
রফিকুল আলম, ধুনট প্রতিনিধি: নিজের কাজ নিজে করি, সুখি সুন্দর সমাজ গড়ি! এমন মানসিকতা নিয়ে দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে সরকারি সড়কের পাশে ব্যক্তিগত টাকায় ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে। প্রায় ৭০ ফুট দীর্ঘ ড্রেনটি নির্মিত হয়েছে বগুড়ার ধুনট উপজেলার মথুরাপুর বাজার-মহিশুরা মাজার পাকা সড়কের ধেরুয়াহাটি গ্রামে। এই ড্রেন নির্মান কাজে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা হায়দার আলম, মাহফুজার রহমান, উজ্জল শেখ ও সোলায়মান আলী। বৃহস্পতিবার ড্রেন নির্মান কাজটি শেষ হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মথুরাপুর বাজার হতে মহিশুরা মাজার পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার পাকা সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে ধুনট-কাজিপুর উপজেলার লক্ষাধিক মানুষকে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এলাকাবাসির দাবীর প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে সম্প্রতি ওই সড়কটির সংস্কার কাজ করা হয়েছে। কিন্তু সংস্কারের পরই বৃষ্টির পানি গড়িয়ে ধেরুয়াহাটি গ্রামে সড়কের কিছু অংশে ভাঙন দেখা দেয়।
সরেজমিন দেখা যায়, পাকা সড়কটি ধেরুয়াহাটি গ্রামের মাঝ দিয়ে নির্মিত হয়েছে। ওই গ্রামের ভেতর সড়কের দুই পাশের বসতভিটা গুলো উঁচু। সামান্য বৃষ্টি হলেই বাড়ির পানি গড়িয়ে পাকা সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সড়কে ভাঙন দেখা দেয়। এই সড়কটি রক্ষার জন্য গ্রামবাসি উপজেলা প্রশাসনের নিকট ড্রেন নির্মানের দাবী তোলেন। কিন্ত প্রশাসনের কোন সহযোগীতা তারা পায়নি।
অবশেষে ধেরুয়াহাটি গ্রামের হায়দার আলম সড়কের পাশে ড্রেন নির্মান কাজের উদ্যোগ নেন। এ কাজে আর্থিকভাবে তাকে সহযোগীতা করেছেন মাহফুজার রহমান, উজ্জল শেখ ও সোলায়মান আলী। তারা এই কাজের মাধ্যমে সরকারি পাকা সড়কসহ এলাকার লক্ষাধিক মানুষকে দূর্ভোগের হাত থেকে রক্ষা করেছেন।
ড্রেন নির্মান কাজের প্রধান উদ্যোক্তা হায়দার আলম বলেন, সেবার ব্রত নিয়ে শৈশব থেকেই বেড়ে উঠেছি। জনগুরুত্বপূর্ন এই সড়কটি রক্ষায় ড্রেন নির্মানের জন্য উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরে ঘুরে কোন কাজ হয়নি। ফলে নিজের সামান্য আয় থেকেই ড্রেন নির্মান কাজ শুরু করি। আমার এই কাজ দেখে সহযোগীতার হাত বাড়িয়েছেন এলাকার অন্য তিন ব্যক্তি। টেকসই এই ড্রেন নির্মানে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা।
ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিয়া সুলতানা বলেন, এটা এলাকাবাসীর একটি মহতি উদ্যোগ। তারা নিজেদের কাজ নিজেরা করেছেন। নিজস্ব কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করে সমস্যা সমাধানের একটি অনন্য উদাহরণ ড্রেন নির্মানের এই কাজটি। ভবিষ্যতে এভাবে গ্রামের ছোটখাট সমস্যা নিজেদের স্বেচ্ছাশ্রমে সমাধান করার পরামর্শও দেন তিনি।
⇘সংবাদদাতা: রফিকুল আলম

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।