
লিয়াকত হোসাইন লায়ন,জামালপুর প্রতিনিধি: জামালপুরের ইসলামপুর ভয়াবহ বন্যার পানি নেমে গেলেও ভেসে উঠেছে বসতবাড়ী ও রাস্তাঘাটের বীভৎস চিত্র। বন্যা কবলিত উপজেলার প্রায় সবকটি ইউনিয়নের কাচা ও পাকা সড়ক ভেঙ্গে গিয়ে অসংখ্য খানা খন্দকের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে চরম ভোগান্তিতে রয়েছে এসব এলাকার মানুষ। চলাচলে উপযোগী করতে দ্রæত সংস্কারের দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসী।
এবারের বন্যায় উপজেলার কুলকান্দি, সাপধরী, বেলগাছা, চিনাডুলী, নোয়ারপাড়া, পাথর্শী, সদর,গোয়ালের চর,গাইবান্ধা,চরগোয়ালীনি ও চর পুটিমারী ইউনিয়নের সড়কগুলো সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয়েছে। মাসখানেক বন্যায় পানির তোড়ে রাস্তা লন্ডভন্ড হওয়ায় উপজেলা সদরের সঙ্গে বেশিরভাগ ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে যানবাহন চলাচল অচল হয়ে পড়েছে। পানির তীব্র ¯্রােতে বন্যা কবলিত প্রত্যেকটি সড়কের কার্পেটিং উঠে গিয়ে ছোট বড় গর্তে পরিণত হয়েছে। এছাড়া কাঁচা রাস্তাগুলো মাটি সরে গিয়ে খানাখন্দে সৃষ্টি হয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে জন দুর্ভোগে চরম আকার ধারন করেছে। প্রয়োজনের তাগিদে জীবনযুদ্ধে বাশেঁর সাকো তৈরি করে চলাচল করতে হচ্ছে। কাচা,পাকা সড়কগুলো ভেঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় পায়ে হেটে চলাচল করতে খুব কষ্ট হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা হতে গুঠাইল সড়ক, চিনাডুলী ইউনিয়নের উলিয়া বাজার সড়ক বিভিন্ন জায়গায় গর্তের সৃষ্টি হয়ে সাধারন মানুষের পায়ে হেটে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। হাট বাজার করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের উলিয়া বাজার হয়ে সোনামুখী,জনতা বাজার পর্যন্ত প্রায় ৩৫টি জায়গায় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় পাকা সড়কটি ভেঙ্গে লন্ডভন্ড হয়েছে। ফলে এ সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। হঠাৎ কেউ যদি অসুস্থ্য হয়ে পড়ে তাকে হাসপাতালে ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিতে হিমশিম খেতে হয়।
কৃষক তুমর আলী বলেন,আমতলী থেকে বলিয়াদহ,শিংভাঙ্গা,উলিয়া,জনতা বাজার সড়কটি হেটে যাওয়ার কোন জোঁ নাই। বাড়ীঘর শুধু ভাসাইয়া নিয়া যাইনাই,সবপথ বন্ধও করে দিয়ে গেছে সর্বনাশা বন্যায়। এছাড়াও গোয়ালের চর ইউনিয়নের মহলগিরি সড়কের ব্রীজ,চর পুটিমারী ইউনিয়নের সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ হয়েছে।
পাথর্শী ইউনিয়নের মোরাদাবাদ সড়কটি ভেঙ্গে কয়েকটি জায়গায় বিশাল গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এ অঞ্চলের মানুষগুলো যাতায়াতে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পার্থশী ইউপির চেয়ারম্যান ইফতেখার আলম বাবুল জানান,মোরাদাবাদ বাজার সড়কটি বন্যার পানির ¯্রােতে বিভিন্ন জায়গায় ভেঙ্গে যাওয়ায় জন সাধারন চলাচলের চরম দূর্ভোগে পড়েছে। বিভিন্ন জায়গায় বাঁশের সাাঁকো দিয়ে ঝুকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এ সড়ক দিয়ে পাশ্ববর্তী ইউনিয়ন কুলকান্দি,বেলগাছা যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। সড়কগুলো দ্রæত মেরামত না করতে পারলে দূর্ভোগ আরো বাড়বে বলেও তিনি জানান।
বেলগাছা ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক,চিনাডুলি চেয়ারম্যান আব্দুস ছালাম বলেন,তাদের ইউনিয়নে এবারের বন্যায় অসংখ্য ঘরবাড়ি,রাস্তা ঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাইবান্দা ইউপির চেয়ারম্যান মাকছুদুর রহমান আনসারী বলেন,ইসলামপুর-ঝগড়ারচর পাকা রাস্তাটির বিভিন্ন অংশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টুংরাপাড়া ব্রীজটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। পানি নামার সাথে সাথেই এসব রাস্তাঘাট-ঘরবাড়ি মেরামত করে তাদের দূর্ভোগ কমিয়ে আনতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত আলামিন,আইমনা ও শহিদুল বলেন, তাদের মত এবারের বন্যায় অসংখ্য মানুষের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে তাদের কোন কাজ কর্ম নেই। তাদের দাবী, দ্রæত সময়ের মধ্যে তাদের ঘরবাড়ি মেরামত করে বসবাসের উপযোগী করে দেওয়ার সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
রিক্সা চালক,হাছেন আলী,অটো চালক সাইফুল ইসলাম, জানায়, বন্যার পানিতে বেশিরভাগ রাস্তা গর্ত হওয়ায় চলাচল করবের পাইতেছিনা।
প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান টিটু জানান- এবারের বন্যায় কাঁচা রাস্তাগুলো মাটি সরে গিয়ে খানাখন্দে সৃষ্টি হয়ে প্রায় ২০৬কিলোমিটার কাঁচা সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী আমিনুল হক জানান-অধিদপ্তর সূত্রে জানাযায়.বন্য কবলিত রাস্তাগুলো ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রতিটি সড়ক ভেঙ্গে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় চলাচল বন্ধ রয়েছে। এবারের বন্যায় ২৩৮কিলোমিটার পাকা সড়ক, এবং ২০০০মিটার ব্রীজ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।