সৎকারে নেই ছেলে, চিতায় তুললেন মুসলিম ইউএনও

S M Ashraful Azom
সৎকারে নেই ছেলে, চিতায় তুললেন মুসলিম ইউএনও

সেবা ডেস্ক: নিজের ছেলেসহ পরিবারের কেউ না আসায় ভ্যা’নে মরদেহ তোলা ও চিতায় তোলার কাজে হাত দেন উপজেলা নির্বাহি অফিসার। কিন্তু ব ‘পত্তি বাধে মৃতের মুখাগ্নি নিয়ে। ক’য়েক দফা ফোন করলেও মৃত বিশ্বজিতে’র চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যাল’য়ে পড়ুয়া ছেলে মুখাগ্নি করতে এগিয়ে যায়’নি

নড়াইলের কালিয়ায় করোনা’ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে মারা যান বিশ্বজিৎ রায় চৌধুরী (৫০)। কিন্তু হিন্দুরীতি’তে বাবার শেষকৃত্যে মুখাগ্নি করতে এগিয়ে যা’ননি তার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কয়েক’জন সাংবাদিক’কে সঙ্গে নিয়ে নিজেই সেই মরদেহ সৎকার করেন।

জানা গেছে, বিশ্বজিৎ রায় চৌধুরী ঢাকাতে একটি সিউিরিটি গার্ড কোম্পানি চাকরি করতেন। জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত ৩-৪ দিন আগে তিনি বাড়িতে এলে গত শনিবার রাতে বাড়িতেই তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে মৃতের নমুনা সংগ্রহের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল হুদা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কাজল মল্লিকসহ কয়েকজন পুলিশ তার বাড়িতে যান।

রবিবার (১০ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নমুনা সংগ্রহের পর সৎকার করতে বললে ভয়ে তার পরিবারের কেউ এগিয়ে আসেনি।

কালিয়া উপজেলার সাংবাদিক ফসিয়ার রহমান জানান, পরিবারের লোকদের মরদেহ শেষকৃত্যের জন্য বলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। কিন্তু পরিবারের কেউ রাজী না হওয়ায় ইউএনওর অনুরোধে আমাদের কয়েকজনকে পিপিই পরানো হয়। কয়েকদফা অনুরোধের পরেও পরিবারের কেউ না আসায় একটি ভ্যানে মরদেহ তোলা ও ভ্যান থেকে চোরখালী শ্মশানে মরদেহ নামানোর কাজে সরাসরি হাত দেন ইউএনও। শ্মশানে নেওয়ার পরে বিপত্তি বাধে মুখাগ্নি করা নিয়ে। এ সময় কয়েক দফা ফোন করলেও মৃত বিশ্বজিতের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছেলে মুখাগ্নি করত এগিয়ে যায়নি। একপর্যায়ে ইউএনও নাজমুল  হুদা অনেকটা কড়া ভাষায় শাসানোর পর ছেলে আসে, তবে কোনো রকমে একটি পাটকাঠির মাথায় আগুন ধরিয়ে দূর থেকে ছুঁড়ে দিয়েই পালিয়ে যায়। অতঃপর ইউএনও সাংবাদিক, ভ্যানচালক ও অন্যদুই ব্যক্তিকে নিয়ে তার সৎকার করেন।

এ বিষয়ে ইউএনও নাজমুল হুদা বলেন, “এমন অবস্থায় পড়তে হবে কখনো ভাবিনি। করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে মরদেহ সৎকারে কেউ সহযোগিতা করেননি। বাবার সৎকারে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলের এই আচরণ, মৃতের ভাই ও পরিবারের লোকের আচরণ আমাকে কষ্ট দিয়েছে। সাংবাদিকের সহায়তায় মরদেহ বের করা থেকে চিতায় উঠানো আমাকে নিজের হাতেই করতে হয়েছে।”

ভিডিও নিউজ


-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন


ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top