
রফিকুল আলম, ধুনট প্রতিনিধি: দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। কিন্ত কর্মসৃজন শ্রমিকদের মনে নেই আনন্দ। শরীরের ঘাম ঝরিয়ে কাজ করেছে। কিন্তু ভাগ্যে জুটছে না মজুরীর টাকা। তাই অভাবের সংসারে নেমে এসেছে হতাশা। ঈদে নতুন পোশাক ও ভালো খাবারের কথাই তারা চিন্তাই করতে পারছে না। ফিকে হয়ে গেছে শ্রমিকদের ঈদের আনন্দ। বগুড়ার ধুনট উপজেলায় ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পের শ্রমিকদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় ৫মে থেকে অতিদরিদ্রদের জন্য ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়েছে। এই প্রকল্পের কাজে এক হাজার ৪৬১জন শ্রমিক (নারী-পুরুষ) নিয়োজিত রয়েছে। একজন শ্রমিক দৈনিক কাজ করে ২০০ টাকা করে মজুরী পাওয়ার কথা। কিন্ত ২০ দিন ধরে কাজ করেও এসব শ্রমিকের ভাগ্যে মজুরী মিলছে না।
প্রতিজন শ্রমিক ২০দিন কাজ করে ৪ হাজার টাকা করে পাওয়ার কথা ছিল। ঈদের আগে এই টাকার উপর ভরসা করে শ্রমিকদের কেনাকাটার পরিকল্পনা ছিল। কিন্ত মজুরী না পাওয়ায় শ্রমিকদের ঈদ উপলক্ষে নতুন পোশাক কেনার সেই আশা হতাশার কফিনে ঢাঁকা পড়েছে।
এর কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, ৪০দিনের কর্মসৃজন প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। তাঁর স্বাক্ষরে ব্যাংক থেকে শ্রমিকদের মজুরীর টাকা ছাড় হয়। কিন্ত ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বৈদেশিক প্রশিক্ষনের জন্য অষ্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছেন। তিনি ১৯ মে উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভ‚মি) দায়িত্ব দিয়ে দেশের বাইরে গেছেন। তবে সহকারী কমিশনারকে (ভ‚মি) সময়মতো আর্থিক লেনদেনের ক্ষমতা অর্পন করা হয়নি। ফলে স্বাক্ষরের অভাবে ব্যাংক থেকে শ্রমিকদের মজুরীর টাকা ছাড় করা সম্ভব হয়নি।
পুকুরিয়া গ্রামের শ্রমিক সর্দার হায়দার আলী জানান, এ প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকেরা দৈনিক মজুরীর টাকায় সংসারের খরচ নির্বাহ করে। কিন্ত ২০দিন ধরে কাজ করে একদিনের মজুরীর টাকাও ভাগ্যে জোটেনি। শ্রমিকেরা অন্যের নিকট থেকে ধারদেনা করে সংসার চালিয়েছে। মজুরীর টাকা পেলে সেই ধার পরিশোধ করবে। কিন্ত তা আর হলো না। এছাড়া ঈদ উপলক্ষে কেনাকাটার করার মতো সামর্থ্য কোন শ্রমিকের নেই।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আব্দুল আলিম বলেন, গত ২২ মে শ্রমিকদের মজুরীর টাকার চেক হাতে পেয়েছি। কিন্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) স্বাক্ষর ছাড়া ব্যাংক থেকে টাকা ছাড় করা সম্ভব না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) জিনাত রেহানা জানান, বুধবার সন্ধ্যায় তাকে আর্থিক লেনদেনের ক্ষমতা অর্পন করেছেন জেলা প্রশাসন। কিন্তু শ্রমিকেরা বিল-ভাউচার জমা না দেয়ায় তাদের টাকা ছাড় করা সম্ভব হয়নি। তারপরও শ্রমিকদের মজুরির টাকা প্রদানের বিষয়টি প্রক্রিয়াধিন রয়েছে।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।