মাহী বি চৌধুরীর প্ল্যান ‘বি’: বাংলাদেশকে বিপথে নেবার পরিকল্পনা

S M Ashraful Azom
মাহী বি চৌধুরীর প্ল্যান ‘বি’: বাংলাদেশকে বিপথে নেবার পরিকল্পনা
মাহী বি চৌধুরী

সেবা ডেস্ক: বাংলাদেশে প্রতিবছরের শীতকালে শীতপ্রধান দেশ থেকে অতিরিক্ত শীত থেকে বাঁচতে অনেক জাতির অতিথি পাখি পরিভ্রমণ করে। ঠিক তেমনি এদেশের মৌসুমী কিছু রাজনীতিবিদও নির্বাচনকালীন সময়ে হঠাৎ তৎপর হয়ে যায়, রাজনীতির অন্দর মহলের খেলায় মেতে ‍উঠে, লক্ষ্য হালুয়া রুটিতে ভাগ বসানো।

শীতকালীন অতিথি পাখিরা প্রতিবছর শীতের তিনমাস এদেশে অবস্থান করলেও এই মৌসুমী রাজনীতিবিদেরা প্রতিবছর দূরে থাকে, শুধুমাত্র ৫ বছর পর পর নির্বাচনের সময় এদের রাজনীতি ও জনগণের কথা মনে পড়ে।

সারাবিশ্বের সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলো রাজপথে থেকে আন্দোলন কিংবা জনবান্ধব কর্মসূচি প্রণয়ন করে জনগণের আস্থা অজর্নের মাধ্যমে নির্বাচনে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হবার চেষ্টা করে। এই একটি প্ল্যানেই ক্ষমতা অজর্নের স্বপ্ন দেখে রাজনৈতিক দলগুলো।

সোজাপথের এই রাজনীতির বাইরে গিয়ে বঙ্গভবন থেকে রেললাইন ধরে পালানো সাবেক রাষ্ট্রপতি বি চৌধুরী পুত্র মাহী বি চৌধুরী যিনি ২০০৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে মাত্র ১৫ শতাংশ ভোট পেয়েছেন তিনি প্রজন্ম বাংলাদেশ নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে প্ল্যান ‘বি’ প্রকাশ করেছেন। কারণ এই মাহী বি চৌধুরীরা সোজাপথের প্ল্যান ‘এ’-তে নির্বাচনে অংশ নিয়ে ভোটে জেতা দূরে থাক, ন্যূনতম প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতেও সক্ষম নয়। সেজন্য তাদের জন্য পিছনের রাস্তা মানে হত্যা, যড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় যাওয়ার যে পথ, যে পথে নির্বাচনে জয়লাভ না করেও ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব সেই পথে ক্ষমতায় যাওয়ার নামই প্ল্যান ‘বি’। প্ল্যান ‘বি’ এর অর্থ বিপথে যাবে বাংলাদেশ, আর যার বন্দোবস্তে নেমেছে মাহী বি চৌধুরী।

প্রজন্ম বাংলাদেশের প্ল্যান ‘বি’ এর প্রোগ্রামে ‘আই হেইট পলিটিক্স’ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করার জন্য পপুলিস্ট কিছু অন্তঃসারশূন্য বাণী প্রসাব করেছেন। যেমন-

তার বক্তব্য- ‘স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরও কেন প্রশ্ন উঠবে ৭১ এর হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার, স্বাধীন দেশে আমরা কার বিরুদ্ধে হাতিয়ার তুলবো?’

