
সেবা ডেস্ক: বাংলাদেশের মধ্যে এখন পর্যন্ত যারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তারা সবাই প্রবাস থেকে ফিরে আসা স্বজনদের কাছ থেকে সংক্রমিত হয়েছেন। ফলে বিদেশ ফেরত যারা সরকারি নির্দেশনা মানছেন না তাদের শতভাগ করোয়েন্টাইন নিশ্চিতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে, সারাদেশে করোনা ভাইরাসে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৪ জন। হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ২ হাজার ৩২৪ জন। আইসোলেশনে আছেন ৪৩ জন। তাদের অন্তত ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কিন্তু সে নির্দেশনা না মেনে অনেকেই মিশে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষের ভিড়ে।
ফলে করোনা ভাইরাসের জন্য সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন ২০১৮"- প্রয়োগের প্রয়োজন হতে পারে বলে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন স্বাস্থ্য অধিদফরত।
এ আইনের ২৬ ধারা অনুযায়ী যদি কেউ সংক্রামক রোগ সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা থাকা সত্ত্বেও গোপন করে, ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা বা ভুল তথ্য দেয়, তাহলে সেটি অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে। ফলে ওই ব্যক্তির দুই মাসের কারাদণ্ড বা ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে। এছাড়া কোনো এলাকাকে সংক্রমিত এলাকা ঘোষণা, যানবাহন নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি বিষয়ও আছে এই আইনে।
এ বিষয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা, মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা ডেইলি বাংলাদেশকে বলেছেন, হোম কোয়ারেন্টাইনকে হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। কেউ হোম কোয়ারেন্টাইন না মানলে সরকার এখন হার্ডলাইনে যাবে।
তিনি বলেন, বিদেশ ফেরতরা যেন হোম কোয়ারেন্টাইন সঠিকভাবে মেনে চলেন সেজন্য জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে নিজ নিজ এলাকায় পাঠানো হচ্ছে। আমরা আগে থেকেই হোম কোয়ারেন্টের কথা বলে আসছি। তারপরও অনেকেই নির্দেশ অমান্য করেছে। কিন্তু এখন থেকে কেউ হোম কোয়ারেন্টাইনে না থাকলে হার্ডলাইনে যাব।
তিনি আরো বলেন, এখন পর্যন্ত যেসব ব্যক্তি কোভিড-১৯ আক্রান্ত, বিদেশ থেকে বাংলাদেশে ফিরে এসে হোম কোয়ারেন্টিনের নিয়মকানুন
মানছেন না এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখছেন না, তারা পরিবারের সদস্যদেরকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছেন। বাংলাদেশে যে পাঁচজন দেশে বসেই কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন, তারা সবাই প্রবাস থেকে ফিরে আসা নিকট জনদের কাছ থেকে সংক্রমিত হয়েছেন। তাই আমরা আবারো আহ্বান জানাচ্ছি পরিবার-সমাজ-দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে বিদেশ থেকে ফিরে আসা যাত্রীরা ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন পালন করুন। তাদেরকে এটাও স্বরণ করিয়ে দিতে চাই যে, কোয়ারেন্টাইন পালন করা আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক। আইন ভঙ্গ করে নিজেকে অপরাধী করবেন না।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, হোম কোয়ারেন্টাইন না পালন করলে সরকার ব্যবস্থা নেবে।
তিনি বলেন, হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতের জন্য সিভিল সার্জন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ সংশ্লিষ্ট সবার কাছে গণ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বার যারা রয়েছেন, তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে- কোয়ারেন্টাইনে কেউ না থাকলে তাদের ‘ঘরে ঢোকানোর। আমরা যখন খবর পাব এই গণবিজ্ঞপ্তি মানা হচ্ছে না, তখন অ্যাকশনে যাওয়ার নির্দেশ দেব। এরপরও যদি কোনো ‘এক্সট্রিম সিচুয়েশন’ হয় তাহলে পুলিশ যাবে। এ আইন কেউ অমান্য করলে কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন, ফৌজদারি কার্যবিধিতে এর বিচার হবে বলেও জানান তিনি।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন