
রফিকুল আলম,ধুনট (বগুড়া): খাবারের সন্ধানে রান্না ঘরে কুকুর। রোগীর বিছানায় শুয়ে আছে বিড়াল। বগুড়ার ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে (হাসপাতাল) দেখা গেছে অস্বাস্থ্যকর এমনি দৃশ্য। কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার কারণে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চিকিৎসা পরিষেবার অবস্থা কতটা বেহাল তা এ চিত্র থেকেই বোঝা যায়।
জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি শুরুতে ৩১শয্যা বিশিষ্ট হলেও জনগনের চাহিদা প্রেক্ষিতে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। কিন্তু জনবল সংকট সহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতরের অবস্থা খুব অসহনীয়। প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসা অসংখ্য রোগী নানা অব্যবস্থাপনার শিকার হন। স্বল্প সংখ্যক চিকিৎমকের মধ্যে আবার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার কর্মস্থলে অনুপস্থিতির কারনে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে।
হাসপাতালে কুকুর ও বিড়ালের অবাধ বিচরণ দীর্ঘদিন ধরে। রোগীদের শয্যার চারপাশে ঘুরে বেড়ায় বিড়াল। রোগীদের খাবারে মুখ দেয়। কিন্তু এ নিয়ে হাসপাতালের কারও কোনো মাথাব্যথা নেই। কেউ কুকুর তাড়ানোর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। অথচ কুকুর ও বিড়াল অনেক রোগের জীবাণু বহন করে। তা ছাড়া কুকুর জলাতঙ্ক রোগের ভাইরাস বহন করে। হাসপাতালের বিড়াল ডাস্টবিনে ঘোরে। সেখান থেকে জীবাণু নিয়ে বিছানায় উঠে বা খাবারে মুখ দিয়ে জীবাণু ছড়াতে পারে। এ ছাড়া বিড়ালের আঁচড় থেকেও রোগ হতে পারে।
এছাড়া হাসপাতালের মেঝেতে ছত্রখান হয়ে আছে নানা ধরনের ময়লা আবর্জনা। বেডগুলো এলোমেলো। বেডে বিছানো কাপড়গুলো অপরিষ্কার, ময়লা ও রক্তমাখা। সব সময়ই এমন থাকে। বিছানা রোগীদের পরিষ্কার করতে হয়। মেঝেতে কাগজ, তুলা, গজ, ব্যান্ডেজ, ওষুধের প্যাকেট ছড়ানো অবস্থায় পড়ে আছে। আর শৌচাগারের সামনে দিয়ে সবাইকে নাকে কাপড় দিয়ে চলতে হচ্ছে। ওই অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা পড়েছেন চরম বিপাকে।
রোগীরা জানিয়েছেন, কুকুর ও বিড়াল সময়ে সময়ে হাসপাতালের কক্ষে এসে প্রবেশ করে। খাবারের সন্ধানে জিনিসপত্রে মুখ দেয়। কাপড় ও কাগজপত্র ধরে টানাটানি করে। কুকুরকে তাড়াতে গেলে কুকুরও তেড়ে আসে। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে কুকুর, বিড়ালের এমন অবাধ বিচরণ দেখে তারা হতবাক হয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাবুর্চি রোজিনা খাতুন বলেন, প্রধান ফটক হয়ে অফিস কক্ষ, জরুরী বিভাগ, ষ্টোর রুমের সামনে দিয়ে কুকুর কখন কিভাবে রান্না ঘরের প্রবেশ মুখে ঢুকে পড়েছে তা বুঝে উঠতে পারছি না। এর আগে কখনও এরকম হয়নি। কুকুর যেন এ ভাবে আর প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত আবসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ গাজী সালাহ উদ্দিন বলেন, আমি হাসপাতালের আবাসিকে থাকি না। আর এ বিষয়গুলো আমাকে কেউ বলেননি। আপনার মাধ্যমেই প্রথম জানলাম। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।