সেবা ডেস্ক: পাবনার চাটমোহরের শিশু সামির। যে বয়সে শিশুরা ছোটাছোটি ও খেলাধুলা করে বেড়ায়, আর শিশু সামির হৃৎপিণ্ডে মারাত্মক সংক্রমন নিয়ে দিনে দিনে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু চিকিৎসা করানোর সামর্থ নেই তার দরিদ্র্য বাবা-মার। তারা বলছেন, মাত্র আড়াইলাখ টাকা হলেই বেঁচে যাবে সামির জীবন।
পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের খতবাড়ি গ্রামের দিনমজুর শাহীন হোসেন ও গৃহিণী শারমীনা খাতুনের ছেলে সামির।
সমবয়সী শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলা করে সময় বেশ ভালো কাটছিল সামিরের। কিন্তু হঠাৎ করেই শুরু হয় শ্বাসকষ্ট ও বুকে ব্যথা। দেখানো হয় চিকিৎসক। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে হৃৎপিণ্ডে ছিদ্র ধরা পড়ে সামির।
অপারেশনও করা হয়, কিন্তু মাস দুয়েকের মাথায় আবারও অসুস্থ হয়ে পড়ে সামি। এবার জীবাণুতে আক্রান্ত হয়ে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়েছে সামির হৃৎপিণ্ডে।
বাবা শাহীন হোসেন অশ্রুসিক্ত নয়নে যুগান্তরকে জানান, বছরখানেক আগে খাবার ভেবে ভুল করে ঘরে রাখা ইঁদুর মারা কীটনাশক (বিষ) খায় পাঁচ বছর বয়সী শিশু সামি হোসেন। এর পর শুরু হয় বমি ও শ্বাসকষ্ট। নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে।
প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর সুস্থ হলে বাড়িতে ফিরে আসে সে। এর পর হঠাৎ করেই শুরু হয় শ্বাসকষ্ট ও বুকে ব্যথা। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ধরা পড়ে হৃৎপিণ্ডে ছিদ্র।
স্থানীয় বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে সুদে টাকা নিয়ে এবং সহায় সম্বল যা ছিল সব বিক্রি করে ঢাকায় জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় সামিকে।
বাবা বলেন, দুই লাখেরও অধিক টাকা ব্যয় করে হৃৎপিণ্ডের অপারেশন করানো হয় শিশুটির। অপারেশন করেন ডা. শাহরিয়ার। এর পর সুস্থ হওয়ার পর সামিকে নিয়ে হাসিমুখে বাড়িতে ফিরে আসেন বাবা-মা। কিন্তু মাস দুয়েকের মাথায় আবারও অসুস্থ হয়ে পড়ে সামি।
আবারও নিয়ে যাওয়া হয় জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে। এর পর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বেশ কয়েক দিন আইসিইউতে ভর্তি রাখতে হয় তাকে।
এবার চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বলেন, জীবাণুতে আক্রান্ত হয়ে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়েছে সামির হৃৎপিণ্ডে।
আড়াই লাখ টাকা হলে বেঁচে যাবে পাবনার সামির জীবন
তাকে বাঁচাতে হলে পুনরায় অপারেশন করাতে হবে। এর জন্য আবারও লাগবে আড়াই লাখ টাকা। সামির চিকিৎসকের এমন কথা শুনে হতাশ হয়ে পড়েন বাবা-মা। ফিরে আসেন বাড়িতে। এদিকে বাড়ি ফেরার পর সুদের কারবারিরা চেপে ধরেন টাকার জন্য।
এদিকে ছেলের চিকিৎসা করানো, সুদের কারবারিদের টাকা শোধ করা- এমন চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে পরিবারটি। দুই শতক জায়গার ওপর একটি টিনের ছাপড়াঘর ছাড়া কোনো সম্পদ নেই দরিদ্র পরিবারটির।
অন্যদিকে ক্রমেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে সামি। মুখ থেকে হারিয়ে গেছে হাসি। কিছুই খেতে পারছে না শিশুটি। শুকিয়ে যাচ্ছে শরীর। তবে ছেলের এমন করুণ পরিণতি কিছুতেই মানতে পারছেন মা-বাবা। সামিকে বুকে জড়িয়ে ধরে অঝোরে কাঁদছেন তারা।
শারমীনা খাতুন বলেন, আমার ছেলে (সামি) নিষ্পাপ শিশু। ও তো কোনো অন্যায় করেনি। আমরা গরিব মানুষ। গরিবের ঘরের ছেলের এমন অসুখ হলে বাঁচবে কীভাবে? আমাদের পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা অসম্ভব ব্যাপার।
তবে কি আমাদের ছেলে বিনাচিকিৎসায় মারা যাবে? সামিকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
সামির চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা করতে চাইলে এই মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা যেতে পারে- বাবা শাহীন হোসেন- ০১৭৫৩৬১৩৮৪৯ (বিকাশ পার্সোনাল)।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।