সরিষাবাড়ী ভাষ্ককর্য ভাংচুর মামলা \ আত্মগোপনে মেয়র

S M Ashraful Azom
সরিষাবাড়ী ভাষ্ককর্য ভাংচুর মামলা \ আত্মগোপনে মেয়র
ছবি: সরিষাবাড়ীতে মেয়রের ভাঙচুর করা ভাস্কর্য। ইনসেটে মেয়র রোকন

জামালপুর প্রতিনিধি
: জামালপুরের সরিষাবাড়ী পৌরসভার মেয়র রুকুনুজ্জামান রোকনের বিরুদ্ধে ভাস্কর্য ভাঙচুরের অভিযোগে মামলা হয়েছে।

শুক্রবার (১৫ মে) রাতে পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ জহুরুল ইসলাম বাদি হয়ে সরিষাবাড়ী থানার মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাত ৫-৬ জনকে আসামি করা হলেও মেয়র ও তার বড়ভাইসহ তিনজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে মেয়র রোকন আত্মগোপনে রয়েছেন। গ্রেফতার আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছে তার ক্যাডাররাও। এদিকে তদন্ত সাপেক্ষে মেয়র যেকোনো সময় গ্রেফতার হতে পারেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পৌরসভা স‚ত্র জানায়, সরিষাবাড়ী পৌরসভার মেয়র রুকুনুজ্জামান রোকনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগে গত ১ মে কাউন্সিলরগণ সাংবাদিক সম্মেলনে মেয়রকে অনাস্থা দেন। একইদিন বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় সভায় তাকে ত্রাণ আত্মসাৎ ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। এতে তিনি পৌরসভা থেকে কার্যত অবাঞ্ছিত হয়ে পড়েন। রাগে ও ক্ষোভে বৃহষ্পতিবার (১৪ মে) রাতের অন্ধকারে মেয়র রোকন দলবল নিয়ে সরিষাবাড়ী অনার্স কলেজ মাঠে এডিপির অর্থায়নে নির্মানাধীন মুক্তমঞ্চের পাশের চারটি ভাস্কর্য ভেঙে ফেলেন। অথচ ‘মেয়র রোকন মুক্ত মঞ্চ’ লেখা ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের নামফলক ক্ষতি করা হয়নি।

এ অভিযোগে পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ ও ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহুরুল ইসলাম বাদি হয়ে শুক্রবার রাতে থানায় মামলা (নম্বর ৬, তারিখ ১৫-০৫-২০২০) দায়ের করেন। মামলায় পৌরসভার প্রায় সাত লাখ টাকা ক্ষতি উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত ৫-৬ জনকে আসামি করা হলেও মেয়র রুকনুুজ্জামান রোকন, তার বড়ভাই সাইফুল ইসলাম টুকন ও উপদেষ্টা জাভেদ মো. ওয়ারেছ আলী সোহেলকে সন্দেহভাজন হিসেবে বলা হয়েছে।

এ ব্যাপারে মামলার বাদি জহুরুল ইসলাম জানান, ‘দুর্নীতি ও যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগে মেয়রকে অনাস্থা দেয়ার পর থেকেই তিনি কাউন্সিলরদের উপর ক্ষেপে আছেন। তিনি আমাদের যেকোনো উপায়ে ফাঁসানোর হুমকি দিয়েছিলেন। এ অংশ হিসেবেই মেয়র ভাস্কর্যগুলো ভেঙে আমাদের উপর দায় চাপিয়ে পৌরবাসীর সহানুভ‚তির অর্জন ও রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টা করেছেন।’

অভিযোগ রয়েছে, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মস‚চির (এডিপি) অর্থায়নে মেয়র রোকন একক ইচ্ছায় নীতিমালা লঙ্ঘন করে পৌরসভায় বেশিকিছু সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ হাতে নেন। রাস্তা-ঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উন্নয়ন কাজ না করে মিনিপার্ক, ডিজিটাল বিশ্রাম ঘর ও যেখানে-সেখানে ভাস্কর্য স্থাপন করেন। সরকারি টাকায় সেগুলো করা হলেও আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তিনি সবগুলোই নিজের নামে নামকরণ করেন। এছাড়া পৌরসভার অধিকাংশ কাজ টেন্ডার প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে শুধুমাত্র কোটেশন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এবং নামেমাত্র ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে নিজেই বাস্তবায়ন করে পৌরসভার কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।

এদিকে মেয়রের সাথে ভাস্কর্য ভাঙায় জড়িত পৌরসভার সাতপোয়া উত্তরপাড়া গ্রামের বাংগুর ছেলে আরিফুল ইসলাম, আবুল কাশেমের ছেলে আর এম রাকিব, মৃত সবুর মন্ডলের ছেলে এনাম লাভেন্ডার, স্বপনের ছেলে আরিফুল ইসলাম রবিন ও বলারদিয়ার গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে সাইদুল ইসলামকে মামলায় অন্তর্ভ‚ক্তি ও গ্রেফতারের দাবি এলাকাবাসীর।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সরিষাবাড়ী থানার পুলিশ উপপরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম বলেন, তদন্ত চলছে। মেয়রের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিললে যেকোনো তিনি সময় গ্রেফতার হতে পারেন।’



ভিডিও নিউজ


-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন


ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top