রপ্তানি আয়ে আগস্টেও চমক: ২০ পণ্যে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি

S M Ashraful Azom
0
রপ্তানি আয়ে আগস্টেও চমক:  ২০ পণ্যে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি


সেবা ডেস্ক: বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস সংকটের কারণে বিশ্ব বাণিজ্যে ধীরগতি দেখা দিলেও রপ্তানি আয়ে চমক দেখাচ্ছে বাংলাদেশ। গত জুলাইয়ের পর আগস্টেও বেড়েছে রপ্তানি আয়। নিট পোশাক, হালকা প্রকৌশল পণ্য, কৃষিপণ্য, ওষুধ, শুকনো খাবারসহ ২০ ধরনের পণ্য রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)-এর তথ্য অনুযায়ী আগস্টে পণ্য রপ্তানির বিপরীতে আয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৯৬৭ মিলিয়ন ডলার। এটি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ৩২ শতাংশ বেশি। ২০১৯ সালের আগস্টে রপ্তানি আয় হয়েছিল ২ হাজার ৮৪৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান ও সিইও এ এইচ এম আহসান বলেন, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ের পর দ্বিতীয় মাস আগস্টেও রপ্তানি আয়ে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি উৎপাদন শিল্পের উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ীদের আস্থা বাড়াতে সহায়তা করবে। তিনি বলেন, করোনা সংকট শুরুর পর পরই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নানামুখী উদ্যোগের কারণে রপ্তানি খাত ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।

২০ পণ্যে বেড়েছে রপ্তানি আয় : করোনা সংকটের মধ্যেও গত জুলাইয়ে ২১ পণ্য রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতা ধরে রেখে আগস্টেও ২০ ধরনের পণ্যে রপ্তানি আয় বেড়েছে। আয়ের পরিমাণ কম হলেও সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে চা রপ্তানিতে, যা প্রায় ১১৩ শতাংশ। এরপর ৯২ শতাংশ রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে শুকনা খাবারে। এ ছাড়া জুট ইয়ার্ন রপ্তানিতে ৬৭ শতাংশ, কার্পেট ৬৩ শতাংশ, হ্যান্ডিক্রাফটস ৬০ শতাংশ, প্রকৌশল যন্ত্রাংশ ৫৬ শতাংশ, গুঁড়া মসলা ৫২ শতাংশ, পাট ও পাটজাত পণ্য ৫০ শতাংশ, হোম টেক্সটাইল ৪৪ শতাংশ, ইলেকট্রিক পণ্য ৩৪ শতাংশ, কৃষিপণ্য ৩৩ শতাংশ রপ্তানি হয়েছে। রপ্তানি আয় বেড়েছে এমন পণ্যগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে ওষুধ, জুতা (চামড়া ব্যতীত), ফার্নিচার, কেমিক্যাল পণ্য, বাইসাইকেল, রাবার ও নিট পোশাক। সংশ্লিষ্টরা জানান, গত কয়েক মাস ধরে তৈরি পোশাকে ধারাবাহিকভাবে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির পর অবশেষে আগস্টে এসে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে নিট পোশাকে। ওভেন পোশাকে প্রবৃদ্ধি কিছু কম হলেও নিট পোশাকে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাকশিল্পের জন্য সুখবর বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশের রপ্তানি আয় মূলত তৈরি পোশাকনির্ভর। গত মার্চে ইউরোপ-আমেরিকায় কভিড-১৯ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর সবচেয়ে বড় আঘাত আসে এই পোশাক খাতেই। বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের আদেশ বাতিল ও স্থগিত করে দেন ক্রেতারা। তখন থেকেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তৈরি পোশাকের পাশাপাশি রপ্তানি খাতে বৈচিত্র্য বাড়াতে অপ্রচলিত কৃষিপণ্য, হালকা প্রকৌশলী ও ওষুধজাত পণ্যে গুরুত্ব দিতে থাকে। চলতি অর্থবছরের জন্য নগদ সহায়তার যে সুপারিশ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সেখানেও এসব পণ্যে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এর সুফলও দেখা যাচ্ছে রপ্তানি আয়ে। জুলাইয়ের পর আগস্টেও ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি বজায় রয়েছে। বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দিন বলেন, রপ্তানি আয়ে বৈচিত্র্য আনতে আমরা বেশকিছু কৌশল গ্রহণ করেছি। এসব উদ্যোগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও অবহিত করা হয়েছে। তৈরি পোশাকের অর্ডার বাতিলের পর সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় আলোচনা হয়েছে।

 সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে- তৈরি পোশাকের পাশাপাশি অপ্রচলিত পণ্যের রপ্তানি বাড়ানো এবং নতুন বাজার অনুসন্ধান। এর মধ্যে বেশকিছু সম্ভাবনাময় পণ্য বেছে নিয়ে ওসব খাতের রপ্তানি বাড়াতে নগদ প্রণোদনাসহ বিভিন্ন ধরনের নীতি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে দেশীয় পণ্যের মানোন্নয়নে প্রকল্পও গ্রহণ করা হচ্ছে।

-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top