আগামী প্রজন্মের জন্য একটা গল্প

S M Ashraful Azom
আগামী প্রজন্মের জন্য একটা গল্প
সেবা ডেস্ক: জাপানের এক চাষির গল্প বলি, জাপানের এক চাষির জমিতে একবার প্রচুর মুলা হয়। তখন চাষি বাজারে মুলা বিক্রি করে লাভ উঠে আসার পর জমিতে যে মুলা ছিলো তা বিক্রি না করে সাধারণ মানুষের জন্য জমি খুলে দেয়। তখন স্থানীয় মানুষরা সবাই জমি থেকে একটা করে মুলা নেয় এবং তাদের যখন জিজ্ঞেস করা হয় এত মুলা থাকতে একটা করে কেনো মুলা নিচ্ছো? তখন তারা বলেন, অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য আর আমাদের একটার বেশি মুলা দরকারও নাই।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধকল কাটিয়ে জাপানিরা আজ কই পৌছে গেছে, কেন পৌছেছে বুঝলেন?

আরেকটা গল্প করি জাপান নিয়ে, টাইটানিক জাহাজ ডুবে যাওয়ার পর এক জাপানি প্রাণে বেঁচে দেশে ফিরে গেলে তাকে ধিক্কার জানানো হয় অন্য যাত্রীদের বাঁচাতে না পেরে কেন সে বেঁচে গেলো? কেন সেও মরে গেলো না? মানুষের জন্য জীবন দিতে না পারলে কিসের মানব জীবন?

কিভাবে হিরোশিমা নাগাসাকির বিধ্বস্ত জাপান আজকের জাপান হয়েছে বুঝলেন তো?

নিজেদের কথায় আসি। আচ্ছা আমরা সবাই ঘর ভর্তি বাজার করতে অস্থির কিন্তু কেউ খাবার কমাতে অস্থির না কেন?

কেন কেউ বলছি না আমি তিন বেলার বদলে এক বেলা খাবো কিন্তু অতিরিক্ত খাবার কিনে পাশের বাসার অল্প টাকার বেতন পাওয়া লোকটাকে না খাইয়ে রাখবো না! কেন বলছি না?

আম্মাকে বলে দিছি যদি অবস্থা খারাপ হয় বাসায় ভাত এক বেলা রান্না হবে। সকালে শুধু বিস্কিট চা আর দুপুরে রুটি। কিংবা রাতে রুটি দুপুরে ভাত। কিন্তু ভাত রান্না হবে এক বেলা। মাছ মাংসের জায়গায় সামনের কয়দিন শাকসবজি। যদি এক বেলার চালও না থাকে রুটি, রুটি কেনার সামর্থ্য না থাকলে ওয়াসার পানিতো আছে নাকি?

আমি করোনায় যেমন মরতে রাজি না তেমনি মজুদদারের হাতে মরার চেয়ে আমি না খেয়ে মরতে রাজি।

আমার অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে করা তোমার সিন্ডিকেটের সামনে মাথা নোয়াবো না। অর্থে গরিব হতে পারি আমি, অহংকারে না।
তারা জানতো করোনা সিলেট দিয়ে ইন্ডিয়ার বর্ডার দিয়ে আসবে না। তারা জানতো করোনা মায়ানমার দিয়েও আসবে না কিন্তু করোনা হযরত শাহজালাল এয়ারপোর্ট দিয়েই ঢুকবে এটা তারা জানতো!

তারা অনেক আগে থেকেই জানতো! তবুও করোনা ঠেকাতে পারেনি। তারা করোনা ঢুকিয়েছে। তাদের খামখেয়ালিপনা ব্যর্থতায় এদেশে করোনা ঢুকেছে।

তারা পরিবর্তন হবে না কখনো, আসেন আমরা পরিবর্তন হই। আমি আপনি পরিবর্তন হই।

আসেন, আসছে প্রজন্মের জন্য একটা গল্প রেখে যাই!একদিন যেন আসছে প্রজন্ম গল্প করে, জানো ২০২০ য়ে আমাদের দেশে একটা দুষ্ট ভাইরাস নাম "করোনা" ঢুকেছিলো। তখন দেশে মিথ্যে খাদ্য সংকট হবে বলে তখন আমাদের দেশের মানুষ তাদের খাদ্য কমিয়েছিলো এক রুটি দুজন খেয়েছিলো কিন্তু অর্থ আছে বলে বেশি কিনে বাজার নষ্ট করেনি।

জানো তখন আমাদের দেশের মানুষ অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে যায়নি বরং অন্যকে নিরাপদে রাখার জন্য ঘরে বন্দি ছিলো অনেকদিন।

জানো তখন আমাদের দেশে অনেক মানুষ বিদেশে বন্দি হয়ে গিয়েছিলো কিন্তু দেশের মানুষকে নিজের শরীরের ভাইরাস থেকে মুক্ত রাখতে একদল মানুষ দেশে ফিরেনি!

তারা প্রতিনিয়ত ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিতো, ইটালি থেকে বলছি, জার্মান থেকে বলছি, ওমান থেকে বলছি, প্রিয় মাতৃভূমি আমি তোমায় ভালোবাসি!

জানো হাসপাতালে থাকা কোরোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার সুযোগ দিয়ে কেউ অযথা তখন হাসপাতালে ভিড় করেনি!

জানো সুপারম্যান ব্যাটমানের মত সুপার পাওয়ার বাস্তবে না থাকলেও তখন একদল মানুষ ছিলো যাদের আমরা ডাক্তার বলি তারা সেদিন কাজের চেয়ার ছাড়েননি!

জানো তখন সারা বাংলাদেশ এক হয়ে লড়েছিল বলে আজ ৩০২০ য়ে আমরা তাদের গল্প করি।

আসেন, আসছে প্রজন্মের জন্য একটা গল্প রেখে যাই! আপনার আমার সেই গল্পের নায়ক নায়িকা হওয়ার এখনই সময়।

 -সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন


ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top