বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যার বিচার চাইলো আসামি মুন্নার মা

S M Ashraful Azom
0
বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যার বিচার চাইলো আসামি মুন্নার মা
সেবা ডেস্ক: বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার বিচার দাবি করেছেন আসামি ইশতিয়াক আহমেদ মুন্নার মা। ইশতিয়াক আহমেদ মুন্না ছাত্রলীগ বুয়েট শাখার গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক।

মুন্নার মা কুলসুমা আক্তার শেলি দাবি করেন, তার ছেলে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। কারণ সেদিন রাতে মুন্না তার গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার ঘরগাঁও গ্রামে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে ছিলেন। বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে রাত সাড়ে ১১টায় মুন্না বাড়ি থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা দেন।

মুন্নার মা আরো বলেন, মুন্নাকে পুলিশ আটক করেছে সন্দেহজনকভাবে। এমন বর্বর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মুন্নার জড়িত থাকার প্রশ্নই আসে না। আমি এ হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার দাবি করছি।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেধাবী আবরার হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল বুয়েটসহ দেশের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। বিদ্যাপীঠগুলোর সঙ্গে ফুঁসে উঠেছে সারা দেশ।

ফেসবুকে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তির প্রতিবাদে নিজের মত জানিয়েছিলেন আবরার ফাহাদ।

সেই স্ট্যাটাসের জেরে রোববার রাতে তাকে শিবির সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করে বুয়েটের একই হলের বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী।

মঙ্গলবার মুন্নার গ্রামের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তার বাবা প্রয়াত আহাদ আলী মেম্বার ছিলেন বিএনপির একজন কর্মী। তারা পারিবারিকভাবে বিএনপির সমর্থক। এ পরিবারের সন্তান ইশতিয়াক মুন্না বুয়েটে গিয়ে ছাত্রলীগ নেতা বনে যান।

আবরার হত্যার মুন্না জড়িত থাকার বিষয়টি গ্রামের বাড়ি চুনারুঘাটে জানাজানি হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। অনেকেই তাকে চুনারুঘাটের কলঙ্ক বলে আখ্যায়িত করেছেন।

কুলসুমা আক্তার গত শনিবার বিকেলে তার ৩ ছেলেকে নিয়ে চুনারুঘাটের ঘরগাঁও গ্রামে পীর মোর্শেদ কামালের মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে বেড়াতে আসেন। রোববার রাতে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে রাত সাড়ে ১১টায় বুয়েটের ইশতিয়াক মুন্না বাসযোগে ঢাকায় চলে যান।

সোমবার সকালে ছেলের ফোন না পেয়ে মা কুলসুমা ফোন করলে তার ফোনে কল যায় না। এরপরই মুন্নার এক বন্ধু তার মাকে জানায়, মুন্নার হলে (শেরেবাংলা হল) সমস্যা হয়েছে।

মুন্না সমস্যায় আছে, এ কথা বলেই সে ফোন কেটে দেয়। পরে কুলসুমা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তার ছেলে প্রথমে চকবাজার পুলিশ ও পরে ডিবি পুলিশের কাছে রয়েছে। তাকে সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয়েছে এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

তিনি জানান, নিহত আবরারের বাবা যে মামলা করেছেন তাতে তার ছেলে মুন্নার নাম নেই। এ ছাড়া যে ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে তাতেও মুন্নার ছবি নেই। তিনি জানান, সে ছাত্রলীগ করত আমি জানি।

এ বিষয়ে মুন্নার চাচা ওয়াহেদ আলী জানান, মুন্না রোববার বাড়িতে এসেছিল। রাতে ঢাকা যাওয়ার সময় আমার সঙ্গে বিদায় নিয়ে গেছে।

একই কথা জানান একই গ্রামের ডা. মুসলিম উদ্দিন বলেন, ইশতিয়াক মুন্নারা ৩ ভাই। সবাই মেধাবী। মুন্না গ্রামের ঘরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময়ই ২০০৮ সালে তারা বাবা মারা যান। পরে বিবাড়িয়া জেলায় মায়ের কাছে থেকে উচ্চ মাধ্যমিক লেখাপড়া করেন। পরে ঢাকায় ক্যাম্ব্রিয়ান কলেজ থেকে পাস করে বুয়েটে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ পান। বড় ভাই আশরাফ আহমেদ মনির সেনাবাহিনীতে সেকেন্ড লে. হিসেবে যোগদান করে এখন ক্যাপ্টেন হিসেবে কর্মরত আছেন।

ছোট ভাই ইফতেখার আহমেদ রানা শাবিতে পড়ালেখা করছে। তার মায়ের দ্বিতীয় বিয়ের পর সেখানে ৫ বছরের একটি সন্তান রয়েছে।

শেষ খবরে জানা গেছে, ইশতিয়াক মুন্নাকে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত।

এ বিষয়ে চুনারুঘাট সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমেদ জানান, প্রয়াত আলী বিএনপি করতেন। তার পরিবারও বিএনপি সমর্থক। কিন্তু কিভাবে ছাত্রলীগ হয়ে গেল তা বোধগম্য নয়।

 -সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top