
কাজিপুর প্রতিনিধি: বয়স পয়ষট্টি ছুঁই ছুঁই মালেকা খাতুনের স্বামী মারা গেছেন কুড়ি বছর পূর্বে। তিন ছেলে দুই মেয়ের কাউকেই পড়ালেখা করাতে পারেন নি। বিয়ে করে যে যার মতো আলাদা হয়ে গেছে। সেই থেকে ছোট্ট মুদি দোকানই মালেকার ঘর সংসার।
সেই দোকানও আবার উচ্ছেদের কবলে পড়েছে। হাটের জায়গায় নির্মিত ঘরটি অপসারণে সাত দিনের নোর্টিশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় কোথায় গিয়ে দাঁড়াবেন মালেকা বেগম! মঙ্গলবার উপজেলার গান্ধাইল ইউনিয়নের কালিকাপুর বাজারে মালেকার দোকান ঘরে গিয়ে কথা হয় তার সাথে। ওই হাটের সবার মালেকা বেগম ওরফে মালা চাচী জানান তার সংগ্রামী জীবনের কথা।
বিয়ের প্রথমে ভালই কেটে যাচ্ছিলো মালেকার সংসার। ছেদ পড়ে স্বামীর অকাল বিয়োগে। নিজের দোকান ঘরের জিনিসপত্র সরিয়ে নিতে নিতে তিনি জানান, ‘সরকার নাকি অনেক কিছু দিয়ে সাহায্য করে মানুষকে। কিন্তক আমাগোরে খোঁজ নিলো না একজনও। চোখে মুখে রাজ্যের হতাশা নিয়ে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে তিনি জানান, ‘বিশ বছর থাইক্কা এই দোকান ঘরে থাকি। রাতে এখানেই ঘুমাই। পাশেই রান্না করে খাই। কারো কাছে হাত পাতিনি। এহোনতো জায়গা ছাইড়া দিতে হবে।
স্বামীর এক টুকরো ভিটে আছে জানিয়ে মালেকা জানান, ‘আমাকে কেডো ঘর দিবো? আমি এহোন থাকমু কনে।’ আর বেচাকেনা না হইলে খামু কি! এসময় রাজ্যের বিষন্নতা যেন তাকে ধিরে ধরে। চোখ মুছতে মুছতে তিনি জানান, মরণ রোগ আসায় মানুষকে সাহায্য দিতাছে। কিন্তু আমাকে কেইউ দেয় না। একটা ঘর থাকলে তবুও রোদ বিষটিতে মাথা গুঁজে থাকতাম। ’
এসময় পাশের দোকানী আমিনুল ইসলাম এগিয়ে এসে জানান, ‘ চাচীর (মালেকার) দোকানই সম্বল। এখন ইউএনও স্যার আমাদের সরকারি জায়গা খালি করে দিতে বলেছে। এ অবস্থায় চাচী যাইবো কই?
কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদ হাসান সিদ্দিকী জানান, ‘ হাটের জায়গা খালি করে উন্নয়ন করা হচ্ছে। তবে মালেকার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। তাকে পুর্নবাসিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ’