালালেও সাধারণ জনগণ তা আমলে নিবেন না বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। এছাড়া বুলবুল দুঃসময়ে দলের নেতাকর্মীদের পাশে থাকতে পারেননি। মাদক ও সন্ত্রাস নির্মূল, পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও গ্রীন সিটি, ক্লিন সিটি গড়তে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। বুলবুলের জনপ্রিয়তা আজ তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে বলে সুধী সমাজ মনে করেন। ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন অজুহাতে রাশিক নির্বাচনকে সাধারণ জনগণের নিকট প্রশ্নবিদ্ধ করার প্রয়াস আজ দৃশ্যমান।
-