
জামালপুর সংবাদদাতা : জামালপুরের মেলান্দহের উরমা ব্রিজটি বন্যার পানিতে ধ্বসে গেছে। প্রায় ২০ বছর আগে এলজিইডির অর্থায়নে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছিল। মির্জা আজম তৎকালীন বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবার পর মেলান্দহে এধরণের বেশ ক’টি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বেশির ভাগ ব্রিজই ব্যবহার করা যায়নি। ব্রিজগুলোর ঝুলন্ত অবস্থায় থাকার খবরাখবর মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়। সমালোচনার হাত থেকে রক্ষার জন্য কর্তৃপক্ষ কিছু ব্রিজ ব্যবহার উপযোগি করে দেয়। আবার কিছু ব্রিজ ভেঙ্গে নতুন ভাবে নির্মাণ করা হয়।
স্থানীয়রা মনে করেন বিভিন্ন জলাশয়ের উপর ফুট ব্রিজ নির্মাণের ফলে দুই পাশের মাটির সংযোগ (এপ্রোচ) দেয়া হয়নি। ওদিকে কিছু মাটির সংযোগ দেয়া থাকলেও ব্রিজের পাটাতন ছিল সরু। যার জন্য একটা রিক্সা ক্রস করাও কঠিন হয়ে পড়ে। এ ছাড়া কাজের গুণগত মানের বিষয় তো আছেই। এমন একটা ব্রিজের উপমা হিসেবে ধরা হয় উরমা নদীর উপর এই ব্রিজ। স্থানীয়দের মধ্যে বিল্লাল উদ্দিন (৪৩) জানান-নির্মাণের প্রায় ২০ বছর যাবৎ ঝুলে থাকার পর ৬ আগস্ট সন্ধ্যার দিকে চলতি বন্যার পানিতে ব্রিজটি ধ্বসে গেছে। অল্প থেকে আমার ছেলে ব্রিজের নিচে পড়ে মারা যায়নি।
অভিযোগ ওঠেছে ব্রিজ নির্মাণে নি¤œ মানের মালামাল ব্যবহার করা হয়েছে। এজন্য এপ্রোচের নামে বাড়বাড়িতে কৌশলে চলাচলের অনুপযোগি করে রাখা হয়েছিল। রফিকুল ইসলাম মাস্টার (৫০) জানান-কিসের স্বার্থে টানা ২০টি বছর রাষ্ট্রীয় অর্থে নির্মিত ব্রিজটি চলাচলে অনুপযোগি করে রাখা হলো? এর তদন্ত হওয়া উচিত।
এই উরমা নদীর উপর ব্রিজটি নাংলা এবং মাহমুদপুর ইউনিয়নের সংযোগ স্থল। প্রত্যাশা ছিল নাংলা ও মাহমুদপুর ইউনিয়নসহ মাদারগঞ্জের একাংশের মানুষের চলাচলের দুর্ভোগ লাগব হবে। ব্রিজের দু’পাশে শুধু এপ্রোচ না দেয়ায় ব্রিজটি মানুষের কোন কাজে আসেনি। তবে স্থানীয়রা বাঁশের খুঁটির সাহায্যে কিছুদিন ব্রিজের উপর দিয়ে শুধু পায়ে হেঁটে চলচল করেছেন। এমতাবস্থায় ১৯৮৮ সালের বন্যায় এই উরমা ব্রিজের একটু পূর্বে নলকুড়ি-চারাইলদার এলাকার আরেকটি ব্রিজের দুই পাশের মাটি সরে যাওয়ায় এই রাস্তায় চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দু’টি ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় ঠেলা-ধাক্কার কারণে ব্রিজের এপ্রোচ আর করা হয়নি। নিভৃত গ্রাম হবার কারণে প্রশাসনেরও তেমন নজরদারি ছিল না। ফলে এই উরমা ব্রিজের পাশ থেকে অবাধে ড্রেজার মেশিন দিয়ে মাটি উত্তোলনের ফলে ব্রিজটি আরো হুমকীর মুখে পড়ে যায়। এ নিয়ে প্রশাসনের কাছে জানানোর পরও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। বরং মাটি খেকুদের কাছে আরো নাজেহাল হবার ভয়ে কেও বাধা প্রদানও করেনি গ্রামের সহজ সরল মানুষ।
এ ব্যাপারে নবাগত উপজেলা প্রকৌশলী মো. মাজেদুর রহমান জানান-এ রকম জনগুরুত্বপূর্ণ ৫/৬টি ব্রিজের পূণঃ নির্মাণের এপ্রোজাল পাঠানো হয়েছে। ২০ বছর আগের ধাচের কাজ করার কোন সুযোগ থাকবে না।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।