
মাহবুবুর রহমান জিলানী, গাজীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুর সিটি করপোরেশনে এলাকার মোট দুই হাজার ৬০০ মসজিদের ইমাম-খতিবকে আর্থিক সম্মাননা দিচ্ছেন সংস্থাটির মেয়র অ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর আলম। আগামীকাল শুক্রবার তাঁদের সবার হাতে ওই অর্থের হস্তান্তর করা হবে। এই সহায়তার মাধ্যমে ব্যক্তি উদ্যোগে কোন জনপ্রতিনিধির পক্ষ থেকে এতো সংখ্যক আলেমকে সম্মাননা দেওয়ার ইতিহাস গড়তে যাচ্ছে মেয়র। সম্পুর্ণ নিজস্ব ফান্ড থেকে ওই অর্থ জাহাঙ্গীর আলম দেবেন বলে জানা গেছে। এদিকে মেয়রের এই যুগান্তকারী ঘোষণার পর গাজীপুর সিটি করপোরেশন এবং বিশ্বের নানা প্রান্তে বসবাসরত বাংলাদেশের নাগরিকরা ব্যাপক সাধুবাদ জানাচ্ছেন।
জানা গেছে, ইমাম ও খতিবগণ প্রতিটি এলাকার মসজিদ কমিটি থেকে মাসিক বেতন পান। কিন্তু সবাইকে মাসিক ভাতার আওতায় আনার পরিকল্পনা ছিলো মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলমের। গত বছরের ২৫ এপ্রিল একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সব কয়টি মসজিদের ইমাম ও খতিবকে আর্থিক অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। সেই ঘোষণা আগামিকাল বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছেন গাজীপুরের মেয়র ও মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পদক মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকার মোট দুই হাজার ৬০০ ইমাম ও খতিবকে বছরে ১২ হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে মেয়র। প্রতি আলেমকে চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রথম ধাপে চার হাজার টাকার চেক ইতিমধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে আরো চার হাজার টাকার চেক হস্তান্তর করা হবে। আগামিকাল শুক্রবার বোর্ড বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে অর্থ হস্তান্তর করা হবে। চেক হস্তান্তর উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন মেয়র নিজেই।
এদিকে মেয়রের এই সিদ্ধান্তের পর গাজীপুরসহ দেশ-বিদেশের বাংলাদেশিরা ব্যাপক প্রশংসা করছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাধুবাদ জানাচ্ছেন তারা। এছাড়া করোনার এই দুঃসময়ে ইমাম ও খতিবদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আলেম সমাজও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মেয়রের প্রতি।
গাজীপুরের একটি মসজিদের ইমাম বলেন, ‘রমজানে ইমাম ও খতিবদের বেশ কিছু টাকা উপার্জন হতো। কিন্তু মাসের শুরু থেকে মসজিদে তারাবির নামাজ বন্ধ রাখার কারণে অনেকের উপার্জন বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া করোনার মধ্যে অনেক আলেক কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। এই সময়ে মেয়র আলেম সমাজের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমার জানা মতে ব্যক্তি উদ্যোগে এতোজন আলেমকে আর্থিক সহযোগিতার ইতিহাস এটাই প্রথম। আমরা সবাই মেয়রের জন্য প্রাণভরে দোয়া করি।’
মেয়র অ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আলেম সমাজের পাশে দাঁড়ানোর বিষয়টি আমার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে ছিলো। এছাড়া এতো সংখ্যক আলেমের পাশে দাঁড়ানো আমার জন্য অনেক সম্মানের এবং সৌভাগ্যের। আমার ভালো লাগছে যে আমি এ ধরণের একটি কাজ শুরু করতে পেরেছি। ভবিষ্যতে মুয়াজ্জিনদেরও এই সম্মানী ভাতার আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে আমার।’