
সেবা ডেস্ক: সাহারা মরুভূমি, কে বা নাম শুনেননি। না দেখলেও, নাম অবশ্যই জানেন। সাহারা মরুভূমির পুরোটাই তাদের চেনা। যেখানেই যেতে বলবেন কোনো অসুবিধা হবে না তাদের। শুধু তাই নয়, চোখ বেধে দিলেও নাকি সাহারা মরুভূমিতে পথ হারান না তারা। বলা হয়, সঠিক পথ চিনে নেয়ার জন্য বাতাসে গন্ধ পান এই যাযাবর গোষ্ঠী। রহস্যময় এই উপজাতি গোষ্ঠীর নাম ‘তুয়ারেগ’।
তুয়ারেগরা উত্তর আফ্রিকার বর্বর এক জাতির বংশধর। প্রায় এক হাজার বছর ধরে সাহারা মরু পাড়ি দিয়ে আসছে তারা। পশুপালক এই যাযবার গোষ্ঠীর মধ্যে প্রচলিত আছে কয়েকটি অবাক করা রীতি। তা হল, তুয়ারেগ পুরুষরা নীল কাপড়ের বোরখা পরেন। ওই বোরখার রং লেগে থাকে তাদের মুখে। মরুভূমির তপ্ত বালি এবং ধুলোর হাত থেকে বাঁচতেই এই পোশাক। তাদের বিশ্বাস, নীল রঙে ছোপানো এই পোশাক তাদের রক্ষা করে বিভিন্ন অপদেবতার অভিশাপ থেকেও। অন্যদিকে মেয়েদের মুখ নিরাবরণ রাখতে কিন্তু অসুবিধে নেই।
তুয়ারেগ নারীরা বিয়ের আগে অনেক পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়াতে পারে। শুনলে অবাক হবেন, কোনো নারী পুরুষকে নিয়ে যদি তাঁবুর ভেতরে প্রবেশ করে সেটার আশেপাশে কেউই যায় না। এমনকি তাঁবুতে যারা আছে তাদের পিতা-মাতাও যায় না। কারো যদি ইচ্ছে হয় একে অপরের সঙ্গে দীর্ঘদিন থাকার, তবেই সামাজিক আলোচনার ভিত্তিতে বিয়ে হয়। তবে বিয়েতে রাজি হওয়ার সর্বোচ্চ ক্ষমতা থাকে নারীদেরই।
তুয়ারেগদের সমাজ ব্যবস্থা অনেকটাই মাতৃশাসিত। তাঁবু এবং পশুর পাল—সবকিছুর মালিকানা থাকে মহিলাদের নামে। নিজেদের ইচ্ছেমতো ডিভোর্স করতে পারেন তারা। বিচ্ছেদের পরে তাঁবু, সম্পত্তি এবং সন্তান—সব কিছুর মালিক হয়ে যায় নারী। পুরুষকে ফিরে যেতে হয় তার মায়ের তাঁবুতে। ডিভোর্সের পরে মেয়ের তরফে ভোজসভা আয়োজন করাই এই সমাজের নিয়ম। এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়, ওই রমণী আবারো সিঙ্গেল!
কাব্যচর্চায় তুয়ারেগ পুরুষরা অনেক এগিয়ে। নীল কাপড়ে তাদের মুখ ঢাকা থাকলেও মন মোটেও ঢাকা নয়। তাই মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার বহু স্থানে কবিতা পাঠ ও গানের জন্য দূরদুরান্ত থেকে মানুষ তুয়ারেগ পুরুষদের নিয়ে যায়। তবে তাদের সমাজে ‘ব্যক্তিগত গোপনীয়তা’ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাদের ভেতরকার অনেক তথ্য এখনো জানে না বিশ্ব।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।