সেবা ডেস্ক: পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের সুযোগ বাংলাদেশে এখনো রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন এক চীনা বিশেষজ্ঞ। গতকাল বুধবার (৮ এপ্রিল) স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের সঙ্গে এক ভিডিও কনফারেন্সে ওই চীনা বিশেষজ্ঞ এ মন্তব্য করেন। বিপুল পরিমাণে পরীক্ষা এবং আক্রান্ত ব্যক্তিকে পৃথক করার মধ্য দিয়ে মহামারি করোনা প্রতিরোধ সম্ভব বলে জানান চীনা ভাইরাস বিশেষজ্ঞ ড. জ্যাং ওয়েহং।
ওই বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংসহ স্বাস্থ্য খাদের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ড. জ্যাং ওয়েহং বলেন, সন্দেহভাজন সব ব্যক্তিকে পরীক্ষা করা ছাড়া এই রোগ কোনো সুস্থ মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিতে থাকে। তখন আর কমিউনিটি ট্রান্সমিশন বন্ধ করা সম্ভব হবে না।
তিনি বলেন, পরীক্ষার পর এটাও নিশ্চিত করতে হবে যে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে যারা এসেছেন তাদের যেন হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। তবে যখন রোগীর পরীক্ষা করা হবে তখন খেয়াল রাখতে হবে যে, গোটা হাসপাতাল যেন তার দ্বারা সংক্রমিত না হয়।
চীনা এ বিশেষজ্ঞ বলেন, এ জন্য প্রয়োজন হবে হাসপাতালের বাইরে স্ক্রিনিং স্টোর তৈরি করা এবং যাদের মৃদু লক্ষণ থাকবে তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো। শুধু যাদের গুরুতর সমস্যা দেখা দেবে কাদের হাসপাতালের ভেতরে চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য নেয়া যেতে পারে। যদি সব মানুষকেই হাসপাতালের ভেতরে নিয়ে পরীক্ষা করানো হয়, তাহলে চিকিৎসক এবং নার্সরা সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকবেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত ও পরীক্ষাসহ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। সেগুলো কতটা কার্যকর হয়েছে তা দুই সপ্তাহ পর বুঝা যাবে।
ওই বিশেষজ্ঞ আরও বলেন যে, মৃত্যুর হারও নির্ভর করবে করোনা পরীক্ষার ওপর। যদি ব্যাপক হারে পরীক্ষা নিশ্চিত করা যায় তাহলে মৃত্যুর হারও হবে কম।
তিনি উল্লেখ করেন, সাংহাই এবং যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় একই সময়ে করোনার দেখা পাওয়া যায়। সাংহাইয়ের পরিস্থিতির উন্নতি দেখা গেছে কিছু সহজ পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে যেখানে যুক্তরাষ্ট্রকে এর কিছুই করতে দেখা যায়নি।
তিনি বলেন, পলিমারি চেইন রিঅ্যাকশন (পিপিই) দিয়ে করোনার পরীক্ষা অ্যান্টিবডির মাধ্যমে পরীক্ষার তুলনায় অনেক বিশ্বস্ত। যদি নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা পদ্ধতি না থাকে তাহলে অনেক আক্রান্ত ব্যক্তিই হয়তো অগোচরে তার লোকালয়ে এ ভাইরাস ছড়িয়ে বেড়াবে।
এই চিকিৎসক হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ রাখার কথা বলেন। তার মতে, এ রোগে ২০ ভাগ ব্যক্তিকে অক্সিজেন দিতে হয়।
তিনি বলেন, কভিড-১৯ কোনো সীমানা জানে না এবং এ জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা বজায় রাখা জরুরি।
তিনি বলেন, ম্যালেরিয়া ওষুধে করোনা সারে এর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। হয়তো এ ওষুধ কিছুটা ব্যথার উপশম ঘটাতে পারে কিন্তু ভাইরাসের কাজ থামাতে পারবে না।