এশিয়ার জীবন্ত সক্রেটিস ঢাবি প্রফেসর ড. আনিসুজ্জামান!

S M Ashraful Azom
1
এশিয়ার জীবন্ত সক্রেটিস ঢাবি প্রফেসর ড. আনিসুজ্জামান!
সেবা ডেস্ক:  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের একজন প্রফেসর। খুব সাধাসিধে। পড়নে অনাড়ম্বর পোশাক, বগলে রঙ ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া একটি ছাতা। কাধে বই ভর্তি একটা ব্যাগ। হেটেই চলেন বেশি। আর ঢাকা সিটিতে লোকাল বাসে তার যাতায়াত যদিও তিনি ইচ্ছা করলেই অনেক দামি গাড়িতে চড়তে পারেন।

জ্ঞানের সাধনা মানুষের অহংকার আর প্রদর্শনেচ্ছাকে যে বিনাশ করে দিতে পারে তার জলন্ত উদাহরণ তিনি।

একদিন প্লেনে রাশিয়ায় যাচ্ছিলেন। পাশের সিটে বসেছিলেন আরেকজন পরিপাটি ভদ্রমহিলা। মহিলা যাচ্ছিলেন একটা আন্তর্জাতিক প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে । স্যারের অনাড়ম্বর পোশাক দেখে মহিলা খানিকটা বিরক্ত হলেন, কেননা সারের পোশাক-পরিচ্ছদে কিছুটা নিম্নবিত্তই মনে হল।

দীর্ঘ যাত্রাপথে মহিলা স্যারের কাছে পরিচয় জানতে চাইলে স্যার শুধু বলেছিলেন, "আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করি।"

যাই হোক, পরের দিন অনুষ্ঠানে গেলেন মহিলা, সারা বিশ্বের অনেক দেশের লোকই এসেছে, এসেছে নামীদামী অনেক প্রফেসর। মজার ব্যাপার হল ওই অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তাকে দেখে মহিলার অবাক হয়ে গেলেন। কারণ প্রধান বক্তা ছিলেন প্লেন এ মহিলার পাশের সিটে বসা সেই অনাড়ম্বর লোকটি।

তাকে এশিয়ার সক্রেটিস হিসেবে বিশ্বব্যাপী সবাই চিনে, চিনিনা কেবল আমরা। হ্যা, তিনি হচ্ছেন দর্শন বিভাগের প্রফেসর ড. আনিসুজ্জামান।

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস এর আরিয়ান ইকরা বলেন, স্যার আমাদের এখনও ক্লাস নিচ্ছেন। স্যার লেকচার দেয়ার সময় চোখ কান কোনটাই উনার মুখ থেকে সরাতে পারি না।

তার ছাত্রী পাপিয়া শারমীন ইতি লিখেছেন, আমার একজন কাছের মানুসের সাথে স্যারের বাসায় যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল। পারিবারিক জীবনটাও সাধারণের মাঝে অসাধারণ এবং তার সাথে আমার tutorial class ছিল। শুধু এটুকুই বলতে চাই, সত্যিকার একজন দার্শনিক, একজন শিক্ষক হবারই যোগ্য তাও কম বলা হবে। অভিজ্ঞতার জন্য হলেও এমন মানুষের সংস্পর্শ আজকের সামাজিক অবক্ষয়ের মুহূর্তে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ভীষণ প্রয়োজন।

রাজু আহমেদ সুমন বলেন, বিনয় মুকুট, কিন্তু আমার কাছে স্যারকে মানব মুকুট মনে হয়। স্যারের ছাতা আর ব্যাগটা কিছুদিন হাতে করে বয়ে নেয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল, এই মহান মানুষটার সাথে ওয়েস্টার্ন ফিলসফি কোর্সটা করার জন্য। আমি সত্যি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি এমন একজন শিক্ষকের সান্নিধ্য পেয়ে।

সঞ্চতিয়া সেন গুপ্ত বলেন, স্যারের প্রতি বিনম্র সশ্রদ্ধ প্রনতি জানিয়ে একটি কথাই বলব কবি গুরুর একটি উক্তির মাধ্যমে ,"মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক, অামি তোমাদের লোক এই হোক মোর শেষ পরিচয়।"

শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রচারবিমুখ এ মানুষটিকে আমাদের দেশের টেলিভিশন চ্যানেলের জ্ঞান নির্ভর টকশোতে আনা উচিত। এতে জাতি উপকৃত হবে।

 -সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top