
সেবা ডেস্ক: বাচ্চার বাবার নাম অজ্ঞাত এবং মা পাগলি হওয়ার কারনে হাসপাতালের দাপ্তরিক কাগজ পত্রে বাচ্চার
অভিভাবক বা নিকটাত্মীয়ের নামের ঘরে লেখা হয়েছে এস আই আতিকুর রহমান, শাহজাহানপুর থানা, ডিএমপি, ঢাকা।
ঘটনাটি ঢাকা শাহাজাহনপুর থানার এক এসআই তার ফেসবুক ওয়ালে তুলে ধরেছেন, নিচে হুবহু দেওয়া হলো:
আজ ডিউটি করাকালীন হঠাৎ ওয়ারলেসে নির্দেশনা পেলাম শাহজানপুরস্থ গ্রীন লাইন বাস কাউন্টারের পাশের গলিতে যেতে। দ্রুত ঘটানাস্থলে পৌছে দেখতে পেলাম সরু গলির পাশে ছোট একটি ময়লা এবং বালির স্তুপের পাশে একটি পাগলি বাচ্চা প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করছে। আমি এবং সঙীর ফোর্স সহ সেখানে পৌছার মিনিট দুয়েকের মধ্যেই বাচ্চাটি মাতৃগর্ভ থেকে বেরিয়ে এসে কোমর থেকে নিচ অংশটুকু বালির উপর এবং মাথার দিকটা ময়লার উপর পড়লো এবং পিঠসহ প্রায় সারা গায়েই বালি লেগে লেপ্টে যাচ্ছিলো। অনেক জনতা আগে থেকেই সেখানে জমে গিয়েছিল এবং প্রায় সবাই এই দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করতে ব্যস্ত অথচ কেওই সহযোগীতার জন্য এগিয়ে আসতেছিল না। আমি উক্ত সমবেত জনতা থেকে একজন মহিলাকে দ্রুত সহায়তা করার জন্য জোরালো অনুরোধ করলে তিনি খুব দ্রুত এগিয়ে আসেন সহায়তার জন্য। আমি তাকে আমার পুলিশের গাড়িতে থাকা তোয়ালেটা এগিয়ে দিয়ে সদ্য ভূমিষ্ঠ ছেলে শিশুটিকে পেঁচিয়ে বালি থেকে রক্ষার নির্দেশনা দিলাম এবং পাশে পরে থাকা প্লাস্টিকের বস্তার সুতা সহযোগে নিজের হাতে বাচ্চাটির নাভি বেধে দিলাম।
এবং উক্ত মহিলাকে সাথে নিয়ে বাচ্চাটির গা মুছে দিয়ে নিরাপদ করলাম। পাশেই অজ্ঞান অবস্থায় থাকা ভবঘুরে পাগলি মার গা থেকে ব্লিডিং হচ্ছিল। বাচ্চার সুরক্ষা নিশ্চিত করার পর আশেপাশের দোকান থেকে পরিত্যক্ত কার্টুন সংগ্রহ করে মাকে একটু ভালো যায়গায় আপাতত রাখার ব্যবস্থা করলাম। তারপর মা ও শিশুকে হাসপাতালে নেয়ার জন্য পরিবহনের ব্যবস্থা করতে হবে। সরু গলি হওয়ায় আমার পুলিশের গাড়িটি গলিতে ঢুকতে পারছিল না। তাই রিক্সা ভ্যানের জন্য তৎপর হলাম। সদ্য বাচ্চা প্রসবের জন্য রক্ত লেগে থাকায় একটা ভ্যান বা রিক্সা উক্ত মা এবং শিশুটিকে হাসপাতালে পৌঁছাতে রাজি হচ্ছিল না। উপায় না পেয়ে সঙীয় ফোর্সের সহায়তায় প্রায় বল প্রয়োগ করেই একটা ভ্যান যোগার করে আরও দুজন মহিলার সহায়তায় উক্ত অজ্ঞান পাগলি মাকে ভ্যান যোগে এবং আমি সদ্য ভূমিষ্ঠ ছেলে শিশুটিকে কোলে নিয়ে মুগদা মেডিকেল হাসপাতালে পৌছালাম। হাসপাতালে পৌঁছে মাকে গাইনী বিভাগের ৪৬ নম্বর বেডে এবং বাচ্চাটিকে শিশু ওয়ার্ডের ১ নম্বর বেডে ভর্তি করালাম।
বাচ্চার বাবার নাম অজ্ঞাত এবং মা পাগলি হওয়ার কারনে হাসপাতালের দাপ্তরিক কাগজ পত্রে বাচ্চার অভিভাবক বা নিকটাত্মীয়ের নামের ঘরে লেখা হয়েছে এস আই আতিকুর রহমান, শাহজাহানপুর থানা, ডিএমপি, ঢাকা।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।