৭১-এর হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার ‘স্লোগানটি যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে গড়ে ওঠা গণজাগরণের সময় আলোড়ন তুলেছিল।

তাহলে কি আমরা ধরে নেব আপনার আক্রমণ রাজাকারের ফাঁসির দাবিতে এদেশের মানুষেরা যে গণজোয়ার দেখিয়েছিল সেদিকে? তাহলে এই স্লোগানের উপর আপনার এতো ক্ষোভ কি এজন্যই? আপনার বাবা তো আবার সেই দেশবিরোধী অপশক্তির শক্তিবলে রাষ্ট্রপতিও হয়েছিলেন।

আমরা এই স্বাধীন দেশে তার বিরুদ্ধে হাতিয়ার তুলবো যারা দেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর থাকার পরেও যাদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন এদেশের মানচিত্র। যা অর্জিত হয়েছিল আমাদের ৩০ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে।

অবশ্য, আইট হেইট পলিটিক্স প্রজন্ম না জানলেও আমরা যারা একটু জানার চেষ্টা করি এদেশের রাজনীতি নিয়ে।

তারা পিছনে ফিরে তাকালেই দেখতে পাবে মাহী বি চৌধুরী যুদ্ধাপরাধী সাঈদী পুত্র মাসুদ সাঈদীর সাথে অন্তরঙ্গ ছবি কিন্তু এই ‘আই হেইট পলিটিক্স’ গ্রুপ পিছনে এই দৃশ্য নিয়ে আলোচনা করবে না আর এই পিছনের খেলা প্ল্যান ‘বি’-এর অন্যতম অংশ।

সামনে এক রূপ তার পিছনে আরেক রূপ! মুখে বলবে জামায়াতের সাথে নাই, তলে তলে করবে সমস্ত জামাতি এজেন্ডা বাস্তবায়ন।

তারপরের বক্তব্য- “বাঁধা আসবে যেখানে লড়াই হবে সেখানে। লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই। এই প্রজন্ম আর লড়াই করার রাজনীতি চায় না।”

স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি জামায়াত-শিবির স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরেও যখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম কলেজ, মহসীন কলেজ, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, এমসি কলেজ দখল করে রেখেছিল তখন কি লড়াই না করে এই শিবিরকে কি দেশ ধ্বংস ও জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ড করার সুযোগ দিবো? না, ছাত্র-জনতা ও প্রগতিশীল সকল ছাত্র সংগঠনকে সাথে নিয়ে ছাত্রলীগ এদেরকে প্রতিহত করে এদেরকে ক্যাম্পাস থেকে বিতারিত করেছে।

আপনারা যখনই দেশবিরোধী কাজে লিপ্ত হবার সুযোগ করে দেবেন আমরা সেখানেই বাঁধা দেব। আমরা এই অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেই বাঁচবো। আমরা লড়াই করার রাজনীতি করব তবুও স্বাধীনতা বিরোধীদের গাড়িতে আর পতাকা তুলে দিতে দেব না আপনাদের।

ছাত্র সমাজ বাহান্নতে লড়াই করেছে, একাত্তরে করেছে আর এখন যতদিন যেখানে জামায়াত-শিবির অবস্থান নিবে সেখানেই লড়াই করবে।

তারপরের বক্তব্য, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরো দেব রক্ত। এই প্রজন্মকে জিজ্ঞেস করেন ওরা রক্ত দিতে চায় না’

মাহি বি চৌধুরী করেছেন আপনিও আবারও ভুল। আপনারা যতবার আমাদের দেশকে জামায়াত-জঙ্গি-মাফিয়া তারেক জিয়ার হাতে তুলে দিতে চাইবেন আমরা ঠিক ততোবার রক্ত দিতে প্রস্তুত আছি। আপনি একাত্তরের শহীদ সম্মান দেখানোর নেকি ভান করেন অথচ সেই একাত্তরের চেতনা সমুন্নত রাখতে গিয়ে গণজাগরণে জামায়াতের হাতে নিহত জগৎজ্যোতি, দ্বীপদের ভুলে যান।

তাদের রক্তকে অস্বীকার করতে চান কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী প্রজন্ম এই সুযোগ আপনাকে দিবে না।

তাই তারেক জিয়ার মতো হাওয়া ভবন যড়যন্ত্র করে প্ল্যান ‘বি’-তে না গিয়ে জনগণের রাজনীতির মাধ্যমে সোজা প্ল্যানে আগান নতুবা তারেক জিয়ার মতো রাজনীতি থেকে নির্বাসিত হতে হবে।




ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top