টাঙ্গাইলের ১ হাজার ৬২৩ প্রাথমিক বিদ্যালয় নতুন সাজে সজ্জিত

S M Ashraful Azom
0
টাঙ্গাইলের ১ হাজার ৬২৩ প্রাথমিক বিদ্যালয় নতুন সাজে সজ্জিত
অভিজিৎ ঘোষ, টাঙ্গাইল সংবাদদাতা: “আমাদের বিদ্যালয় আমরাই গড়ব” এই ব্যতিক্রমী স্লোগানে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলাসহ জেলার প্রতিটি উপজেলার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার গুনগত মান নিশ্চিতকরণ ও আকর্ষণীয় পরিবেশ তৈরি হয়েছে। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা আগ্রহী হয়ে উঠার পাশাপাশি লেখাপড়ার মান ও পরিবেশ নিয়ে খুশি। উপবৃত্তি ও বিদ্যালয়গুলোতে মিড-ডে মিল চালু করায় কমে এসেছে ঝড়ে পড়া শিশুর হার।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইল সদরসহ ১১টি উপজেলায় এক হাজার ছয়শত তেইশটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। স্কুল ম্যনেজিং কমিটি, স্থানীয় শিক্ষানুরাগী, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রতিটা স্কুলের ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। বর্তমানে স্কুল ভবনগুলোকে সুন্দর আকর্ষণীয় ছবি, বানী, বর্ণমালা দিয়ে সাজানো হয়েছে। স্কুলের সামনে রয়েছে ফুলের বাগান। শতভাগ শিক্ষার্থীর স্কুল ইউনিফরম রয়েছে, স্কুলে রয়েছে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকবৃন্দের আইডি কার্ড ও শিক্ষক ইউনিফর্ম। প্রতিটি বিদ্যালয়ে রয়েছে সক্রিয় কাব কার্যক্রম, সুসজ্জিত প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিকক্ষ, ক্ষুদেডাক্তার টিম, ডিজিটাল ক্লাসরুম, প্রোগ্রেসিভ রিপোর্ট। শিক্ষার্থীদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ও স্মাটনেসের জন্য প্রতিটি বিদ্যালয়ে লাগানো হয়েছে লূকিং গ্লাস, শিশুদের সৃজনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রাথমিক পর্যায় হতে সততার চর্চার জন্য বিদ্যালয়ে স্থাপন করা হয়েছে সততা স্টোর। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্ভুদ্ধ করতে প্রতিটি বিদ্যালয়েই শিশুদের দেয়া হচ্ছে মেধা পুরষ্কার ও মায়েদের দেয়া হচ্ছে সেরা মা সম্মাননা। স্থানীয় জনগন, অভিভাবক ও দাতাশীল ব্যক্তিদের উদ্ভুদ্ধ করার লক্ষ্যে দেয়া হচ্ছে সেরা দাতা সন্মাননা। এ ছাড়াও বিদ্যালয়ে রয়েছে অভিভাবক ছাউনি,মিনি পার্ক, মিনি পাঠাগার, মুক্তিযোদ্ধা কর্নার। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে নিয়মিত সমাবেশ, শপথবাক্য পাঠ ও জাতীয় সংগীত পাঠ করা হয়। প্রতিটি স্কুলে মিড ডে মিল কার্যক্রম চালু হওয়ায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।



ভূঞাপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, তারা বিদ্যালয়ে এসে পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলা করতে পারে। স্কুলে বাগানসহ সুন্দর করে সাজানোর ফলে বাড়ির চেয়ে স্কুল তার কাছে বেশি ভাল লাগে।



উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সুন্দর করে সজ্জিত করার ফলে তাদের সন্তানরা পূর্বের তুলনায় বিদ্যালয়ের প্রতি এখন বেশি আগ্রহী হয়েই স্কুলে যায়। লেখাপড়ার মান অনেকটা বেড়েছে।



ভূঞাপুর উপজেলার চরচন্দনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুল ইসলাম জানান, দূর্বল শিক্ষার্থীদের সনাক্ত করে শিক্ষকগণ বিশেষভাবে পাঠদান করে নিরাময়ের ব্যবস্থা করেছেন। পৌরসভাতেও শতভাগ উপবৃত্তি দেওয়ার কারণে বর্তমানে ঝড়ে পড়ার হার অনেক কমে গিয়েছে। তাছাড়াও শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ভাষায় শব্দভান্ডার সমৃদ্ধকরণে ওয়ান ডে ওয়ান ওয়ার্ড কার্যক্রম চালু করা হয়েছে।



ভূঞাপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার, শাহনেওয়াজ পারভীন জানান, টাঙ্গাইলে বিদ্যালয়ের অংশীজন হিসেবে এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে নিজেদের বিদ্যালয় নিজেরাই গড়ে তোলার জন্য দৃঢ় প্রতীজ্ঞ। যার ফলে বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কর্মকান্ডে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে। লেখাপড়ার মান বেড়েছে।



জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবদুল আজিজ জানান, সরকারি বরাদ্দ (স্লিপ) ও স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় অবকাঠামোগত উন্নয়ন করার মাধ্যমে বিদ্যালয়কে দৃষ্টিনন্দন করা হচ্ছে। বিদ্যালয়ের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদেরকে বিদ্যালয়টি তাদের নিজেদের এ ধারনা দেওয়ায় তারা অংশীদারিত্ব অনুভব করছে। ফলে এলাকাবাসী নিজেদের প্রতিষ্ঠান মনে করে বিদ্যালয়ের উন্নয়নে নিজেদেরকে পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি সম্পৃক্ত করেছেন । আর সে সাথে নিশ্চিত হচ্ছে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা।

ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ জানান, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার মান বাড়ানোর পাশাপাশি তাদের নিরাপত্তা এবং সুন্দর্য্যরে জন্য অনেক স্কুলে বাউন্ডারিসহ গেট নির্মাণ করা হয়েছে। যেকোন স্কুলের কাজ অবকাঠামো নির্মাণ সঠিকমান নিশ্চিত করা হয়। এছাড়া নদী ভাঙন এলাকার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ বিদ্যালয়গুলোর উন্নতির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
⇘সংবাদদাতা: সেবা ডেস্ক

Post a Comment

0Comments

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top