
বকশীগঞ্জ সংবাদদাতা : জামালপুরের বকশীগঞ্জে প্রতিষ্ঠান জাতীয়করনের আশ্বাস দিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছ থেকে প্রায় ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ওই বিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষক-কর্মচারী।
লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, আলীরপাড়া এমইউ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে সুনামের সাথে পরিচালিত হয়ে আসছে। কয়েক বছর আগে প্রধান শিক্ষক পদে মো. রফিকুল ইসলাম দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বিদ্যালয়ে পড়াশুনার মান নিম্নমুখী ও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটতে থাকে।
এইক সঙ্গে ওই প্রধান শিক্ষকের নিজস্ব কোচিং সেন্টারে ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তির জন্য চাপ প্রয়োগ করা সহ বিভিন্ন অভিযোগ করা হয়। তার বিরুদ্ধে ম্যানেজিং কমিটির সাথে সমন্বয় না করে স্বেচ্ছাচারী হয়ে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার অভিযোগও রয়েছে।
এরই মধ্যে প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম আলীরপাড়া এমইউ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় জাতীয়করনের আশ্বাস প্রদান করেন ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের। গত ২০ মার্চ ২০১৮ ইং তারিখে প্রতিষ্ঠান জাতীয়করনের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বিদ্যালয়ের ৮ জন সহকারী শিক্ষক ও ২ জন কর্মচারীর কাছ থেকে ১৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। কিন্তু বিদ্যালয়টি জাতীয়করন না হলে সহকারী শিক্ষক ও কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
ভুক্তভোগী শিক্ষক-কর্মচারীরা প্রধান শিক্ষকের নিকট তাদের টাকা ফেরত চাইলে প্রধান শিক্ষক উল্টো তাদের চাকুরীচ্যুত ও শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরন করা সহ বিভিন্ন হুমকী প্রদান করেন।
পরে গত ২৬.০৯.২০১৮ইং তারিখে শিক্ষক-কর্মচারীরা বিষয়টি ম্যানেজিং কমিটি ও বগারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে অবগত করলে তাদের কাছে জাতীয়করনের নামে শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি স্বীকার করেন প্রধান শিক্ষক। একই সঙ্গে প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম ও তার সহযোগী আমিনুল হক ১০.১০.২০১৮ ইং তারিখে মধ্যে হাতিয়ে নেয়া টাকা ফেরত দেয়ার ঘোষনা দেন। এরপর গত ১৩.১২.২০১৮ইং তারিখে ওই বিদ্যালয়ে এক বৈঠকে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আত্মসাতকৃত ১৪ লাখ ৯০ হাজার মধ্যে ৭ লাখ টাকা ফেরত দেন। বাকি ৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা এক সপ্তাহের মধ্যে ফেরত দেয়ার আশ্বাস দেন।
কিন্তু সময় পার হলেও বাকি টাকা ফেরত না দেয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষকরা ।
তারা অবিলম্বে ওই প্রধান শিক্ষক ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার , উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে আলীরপাড়া এমইউ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, আমি কোন শিক্ষকের কাছ থেকে টাকা নেয় নি এবং কাউকে টাকা ফেরতও দেয় নি।
বগারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম লিচু জানান, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি আমিও শুনেছি। তিনি কিছু টাকা ফেরত দিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেওয়ান মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পেয়েছি , তদন্ত করে শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
⇘সংবাদদাতা: বকশীগঞ্জ সংবাদদাতা
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।