সিরিজ বোমা হামলার চৌদ্দ বছর: বিচার শেষ হবে কবে?

S M Ashraful Azom
0
Fourteen years of series bombing: When will the trial be over?
সেবা ডেস্ক: সারাদেশে জেএমবির সিরিজ বোমা হামলার চৌদ্দ বছর পূর্ণ হয়েছে গতকাল। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারাদেশের ৬৩টি জেলায় জেএমবি একযোগে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে চরম ঔদ্ধত্যে তাদের শক্তিমত্তা জানান দিয়েছিল।

ওই ঘটনার পর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দায়ের হওয়া মামলাগুলোর একযুগের বেশি অতিবাহিত হলেও বিচারকাজ শেষ হয়নি। মামলার সব আসামিকেও পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

বিচারকাজে এই দীর্ঘসূত্রতা বিস্ময়কর। অন্যদিকে এখনো এই নিষিদ্ধ সংগঠনটির কার্যক্রম নির্মূল করা যায়নি। তাদের দিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করে যাচ্ছে দেশি-বিদেশি চক্রগুলো। তাদের মদদ দিয়ে যাচ্ছে স্বাধীনতাবিরোধীরা। এটিও উদ্বেগের।

২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের ৬৩ জেলায় (মুন্সীগঞ্জ বাদে) বেলা ১১টার দিকে সিরিজ বোমা হামলা চালায় জেএমবি। মাত্র আধঘণ্টার ব্যবধানে দেশের পাঁচশ স্থানে চালানো সেই হামলায় অন্তত ৫ শতাধিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। হামলায় দুজন নিহত হন। আহত হন দুই শতাধিক মানুষ।

হামলা চালানো হয় হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট, জেলা আদালত, বিমানবন্দর, বাংলাদেশে থাকা মার্কিন দূতাবাস, জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়, প্রেসক্লাব ও সরকারি আধা-সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার কাছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের ইন্টেলিজেন্স এন্ড স্পেশাল অ্যাফেয়ার্স শাখার তথ্য মোতাবেক, সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় সারাদেশের বিভিন্ন থানায় ১৫৯টি মামলা দায়ের করে পুলিশ। এর মধ্যে ৯৩ নিষ্পত্তি হয়েছে। এতে ৩৩৪ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়। বাকি ৫৬ মামলা এখনো বিচারাধীন রয়েছে। এসব মামলায় মোট আসামির সংখ্যা চারশ। এই পর্যন্ত ২৭ আসামিকে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার মামলায় ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়েছে।

এর মধ্যে ৮ জনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ রাতে শীর্ষ জঙ্গি নেতা শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম, খালেদ সাইফুল্লাহ, আতাউর রহমান সানি, আবদুল আউয়াল, ইফতেখার হাসান আল মামুনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। কোনো কোনো মামলার যুক্তিতর্ক চলছে।
আবার কিছু মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। কখন এসব মামলার বিচার সম্পন্ন হবে তা কেউ বলতে পারছে না। বিভিন্ন সাক্ষ্যগ্রহণ এবং বিশ্লেষণে বিচারকাজে তৈরি হয়েছে দীর্ঘসূত্রতা।

তাই বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত করতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি উঠেছে সচেতন মহল থেকে। এই দাবি বিবেচনায় নিতে পারে সরকার। অন্যদিকে যে জঙ্গিরা সামনে এসে এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদেরই বিচার হচ্ছে। কিন্তু তাদের পেছনে তথ্য এবং অর্থ দিয়ে সহায়তা করেছে অনেকে।

 এই পর্দার পেছনের হোতাদের খুঁজে বের করতে কাজ করতে হবে। উদ্বেগের বিষয় হলো, সেই সিরিজ বোমা হামলার সময় থেকে আজো জেএমবি আতঙ্কে ভুগছে বাংলাদেশ। নিষিদ্ধ ঘোষিত এই জঙ্গি সংগঠনটির কার্যক্রম আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্মূল করতে পারেনি। বরং জেএমবি প্রতিনিয়ত মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে।

কাজেই নিষিদ্ধ সংগঠনগুলোর পলাতক, ছাড়া পাওয়া, জামিন পাওয়া সদস্যদের নিয়েও ভাবতে হবে। তাদের নতুন করে সংগঠিত হওয়ার প্রচেষ্টা ঠেকাতে হবে।

 -সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top