করোনামুক্ত হয়ে দেশ আবার সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে: প্রধানমন্ত্রী

S M Ashraful Azom
0
করোনামুক্ত হয়ে দেশ আবার সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে প্রধানমন্ত্রী

সেবা ডেস্ক: বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাসমুক্ত হয়ে বাংলাদেশ আবার সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে বলে আশা করেছেন বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) যদিও আমাদের সব অগ্রযাত্রা সাময়িকভাবে থামিয়ে দিয়েছে। তবে আশা করি, জনগণ এর থেকে মুক্তি পাবে এবং আবারও আমরা এগিয়ে যাব।


জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা এনে দিয়ে গেছেন। তার আদর্শেই ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়তে চাই। ইনশাল্লাহ বাংলাদেশ একদিন ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত হবে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মুজিববর্ষ উদ্যাপনের অংশ হিসেবে সারা দেশে এক কোটি চারা বিতরণ ও রোপণ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী গণভবনে তেঁতুল, ছাতিয়ান এবং চালতা গাছের চারা রোপণ করেন এবং একই সঙ্গে ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ২০২০-এরও উদ্বোধন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস সমস্যাটি কেবল বাংলাদেশের একার নয়, সমগ্র বিশ্বেরই সমস্যা। দেশবাসীসহ সারা বিশ্বের জনগণ যেন এর কবল থেকে মুক্ত হতে পারে, সেজন্য মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি।

এ দিনটি (১৬ জুলাই) ছিল শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকের দিনটি একটি বিশেষ দিন। ২০০৭ সালে তদানীন্তন তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমাকে গ্রেফতার করেছিল। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছিল। তিনি বলেন, আমি কৃতজ্ঞতা জানাই, দেশের জনগণের প্রতি, প্রবাসী এবং বিশ্বনেতাদের প্রতি। সেই সঙ্গে আমি ধন্যবাদ জানাই আমাদের সংগঠন বিশেষ করে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ থেকে শুরু করে সব সহযোগী সংগঠনের প্রতি। কারণ তারা প্রতিবাদ করেছিল।’

তার মুক্তির জন্য দেশব্যাপী সৃষ্ট গণদাবির প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ২৫ লাখ স্বাক্ষর সংগ্রহ করে সে সময়কার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কার্যালয়ে পাঠিয়েছিল। তাদের সই-সমর্থন পেয়েছিলাম বলেই জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক চাপে আমাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। যদিও আমার বিরুদ্ধে বিএনপির আমলে ১২টি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ৫টি মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছিল। প্রতিটি মামলার বিষয়ে আমি বলেছি- তদন্ত করে দেখতে হবে, আমি দুর্নীতি করেছি কিনা। ঠিক সেটাই করা হয়েছে এবং আল্লাহর রহমতে সবগুলো থেকেই আমি খালাস পেয়েছি। জনগণের কাছে আমার কৃতজ্ঞতা। কারণ তাদের অকুণ্ঠ সমর্থনেই আমি মুক্তি পেয়েছিলাম।’

তিনি বলেন, প্রথমবার ১৯৯৬ সালে যখন ক্ষমতায় আসি, তখন দেশে বনভূমির পরিমাণ ছিল মাত্র ৭ শতাংশ, যা আজ আমরা ১৭ শতাংশে উন্নীত করতে সমর্থ হয়েছি। আমাদের লক্ষ্য সারা দেশে ২৫ শতাংশ বনায়ন করব। সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সবাইকে আহ্বান করব- আপনারা যে যেখানে আছেন, আপনার যতটুকু জায়গা আছে, সেখান আপনি যা পারেন গাছ লাগান। যারা শহরে থাকেন, তারা ব্যালকনিতে টবে হলেও গাছ লাগান। গাছ লাগালে মনটাও যেমনি ভালো লাগবে, তেমনি সেটি আপনার অর্থনৈতিক সচ্ছলতাও আনবে। নিজের গাছের একটি ফল বা কাঁচা মরিচ খেলেও কিন্তু ভালো লাগে। কাজেই আমি সেভাবেই সবাইকে আহ্বান করব, আসুন আমরা সবাই মিলে গাছ লাগাই।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ যেমন রক্ষা করা দরকার, তেমনি জনগণের খাদ্য ও পুষ্টি দরকার। সে কারণেই আমাদের বৃক্ষরোপণ করাটা অত্যন্ত দরকার। আমি শুরু থেকেই সিদ্ধান্ত দিয়েছি প্রত্যেককে একটি ফলদ, একটি বনজ এবং একটি ভেষজ- এই তিনটি করে গাছ লাগাতে হবে। কাজেই আজ আমি লাগিয়েছি একটি তেঁতুল গাছ, একটি চালতা গাছ এবং একটি ছাতিয়ান গাছ। ছাতিয়ান গাছ খুব বড় এবং কাণ্ড মোটা হয়, যেটি কাঠ হিসেবে খুব ভালো, সেজন্য এটা লাগানো হয়েছে। আর তেঁতুলের কথা শুনলেই জিবে যেমন পানি আসে, তেমনি ছোটবেলার কথাও মনে পড়ে যায়। এটা শরীরের জন্যও খুব উপকারী। কারও উচ্চরক্তচাপ রোগ থাকলে তার জন্য, তাছাড়া শরীরকে ঠাণ্ডা রাখার জন্য তেঁতুল খুবই উপকারী। আর চালতা গাছের পাতা ও ফুল যেমন সুন্দর দেখতে, তেমনি চালতা গাছেরও অনেক গুণ রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, সবুজ বেষ্টনী সৃষ্টির দিকে লক্ষ রাখতেও সারা দেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজে বৃক্ষরোপণ করে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। তারই স্মরণে আমরা এই কর্মসূচি পালন করছি এবং প্রতিবছরই এই কর্মসূচি আমরা পালন করে থাকি। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ১৯৮৪ সাল থেকে প্রতি বছর পহেলা আষাঢ় সারা দেশে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগ আনুষ্ঠানিকভাবে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করে আসছে। এতে মূল সংগঠনসহ সব সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করে থাকেন।

অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, পরিবেশ ও বন সচিব জিয়াউল হাসান এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম উপস্থিত ছিলেন।

ভিডিও নিউজ


-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top