শান্ত গার্মেন্ট শিল্পকে অশান্ত করার পায়তারা

S M Ashraful Azom
0
শান্ত গার্মেন্ট শিল্পকে অশান্ত করার পায়তারা
সেবা ডেস্ক: দেশের রফতানি আয়ের অন্যতম প্রধান খাত গার্মেন্ট শিল্প। বাংলাদেশের গার্মেন্ট পণ্যের চাহিদাও বিশ্বব্যাপী প্রচুর। এ শিল্প নারীদের স্বাবলম্বী করতেও অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে। এই শিল্পে কর্মরত জনগোষ্ঠীর প্রায় ৮০ শতাংশই নারী।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে গার্মেন্ট শিল্পের বিবাদমান সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। ধারাবাহিকভাবে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাদি বৃদ্ধি করা হয়। মালিক-শ্রমিকদের মাঝে হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখারও নির্দেশনা দেয়া হয়। ফলে এ শিল্পে প্রায় সবসময়ই বিরাজ করেছে স্থিতিশীলতা।

গত বছরের নভেম্বরে নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে সরকার। এটি মেনেও নেয় সাধারণ শ্রমিকেরা। শ্রমিকবান্ধব সরকারের প্রতি পূর্ণ আস্থা রেখে তারা আরো বেশি কর্মতৎপর হয়ে উঠে। তবে বসে থাকেনি কয়েকটি স্বার্থান্বেষী মহল। নির্বাচন শেষে দেশ যখন উন্নয়নের মহাসড়ক ধরে আরো তুমুল গতিতে এগোচ্ছে, ঠিক তখনই বিভিন্ন ভুঁইফোড়, তথাকথিত শ্রমিক সংগঠনের ব্যানারে তারা বিভিন্ন অবাস্তব দাবি-দাওয়া নিয়ে হাজির হয় রাজপথে। যদিও তাদের সাথে কোন প্রকৃত শ্রমিক খুঁজে পাওয়া যায়নি।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও পোশাক খাত সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় নির্বাচনের সময় সরকারকে বিপাকে ফেলতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অরাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা পোশাক অধ্যুষিত এলাকাগুলোয় আসতে শুরু করে। তারা বিভিন্ন কারখানায় কাজ নেয়। তারাই কারখানার ভেতর থেকে নতুন মজুরি বৈষম্যের উস্কানি দিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা চালায়। সরকার পোশাক খাতের প্রতিনিধিকে বাণিজ্যমন্ত্রী বানিয়েছে। তিনি এরই মধ্যে এ সঙ্কট মোকাবেলায় বিজিএমইএ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে সরকার-মালিক-শ্রমিক নেতা এই ত্রিপক্ষীয় ১২ সদস্যের কমিটি গঠন করেন।
এদিকে টানা পঞ্চম দিনের মতো বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকার শেওড়াপাড়ার বেশ কয়েকটি গার্মেন্টসের শ্রমিকরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে শেওড়াপাড়ায় আলফা ইউনিট ১ ও ২ লিমিটেড এর পোশাক শ্রমিকরা সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। সেখানকার কয়েকটি গার্মেন্টস থেকে শ্রমিকরা নেমে রাস্তায় অবস্থায় নেন এবং যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। একইভাবে কয়েকদিনের ধারাবাহিকতায় বকেয়া বেতন পরিশোধ ও মজুরি বাড়ানোসহ বিভিন্ন দাবি আদায়ের অংশ হিসেবে রাজধানীর কালশীতে সড়ক অবরোধ করে স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের শ্রমিকরা। পরে মালিকপক্ষের আশ্বাস ও পুলিশের অনুরোধে উঠে যান শ্রমিকরা। মিরপুর মডেল থানার ওসি দাদন ফকির বলেন, আমরা মালিকপক্ষকে ডেকে সড়ক থেকে শ্রমিকদের সরিয়ে নিতে বলেছি। তাদেরকে বলা হয়েছে, বিক্ষোভ ও আন্দোলন যদি করতেই হয় তাহলে কারখানা ও প্রতিষ্ঠানের ভেতরে করতে হবে। জনসাধারণের চলাচলে বাধা, জনশৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তায় বাধা দেয়া যাবে না। শেওড়াপাড়ায়

এদিকে বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবিতে টানা পঞ্চম দিন বৃহস্পতিবারও আশুলিয়ায় পোশাক শ্রমিকদের অসন্তোষ অব্যাহত থাকে। তবে, এদিন সাভারের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে বিভিন্ন উপায়ে বেশকিছু গুজব ছড়িয়ে দিয়ে শ্রমিকদের উত্তেজিত করার চেষ্টা করা হয়।

এদিন সকালে আশুলিয়ার কয়েকটি পোশাক কারখানায় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সংর্ঘষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় কয়েক রাউন্ড টিয়ার সেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। এতে আহত হয় অন্তত ৩০ শ্রমিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিভিন্ন পোশাক কারখানার সামনে টহল দেয় বিজিবি। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মাঠে রয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল আটটার দিকে আব্দুল্লাহপুর-ইপিজেড সড়কের বেরণ এলাকায় ও বিশমাইল-জিরাবো সড়কের কাঠগড়া এলাকায় অবস্থিত কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা কারখানার সামনে বিক্ষোভ করতে থাকে। পরে পুলিশ এসে বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেয়। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অনেক কারখানা একদিনের জন্য সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।
⇘সংবাদদাতা: সেবা ডেস্ক

Post a Comment

0Comments

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top