
রফিকুল আলম, ধুনট প্রতিনিধি: বগুড়ার ধুনট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের কারিগরি শাখার মধ্যবার্ষিক পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রায় ৫০জন শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেচি কেটে দিয়েছে একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুই শিক্ষক। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে পরীক্ষা বর্জন করেছে শিক্ষার্থীরা।
এ ঘটনাটি তদন্তে রোববার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে। কমিটির সদস্যরা হলেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা। তাদের ৩ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ধুনট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের কারিগরি শাখার মধ্যবার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শনিবার সকাল ১০টায় ওই বিদ্যালয়ের কারিগরি শাখার নবম শ্রেণির গনিত-১ ও দশম শ্রেণির গনিত-২ পরীক্ষায় প্রায় ৯০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
পরীক্ষা শুরু হওয়ার প্রায় ৩০মিনিট পরই শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাজ্জাদ হোসেন ও রিক্তা আক্তার। তারা শ্রেণীকক্ষের ভেতর প্রায় ৫০ জন ছাত্রের মাথার আংশিক চুল কেচি দিয়ে কেটে দিয়েছেন। চুল কাটার সময় ছাত্রদের মারধরের অভিযোগ রয়েছে।
মাথার চুল কর্তন করা শিক্ষার্থীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, পরীক্ষা শুরু হওয়ার প্রায় ৩০ মিনিট পর সহকারী শিক্ষক সাজ্জাদ হোসেন ও রিক্তা আক্তার শ্রেণি কক্ষে প্রবেশ করে কেঁচি দিয়ে জোরপূর্বক মাথার চুল কেটে দেয়। এসময় প্রতিবাদ করলে ছাত্রদের মারধর করা হয়। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে অনেক শিক্ষার্থী পরীক্ষা না দিয়ে হল থেকে বেরিয়ে যায়।
এবিষয়ে সহকারী শিক্ষক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ধুনট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় একটি শৃঙ্খলা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখানে ছাত্রদের পাঠদানের পাশাপাশি জীবন গঠন, নৈতিক শিক্ষা দান করা হয়। বিদ্যালয়ের নিয়মিত ছাত্ররা অত্যন্ত শৃঙ্খল। কিন্তু কারিগরি শাখায় বেশ কিছু অনিয়মিত শিক্ষার্থী রয়েছে। যারা শুধু পরীক্ষার সময় বিদ্যালয়ে আসে। তাদের অনেকের মাথার চুল অনেক লম্বা, বিদ্যালয়ের ড্রেস ব্যবহার করে না।
অনেক শিক্ষার্থী বখাটের ন্যায় স্কুলে পরীক্ষা দিতে চলে আসে। পরীক্ষার প্রথম দিনই তাদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল। এরপর মাথার চুল ছোট করে কাটার জন্য তাদের সময় দেওয়া হয়। কিন্তু তারা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মানেনি। একারনে শনিবার কিছু সংখ্যক ছাত্রের মাথার লম্বা চুলের আংশিক কেটে দেওয়া হয়েছে। যাতে তারা চুল ছোট করতে বাধ্য হয়।
ধুনট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল্লাহ্ হেল বাকী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এটা একটা দুঃখ জনক ঘটনা। তবে এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ধুনট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম জিন্নাহ্ জানান, ঘটনাটি অধিকতর গুরত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। যথা সময়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
ধুনট উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিয়া সুলতানা বলেন, স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনাটি তদন্ত করতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ ৩ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতার প্রমান পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।