
কাজিপুর প্রতিনিধি: এক শ্রেণির ব্যবসায়ী টাকার প্রলোভনে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে কৃষি জমির টপ সোয়েল (উপরিস্তরের উর্বর মাটি) কেটে ইটভাটায় ব্যবহার করছে। এতে করে ভাঙ্গন কবলিত কাজিপুরে খাদ্য সংকটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভুক্তভোগী কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে স্থানীয় কিছু মুনাফালোভী মাটি ব্যবসায়ী নগদ টাকায় এবছর প্রচুর মাটি কিনে নিচ্ছে।
বেপরোয়া মাটি কাটায় পাশের জমির কৃষকগণ নিজেদের জমি সমান্তরাল রাখতে অনেকটা বাধ্য হয়ে তারাও জমির টপ সোয়েল বিক্রি করছে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আবাদি জমি থেকে শক্তিশালি ড্রেজার ইঞ্জিন দিয়ে গভীর করে মাটি তোলারও হিড়িক পড়ে গেছে। প্রতিদিন বড় ট্রাক. মিনি ট্রাক ও ট্রলি করে কাজিপুরের ৪টি ইটাভাটায় যাচ্ছে এই মাটি। এর কিছুমাটি ঘরবাড়ি উঁচুকরণ কাজেও ব্যবহৃত হচ্ছে।
মঙ্গলবার সকালে সরেজমিন কাজিপুরের গান্ধাইল ইউনিয়নের খুকশিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ওই গ্রামের সোহরাব হোসেনের জমি থেকে বেকো মেশিন দিয়ে প্রায় ৩ ফিট গভির করে মাটি কাটা হচ্ছে। এর আশপাশের প্রায় ১৫-১৬ বিঘা জমি থেকে একই কায়দায় মাটি কর্তন করা হযেছে। এ বিষয়ে সোহরাব আলী জানান, ‘পাশের জমির মাটি বিক্রি করায় আমার জমি সমান্তরাল রাখতে অনেকটা বাধ্য হয়ে মাটি বিক্রি করেছি।’
ঐ এলাকার গভীর নলকূপের ম্যানেজার দুদু মিয়া জানান, ‘আমার স্কীমের আওতায় গতবছর বোরো মৌসুমে ১২০ বিঘা জমি ছিল। ক্রমাগত মাটি কেটে নেয়ায় জমির শ্রেণি পরিবর্তন হওয়ায় এবছর তা ৮০ বিঘায় নেমে এসেছে।
কাজিপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রেজাউল করিম জানান, ‘ফসল উৎপাদনের জন্য মাটির উপরিভাগের মোটামুটি ৮ ইঞ্চি পরিমান গভির উর্বর মাটি প্রয়োজন। এই স্তরের মাটিতে খাদ্য উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান বেশি থাকে। তাছাড়া এই স্তরে পরিবেশ বান্ধব কেঁচোসহ বিভিন্ন প্রকার কীট -পতঙ্গের বসবাস যা মাটিকে উর্বর রাখতে সহায়তা করে।’ বেপরোয়াভাবে অধিক পরিমাণে মাটিকাটার বিষয় সম্পর্কে তিনি জানান, ‘জমিগুলি থেকে প্রায় ৩-৪ ফুট পর্যন্ত গভির করে মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে। এতে করে কাজিপুরে একসময় খাদ্য ঘাটতি দেখা দেবে।’ এদিকে অন্যের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ জামির মালিকগণ টপ সোয়েল কাটা বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
⇘সংবাদদাতা: কাজিপুর প্রতিনিধি
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।