
সেবা ডেস্ক: কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের অনেক জনপ্রতিনিধিই ইয়াবা কারবারের সাথে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রকৃত পক্ষে ইয়াবা কারবারিদের ব্যাপারে উখিয়া থানা পুলিশের এক ধরণের নিষ্ক্রিয়তার কারণেই সীমান্তবর্তী পালংখালী ইউনিয়নের লোকজন এ কারবারে ফ্রিস্টাইলে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
মূলত পালংখালী ইউনিয়নে কে ইয়াবা কারবারে জড়িত নেই এবং কে জড়িত তা বলা মুশকিল হয়ে পড়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, পালংখালী ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের নির্বাচিত ৯ জন ইউপি মেম্বারের মধ্যে ৫ জনই হচ্ছেন ইয়াবা ডন। অপর ৪ জনের মধ্যে মাত্র একজন ইউপি মেম্বারের ব্যাপারে ইয়াবা কারবারের নিশ্চিত তথ্য মিলছে না। অপর তিনজনের ব্যাপারেও ইয়াবা কারবারের অভিযোগ রয়েছে। বাস্তবে ইউনিয়নটির ৯ জন ইউপি মেম্বারের মধ্যে ৮ জনের বিরুদ্ধেই রয়েছে ইয়াবা কারবারের গুরুতর অভিযোগ।
অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, ইয়াবা দমন অভিয়ান টেকনাফ সীমান্তে জোরদার করার পর কারবারিরা সবাই ঝাঁপিয়ে পড়ে পালংখালী সীমান্তে। কিন্তু পালংখালী সীমান্তে অভিযান কোনো সময়েই জোরদার না করার কারণে কারবার চলচে ফ্রিস্টাইলে।
তবে পুলিশ জানিয়েছে, পালংখালীতে অভিযান জোরদার করা হয়েছিল। এমনকি ইয়াবা কারবারে জড়িত এক সাথে দুই ভ্রাতাকে ক্রসও দেওয়া হয়েছে। তবুও কিন্তু ইয়াবা পাচার হ্রাস পাচ্ছে না।
ইউনিয়নটির ৯ জন ইউপি মেম্বারের মধ্যে যে ৫ জন বড় মাপের ইয়াবা কারবারে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে তাদের মধ্যে বখতিয়ার মেম্বার নামের একজন ইয়াবা ডন বর্তমানে ইয়াবা মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাভোগ করছেন। অপর ইয়াবা ডন যুবদল নেতা জয়নাল আবেদীন মেম্বার প্রকাশ ইয়াবা জয়নাল গত দশ বছর ধরেই একদম ফ্রিস্টাইলে ইয়াবা কারবার চালিয়ে আসছেন। ইয়াবা জয়নাল এখনো বুক ফুলিয়ে এলাকায় সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে ঘুরে ফিরছেন।
গত কয়েকদিন ধরে গণমাধ্যমে ইয়াবা জয়নালের ইয়াবা কাহিনী ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হবার কারণে ইয়াবা জয়নাল এক প্রকার গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন। রাতের বেলায় নিরাপদে রাত কাটানোর জন্য ইয়াবা জয়নাল রোহিঙ্গা শিবিরের ইয়াবা ডেরায় সশস্ত্র পাহারায় থাকেন। আর দিনের বেলায় সশস্ত্র পাহারা নিয়ে সতর্কতার সাথে এলাকায় ঘুরে বেড়ান।
ইয়াবা ডন অপর তিনজন ইউপি মেম্বারও এলাকায় রয়েছেন নিরাপদে। তবে গত তিনদিন ধরে ইয়াবা জয়নালকে নিয়ে ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশের পর এই তিন ইয়াবা ডনও বর্তমানে আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটিয়ে যাচ্ছেন। উখিয়া থানা পুলিশ সীমান্তের এসব ইয়াবা কারবারিদের ব্যাপারে সিরিয়াস হলে আরো অনেক আগেই ইয়াবার প্রবাহ কমে যেতে বরে এলাকাবাসী মনে করেন।
তবে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল খায়ের ইয়াবা কারবারিদের ব্যাপারে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি গত প্রায় তিন বছর ধরে উখিয়া থানায় কর্মরত রয়েছি। আমি কোনো সময়েই ইয়াবার ব্যাপারে ছাড় দেইনি। অনেক ইয়াবা কারবারিকে আমি সাইজ করেছি দাবি উখিয়া থানার ওসির।
এলাকাবাসী বলেছেন, নাফ নদী তীরের ইউনিয়ন পালংখালী হচ্ছে টেকনাফের পরবর্তী ইয়াবা চালানের গেইটওয়ে। এই ইউনিয়নের ইয়াবাকারবারিদের ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হলে মিয়ানমারের ইয়াবার চালান পাচার হ্রাস পেত।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।