
আনসার আলী, মধুপুর প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের মধুপুরে নার্সারী বাগান করে ভাগ্য বদল করেছেন চায়না বেগম। এক সময় তার দিনই চলতো না। এখন চায়না বেগমের জীবন যাপন অনেকের কাছে ঈর্ষণীয়। তার বাড়ী মধুপুর উপজেলার রানিয়াদ পশ্চিম পাড়া গ্রামে। স্বামী-স্ত্রী, এক মেয়ে আর শশুর-শাশুড়ী নিয়ে সাচ্ছন্দেই দিন কাটছে তার। অনেক ভালো আছেন তিনি।
চায়না বেগম জানান, নার্সারী করে স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে তাদের পাঁচ সদস্যের পরিবারে। কয়েক বছর আগেও স্বামী আনোয়ার হোসেন অন্যের নার্সারীতে দিনমজুরের কাজ করতো। তাতে যা আয় হতো তা দিয়ে সংসার চলতো না। অভাব অনটন লেগেই থাকতো। সংসার চালানো তার পক্ষে খুবই কষ্টের ব্যাপার ছিল। আনোয়ার হোসেনের পক্ষে সংসারের ব্যয়-ভারসহ একমাত্র মেয়েকে শিক্ষিত করে তোলার স্বপ্নে বড় বাঁধা ছিল আর্থিক দৈন্যতা। কিভাবে সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরে আসবে এ নিয়ে দুশ্চিন্তা ছিল আনোয়ার-চায়না দম্পতির। তবে স্বামী-স্ত্রী মিলে নিজের পায়ে দাড়ানোর প্রবল ইচ্ছা ও চেষ্টা ছিল তাদের। চেষ্টা থাকা সত্ত্বেও অর্থের অভাবে কোন কিছু করতে না পারার সময়টায় বাংলা-জার্মান সম্প্রীতি (বিজিএস), মাইক্রোফাইন্যান্স প্রোগ্রাম মধুপুর শাখার ক্রেডিট অফিসার আজাদুল ইসলাম তাদের পাশে এসে দাঁড়ান। ২০১৭ সালের ওই সময় বিজিএস’র সহায়তায় চায়না বেগম হিমছড়ি সমিতির সদস্য হয়ে ৩০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করে। শুরু করেন নিজের মতো কিছু করার। স্বল্প পরিসরে নিজের ভিটা জমিতে নার্সারী বাগান শুরু করেন। এ নার্সারী থেকেই তার সফলতা শুরু।
বছর শেষে মোটামুটি ভালো আয় হয় নার্সারী থেকে। তাতে চায়না বেগম বেজায় খুশি। পরবর্তীতে ২য় দফায় এক লক্ষ টাকা ঋণ গ্রহণ করে নার্সারী বাগান আরো সম্প্রসারিত করেন তিনি। বর্তমানে ওই দম্পতি ১.৭ একর জমিতে নার্সারী চাষ করছেন। এখন তারা ভালোভাবে সংসার চালিয়ে তাদের মেয়েকে মধুপুরের প্রাইভেট স্কুলে লেখাপড়া করাচ্ছেন। সাহস আর ইচ্ছা শক্তির বলে দারিদ্রকে জয় করে সংসারে এনেছেন স্বচ্ছলতা। চায়না বেগম আরো জানান, অভাবের তাড়নায় তাদের ভালো মতো দু-বেলা খাবার জোটেনি। খাওয়া তাদের জন্য খুবই কষ্টের ছিল। আর্থিক ঋণ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে বাংলা-জার্মান সম্প্রীতি (বিজিএস) সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সাহস যোগিয়েছে।
স্বামী আনোয়ার হোসেন জানান, এক সময়কার টানাটানির সংসারে স্ত্রী ও তার যৌথ চেষ্টার ফলে স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে। এখন তাদের নার্সারীতে ৩ জন নারীসহ ৪ জন দিন মজুর নিয়মিত কাজ করে। এখানে তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। তাদের মতে, (আনোয়ার-চায়নার) তাদের বাৎসরিক আয় প্রায় আড়াই লক্ষাধিক টাকা।
⇘সংবাদদাতা: আনসার আলী

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।