
রফিকুল আলম, ধুনট (বগুড়া): ঘরে ঘরে করোনা সংক্রমণের শঙ্কা। লকডাউনে ঘরবন্দী দূর্বিষহ জীবন। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন শ্রমজীবি মানুষেরা। এসব পরিবারে চলছে নীরব দূর্ভিক্ষ। যোগাতে পারছেন না দু’মুঠো খাবার। এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ বিল আদায়ের চাপ যেন মরার উপর খাড়ার ঘা। তাই করোনা ক্রান্তিকালে বিদ্যুৎ বিল আদায় বন্ধ করার দাবী জানিয়েছেন গ্রাহকেরা।
সোমবার সকালে সরেজমিন বগুড়ার ধুনট উপজেলার মথুরাপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যালয়ে বিল পরিশোধের জন্য আসা গ্রাহকদের সাথে কথা হলে তারা এমন দাবী করেন। এদিকে বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে গ্রাহকেরা সামাজিক দুরত্ব রক্ষা কিংবা স্বাস্থ্য বিধি মানছেন না।
জানা গেছে, মার্চ মাসের শেষ দিকে সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী করোনাক্রান্তিকালে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া হলে তা আদায় করা হবে না। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে বকেয়া বিলের কোনো জরিমানাও ধরা হবে না। ফলে ফেব্রæয়ারি, মার্চ ও এপ্রিল মাসের বিদ্যুতের বিল আদায়ও বন্ধ ছিল। এই তিন মাসের বিদ্যুতের রিডিং লেখাও হয়নি। গ্রাহকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিটার রিডাররা কোনো রিডিং করেননি।
চলতি মাসের শুরুতে অনুমাননির্ভর ভুতুড়ে বিল তৈরি করে গ্রাহকের নিকট পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে দুই তিন মাসের মোট মিল একত্রে করে পরিশোধ করতে গ্রাহকদের চাপ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। গ্রাহকদের মোবাইলে এসএমএস ছাড়াও মাইকিং করে বকেয়াসহ বিল পরিশোধে জোর তাগিদ দেয়া হচ্ছে। এতে করোনা দুর্যোগে গড় বিলের ভুতুড়ে ফাঁদে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ৭৬ হাজার গ্রাহক।
মথুরাপুর পল্লী বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিল পরিশোধের জন্য আসা গোলাম মোস্তফা, জামাল উদ্দিন, কুলসুম খাতুন, জহেরা বেগমসহ অন্যান্য গ্রাহকেরা জানান, করোনার কারনে আয় উপার্জনের পথই যেখানে বন্ধ রয়েছে সেখানে গড় বিলের কাগজ পেয়ে দম বন্ধ হয়ে আসছে। এ সময়ে কোনো রকমে খেয়ে পরে থাকাই যেখানে দুষ্কর, সেখানে বিল পরিশোধের জন্য চাপ সৃষ্টি করায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। করোনা পরিস্থিতি উন্নত না হওয়ায় পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিল আদায় বন্ধ রাখার দাবী জানান এ সব গ্রাহকেরা।
পল্লী বিদ্যুতের ধুনট জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মাহবুব জিয়া বলেন, ফেব্রæয়ারি, মার্চ ও এপ্রিল মাসের বিল জরিমানা ছাড়া আদায় করা হচ্ছে। তবে মে মাসের জরিমানা মওকুফের কোনো সিদ্ধান্ত পাইনি। তবে জুন মাসের মধ্যে বিগত এক বছরের সব হিসাব ক্লোজ করতে হয়। তাই গ্রাহকদের জুন মাসের মধ্যে বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য অনুরোধ করছি।