বাঁশখালীতে ভূয়া চুক্তিপত্র দেখিয়ে জোর করে জমি দখলের চেষ্টা

S M Ashraful Azom
0
বাঁশখালীতে ভূয়া চুক্তিপত্র দেখিয়ে জোর করে জমি দখলের চেষ্টা

বাঁশখালী সংবাদদাতা: চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার কাথরিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় 'ভূয়া' বায়নানামা চুক্তিপত্রের মাধ্যমে মমতাজ উদ্দিন চৌধুরী প্রকাশ খোকন নামে এক ব্যক্তির বিরোদ্ধে জোরপূর্বক জমি দখল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে শিলকুপ ইউনিয়নের ছেনোয়ারা বেগম এর পুত্র মু. রাশেদ নুরী তার আপন খালাত ভাই মমতাজ উদ্দীনের বিরুদ্ধে 'ভূয়া' টিপসই ও 'ভূয়া' সাক্ষি দেখিয়ে বায়নানামা চুক্তিপত্র বানিয়ে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ তুলেন।

বাদীর অভিযোগসূত্রে জানা যায়, কাথরিয়া ইউনিয়নের স্থানীয় প্রভাবশালী ও চিহ্নিত ভূমিদস্যু মমতাজ উদ্দীন গংরা কাথরিয়া ইউনিয়নের কাথরিয়া মৌজার আর,এস ১০৪ নম্বর খতিয়ান ও বি,এস ১০৭৯ নম্বর খতিয়ানভুক্ত আমার মায়ের পৈত্রিকসূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তির ১ কানি ৭ গন্ডা জমি তিনজন সাক্ষির 'ভূয়া' স্বাক্ষর দেখিয়ে দেড়শত টাকার নন জুডিশিয়াল স্টাম্পে নগদ ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেছে বলে এবং বাকী ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা প্রদান করলে উল্লেখিত জমি রেজিস্ট্রি করে দিবে বলে 'ভূয়া' বায়নানামা চুক্তিপত্র বানিয়ে তার আপন খালা (আমার মা) ছেনোয়ারা বেগম এর পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি স্থানীয় সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে বাদীর চাষাদের হুমকী ধমকি দিয়ে জোরপূর্বক দখলের পাঁয়তারা চালাচ্ছে। এতে বিবাদীগণকে অবৈধভাবে জমি দখলে বাঁধা দিলে তারা বাদী ও জমির তত্ত্বাবধায়ককে উল্টো প্রাণ নাশের হুমকি দেয়।

সম্পত্তির মূল মালিক ছেনোয়ারা বেগম প্রতিবেদককে বলেন, 'মমতাজ উদ্দিন খোকন আমার বড় বোনের ছেলে, সে একজন প্রতারক ও ভূমিদস্যু। আমার টিপসই নিয়েছে বলে চালিয়ে দিয়ে আমার অজান্তে 'ভূয়া' ও বানোয়াট বয়নানামা চুক্তিপত্র বানিয়ে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে আমার চাষাদের হুমকী ধমকি দিয়ে আসছে। তাছাড়া আমি স্বাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন, আমার ভোটার আইডি কার্ডেও স্বাক্ষর দিয়েছি। কোন টিপসই আমি আজ পর্যন্ত কোথাও ব্যবহার করিনি। মমতাজ উদ্দীনের সাথে বায়নানামার নামে চুক্তি সম্পাদনের বিষয়টি একান্ত উদ্যেশ্যমূলক ও হয়রানী মাত্র।'

মমতাজ উদ্দীনের মাতা নুর আয়েশা বেগম প্রতিবেদককে বলেন, 'ছেনোয়ারা বেগম আমার অাপন ছোট বোন। মমতাজ উদ্দিন আমার সন্তান। আমার বোন আমার ছেলেকে সম্পত্তি বিক্রি করবে বলে যে বয়নানামা চুক্তি করেছে বলা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং মিথ্যাচার। আগে থেকেই আমার ছেলে একজন প্রতারক ও সন্ত্রাসী টাইফের। সে সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে জোরপূর্বক জমি দখলের পাঁয়তারা চালাচ্ছে। আমার ছোট বোনের সাথে যে প্রতারণা করছে তা খুবই দুঃখজনক।'

মমতাজ উদ্দীন অভিযোগ অস্বীকার করে প্রতিবেদককে বলেন, ' আমার খালার (ছেনোয়ারা বেগম) বিশেষ টাকার প্রয়োজন হলে সে উল্লেখিত সম্পত্তি আমার কাছে বিক্রি করবে বলে কথা দিলে তাকে নগদ দেড় লক্ষ টাকা দিয়ে বাকী ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা যখন প্রদান করবো তখন আমার নামে ১কানি ৭ গন্ডা সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করে দিবে বলে চুক্তি পত্রে টিপসই দেন। চুক্তিপত্রে উল্লেখিত  কাথরিয়া ইউনিয়নের বাবুল মিয়া, আয়ুব আলী ও সাতকানিয়ার কাঞ্চনার আমার চাচা শ্বশুড় নুরুল ইসলাম নামে এ তিনজন স্বাক্ষি স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে চুক্তিপত্রে বাদীর উপস্থিতিতে স্বাক্ষর প্রদান করেন।

চুক্তিপত্রের দ্বিতীয় স্বাক্ষি আয়ুব আলী প্রতিবেদককে বলেন, 'চুক্তিপত্রে আমার নামে যে স্বাক্ষরটা আছে তা আমার নয়। তাছাড়া আমি ওইরকম লিখতে জানিনা। এটা আমার অজান্তে কেউ বানিয়ে দিয়েছে। এরকম চুক্তির বিষয়ে আমার জানা নেই। অপর স্বাক্ষিদ্বয়ের সাথে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

বাঁশখালী থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মু. রেজাউল করিম মজুমদার বলেন, 'বাদীর ভূয়া টিপসই ও সাক্ষির 'ভূয়া' স্বাক্ষর দেখিয়ে 'ভূয়া' বায়নানামা চুক্তিপত্র সম্পাদন করে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ এখনো আমার কাছে আসেনি। অভিযোগ পেলে তা তদন্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।'

-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top