
শামীম তালুকদার, নিজস্ব প্রতিবেদক: ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস । বঙ্গবন্ধুর ৯৯তম জন্মবার্ষিকী। দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দিনটি উদযাপনের নির্দেশনা মোতাবেক সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দিবসটি পালিত হচ্ছে, বিদ্যালয় ও কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে এবার বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হচ্ছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী এবার বিদ্যালয় পর্যায়ে চিত্রাঙ্কন ও শিশু কণ্ঠে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃতি, রচনা পাঠ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ দোয়া-মোনাজাতের আয়োজন করা হচ্ছে।অন্যদিকে কলেজ পর্যায়ে রচনা, আবৃতি, আলোকচিত্র ও বির্তক প্রতিযোগিতা, প্রবন্ধ পাঠ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কেক কাটা,দোয়া মাহফিলসহ বিভিন্ন আয়োজনে পালিত হচ্ছে।
১৭ মার্চ ২০১৯, রবিবার, স্বাধীনতার মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস। বঙ্গবন্ধু ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ তদানীন্তন ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধুর বাবার নাম শেখ লুৎফর রহমান এবং মাতার নাম সায়েরা খাতুন। পরিবারের চার কন্যা এবং দুই পুত্রের সংসারে শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন তৃতীয় সন্তান। টুঙ্গীপাড়ার অজপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করা ‘খোকা’ নামের সেই শিশুটি পরবর্তীতে হয়ে উঠেন নির্যাতিত-নিপীড়িত বাঙালি জাতির মুক্তির দিশারী। শিশু/কিশোর বয়সেই তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। গোপালগঞ্জের মিশন স্কুলে অষ্টম শ্রেণীতে অধ্যায়নকালে তৎকালীন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে যোগদানের কারণে শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমবারের মতো গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করেন। এরপর শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর আজীবন সংগ্রামী জীবনের পথযাত্রা।
বঙ্গবন্ধু তাঁর সহকর্মীদের নিয়ে ১৯৪৮ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এবং পরবর্তীতে ১৯৪৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গঠন করেন। ’৪৭-এ দেশবিভাগ , ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান পেরিয়ে ’৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে পরিণত হন। বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের প্রতিটি অধ্যায়ে বঙ্গবন্ধুর নাম চির ভাস্বর হয়ে আছে। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন রেসর্কোর্স ময়দানে তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতার কথা ঘোষণা করেন
‘‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।”
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়ার পূর্বে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। বাংলা, বাঙালি ও বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক কালজয়ী নাম। আজ সেই শিশু মুজিব এর অবস্থান বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু এক অবিচ্ছেদ্য নাম এবং বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু ও বাঙালি জাতির অবিভাজ্য সম্পর্কের কোন পরিসমাপ্তি নেই। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশের অবস্থান এবং বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ বিশ্বসভায় বাঙালি জাতির সগর্ব উপস্থিতি স্মরণ করিয়ে দেয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে। বাঙালি জাতি শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও ভালবাসায় বাংলাদেশের ইতিহাস বিনির্মাণের কালজয়ী এ সিংহ পুরুষকে চিরকাল স্মরণ করবে।
কবির ভাষায়
‘‘যতদিন রবে পদ্মা-যমুনাআজকের শিশু আগামী জাতির কর্ণধার।
গৌরী-মেঘনা বহমান
ততদিন রবে কীর্তি তোমার
শেখ মুজিবুর রহমান।’’
তাই আমাদের উচিত প্রত্যেকটি শিশুকে ভালোবাসার চাদরে ঢেকে রাখা এবং আগামী জাতির কর্ণধার হিসাবে গড়ে তুলতে তাদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করা।
⇘সংবাদদাতা: শামীম তালুকদার
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।