ধুনটে এক মন ধানের দামে একজন দিনমজুর

S M Ashraful Azom
0
ধুনটে এক মন ধানের দামে একজন দিনমজুর
রফিকুল আলম, ধুনট প্রতিনিধি: বগুড়ার ধুনট উপজেলার প্রতিটি গ্রামে বোরো ধান কাটা মাড়াই কজে ব্যাস্ত সময় পার করছে কৃষান কৃষানিরা। এ উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে এখানকার ধানের কদর রয়েছে প্রচুর। অনুকূল আবহাওয়া ও উর্বর মাটি হওয়াতে প্রচুর ধান জন্মেছে এ উপজেলায়।

কিন্তু ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টি আর ঝড়ো হাওয়ায় ধান গাছ মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। কিছু কিছু নিচু জমির ধান গাছ পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বাতাসে পড়ে যাওয়া ধান পচে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেতে অধিকাংশ কৃষক ধান কাটা শুরু করেছে।

এ কারণে শ্রমিকের মুজুরি বেড়ে গেছে। এছাড়া উপজেলার শ্রমিকদের বড় একটি অংশ দেশের বিভিন্ন স্থানে কাজের সন্ধানে চলে গেছে। ফলে শ্রমিক সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। এক জন শ্রমিকের মজুরি এক মণ ধানের বর্তমান বাজার মূল্যের সমপরিমান। এতে করে দরিদ্র জনগোষ্টির চাষিরা বিপাকে পড়েছেন। যাদের কিনা ধান বিক্রয় করে শ্রমিকের মুজুরি পরিশোধ করতে হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বোরো ধান চাষে বীজ, সার, কীটনাশক, চারা লাগানো, জমি পরিষ্কার করা, ধানকাটা শ্রমিক খরচসহ প্রতি মণ ধানে উৎপাদন খরচ পড়েছে কমপক্ষে ৯শ থেকে এক হাজার টাকা। বর্তমানে হাট-বাজারগুলোতে প্রকারভেদে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৬৫০ টাকা। আর ধান কাটা শ্রমিককে দিতে হচ্ছে ৫০০ টাকা। এতে করে প্রতি মণ ধানের মূল্যে মিলছে একজন শ্রমিক।

উপজেলার আনারপুর গ্রামের কৃষক আজাদ আলী বলেন, এ বছর চার বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছিলাম। ফলনও ভালো হয়েছিল। শ্রমিক নিয়ে কয়েকদিন ধরে ধান কাটা শুরু করেছিলাম। ফনীর প্রভাবে বৃষ্টি হওয়ায় মাঠে কেটে রাখা ধান ঘরে তুলে আনতে পারিনি। ফলে কেটে রাখা ধান মাঠে পড়েই নষ্ট হচ্ছে। তাই অতিরিক্ত দামে শ্রমিক নিয়ে ধান ঘরে তুলছি।

পাঁচথুপি গ্রামের কৃষক বছির উদ্দিন জানান, মাঠে ধান পেকে গেছে। যেকোনো সময় ঝড়-বৃষ্টি আসতে পারে। তাই বাধ্য হয়ে বেশি দামেরন শ্রমিক দিয়ে ধান কাটাতে হচ্ছে। চালাপাড়া গ্রামের কৃষক এলাহী বক্স জানান, মাঠে ধান ছাড়া অন্য কিছু আবাদ করা যায় না। তাই লোকসান হলেও ধানের আবাদ করতেই হয়।

ধুনট উপজেলার উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সোবাহান বলেন, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ১৬ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের বোরো ধানের চাষ হয়েছে। ফণীর আঘাতে ২০০ হেক্টর জমির ধান ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া আউশ বীজতলা, পাট, মরিচ ও শাকসবজিসহ ৫০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এতে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।


⇘সংবাদদাতা: রফিকুল আলম
ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top