
সেবা ডেস্ক: শুক্রবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আন্তকলেজ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা-২০১৯ এর পুরস্কার বিতরণ এবং আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ২০১৬ ও ২০১৭ এর কৃতী ক্রীড়াবিদদের ব্লেজার ও সনদ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদানকালে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, লেখাপড়া শেষে চাকরি খোঁজ করলে হবে না, তোমাদের উদ্যোক্তা হতে হবে। তোমরা অন্যের জন্য কাজ তৈরি করে দেবে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি এ কথা বলেন।
ডা. দীপু মনি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান সুযোগ্য নেতৃত্বে এটি অনেক অগ্রসর হয়েছে। অনেক সমস্যা থেকে উতরে উঠেছে এ বৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয়টি। বাংলাদেশ তো বটেই বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এ বিশ্ববিদ্যালয়টি এখন শিক্ষার মানের দিকে নজর দিচ্ছে। ’
শিক্ষার মানোন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মান নিশ্চিত করতে এখন কাজ করতে হবে। শিক্ষার্থীরা যেন শুধু ডিগ্রির জন্য কলেজে না আসে। তারা যেন সত্যিকার অর্থে শিক্ষাগ্রহণ করে সুনাগরিক হতে পারে, তারা যেন স্বাবলম্বী হয়। যোগ্য নেতৃত্ব যেন উঠে আসে সে শিক্ষা দিতে হবে শিক্ষার্থীদের।
ডা. দীপু মনি বলেন, শিক্ষার মান আমরা টের পাই যখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ দেই। আমি চাঁদপুরে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। তখন শিক্ষক নিয়োগের সময় দেখেছি সনদে খুব ভালো ফলাফল। কিন্তু প্রশ্ন করলে তারা পারছেন না। তাই আমি বলবো শুধু জিপিএ এবং ভালো ফলাফল নয়, সত্যিকার অর্থে শিক্ষাগ্রহণ করতে হবে। যোগ্য, দক্ষ এবং সুনাগরিক হিসেবে তৈরি হতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সারা দেশে যে ২৮ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে তাদের গুণগত শিক্ষা দেয়ার জন্য বর্তমান যে নেতৃত্ব আছেন তারা যথেষ্ট বলে আমি মনে করি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অথিতির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষা নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করেন। কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হতে পারে সে সমালোচনার জবাব। কারণ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২৮ লাখ শিক্ষার্থী, যা বিশ্বের অনেক দেশের জনসংখ্যার চেয়ে বেশি। এটিকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। শিক্ষা মান উন্নয়ন করে গতিশীল নেতৃত্ব তৈরি করতে হবে।
তিনি বলেন, আমি দেখেছি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট সবচেয়ে বেশি ভিজিটেড। এটির আয় দিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তির স্কিম চালু করা যেতে পারে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ।
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শুধু বোর্ড বাজারে অবস্থিত এক টুকরো ভূখণ্ড নয়। এটি বাংলাদেশের মানচিত্র। দেশব্যাপী এর পরিসর। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬ বছরের ইতিহাসে আন্তকলেজ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আর কখনো হয়নি। এটিই প্রথম। শুধু এটি নয়, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম সমাবর্তন আমরা করেছি। প্রথম শিক্ষা সমাবেশ হয়েছে। কলেজ র্যাংকিং করেছি। এছাড়া বেসরকারি কলেজের মধ্যে মডেল কলেজ তৈরির পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতিবছর দুইটি করে সিনেট সভা করছি। এরমধ্যে একটি সিনেট সভা করছি শিক্ষার মান উন্নয়ন নিয়ে। কীভাবে কলেজগুলোর শিক্ষার মান উন্নয়ন করা যায় তা নিয়ে বিশেষ সিনেট অধিবেশন করে আসছি।
উপাচার্য আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শুধু যেন পাঠশালা না হয়, এটি যেন জ্ঞান, বিজ্ঞানে আদর্শ মানব সন্তান তৈরির উপযুক্ত স্থান হয়, সেটি নিশ্চিত করার জন্যই আমরা কাজ করছি। আগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে বলা হতো বোর্ড অফিস। এখন এটিকে সবাই বিশ্ববিদ্যালয় বলে। এভাবে আমরা সামনে আরো এগিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর।
স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূরসহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানে শেষে আন্তকলেজ প্রতিযোগিতায় চূড়ান্ত পর্বে বিজয়ীদের মধ্যে সনদ, ব্লেজার ও পুরস্কার বিতরণ করেন শিক্ষামন্ত্রী। এ পর্বে ছেলে-মেয়ে উভয় গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে খুলনা ব্রজলাল (বিএল) কলেজ। ছেলেদের গ্রুপে রানার্স আপ হয়েছে খুলনার খান জাহান আলী ডিগ্রি কলেজ। আর মেয়েদের গ্রুপে সরকারি সিলেট মহিলা কলেজ রানার্স আপ হয়েছে।
⇘সংবাদদাতা: সেবা ডেস্ক

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।